পশু আমদানির অপেক্ষায় কোরবানির হাট

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৮, ২১:৩৫ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০১৮, ২১:৪১

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস

কোরবানির ঈদের আর কদিন বাকি। কোরবানির পশুর হাটগুলো প্রায় প্রস্তুত। তবে এখনো হাটে গরু আমদানি পুরোপুরি জমে ওঠেনি। দেশের সবচেয়ে বড় গাবতলি পশুর হাটে কোরবানির গরুর আমদানি সামান্য। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আজ রাত থেকে ভরে উঠতে থাকবে পশুর হাট।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, মূল হাটের অনেক অংশই এখনো ফাঁকা। ঈদ সামনে রেখে  হাটের বর্ধিত অংশের অনেক স্থানে চলছে খুঁটি বসানো ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ। আজ  রাতের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে বলে জানান শ্রমিকরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাল শুক্রবার ছুটির দিন থেকে কোরবানির পশুর কেনাবেচা শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা।

তবে ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন বড় বড় খামারে পশু বিক্রি হচ্ছে বেশ। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় মেঘডুবি অ্যাগ্রো ফার্মের ৯০০ গরুর মধ্যে ইতিমধ্যে ৬৫০টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানায় খামার কর্তৃপক্ষ।

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন সাত মসজিদ হাউজিংয়ের সাদিক এগ্রোর ২৮ লাখ টাকায় সর্বোচ্চ দামে ‘বাহাদুর’ নামের গরু আর ২ লাখ ৯০ হাজার টাকায় আজমেরি জাতের একটি ছাগল বিক্রি হয়েছে আরও আগে।

পশুর হাটে তেমন একটা ভিড় না হলেও খামারে ক্রেতা-দর্শকদের সমাগমের কমতি নেই।

তবে গাবতলী হাটের সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে কোরবানির পশুর আমদানি হাটে আসতে শুরু করবে। ঢাকার বাইরে থেকে আসা ব্যাপারি ও খামার ব্যবসায়ীদের গরু গাবতলি হাটে নামবে রাতভর।

সাভারের আশুলিয়ার আয়েশা অ্যাগ্রোর ম্যানেজার জামাল হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের মাত্র একটা গরু আনা হয়েছে হাটে। আজ রাতে বাকি সব গরু আসবে। আগামীকাল শুক্রবার ছুটির দিন। কাল থেকে হাট জমে উঠবে বলে আশা করছি।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু ব্যাপারিরা ইতিমধ্যে হাটে এসে গেছেন। গরু রাখা ও নিজেদের থাকার জায়গা গোছগাছ করছেন তারা। তাদের অনেকের গরু এখন পথে। আজ রাতে একের পর এক গরুবাহী ট্রাক আসবে গাবতলি পশুর হাটে।

এখনো জমে না উঠলেও গাবতলির হাটে ক্রেতা-দর্শক কিন্তু আসছে বেশ। অনেকে ঘুরেফিরে হাটে গরু আমদানির অবস্থা দেখে নিচ্ছেন। টুকটাক দরদামও করছেন। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু গরু বিক্রি হচ্ছে।

হাটে গরুর কমতি থাকলেও মূল হাটে প্রচুর ছাগল আমদানি হয়েছে। আছে ক্রেতাও। ফলে অনেকটা জমজমাট ছাগলের বেচাকেনা। তবে এখন ছাগলের দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন ক্রেতারা।

মিরপুরের বাউনিয়াবাদ থেকে এসেছেন আনাস। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘ছাগলের বাজার সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। যে কয়টা ছাগল পছন্দ হয়েছে, তার দাম চাচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। যে ছাগলের দাম ১০ হাজার টাকা চাইছে, তা এক মাস আগেও আমি ছয় হাজারে নিয়েছি।’

আবার বিক্রেতারা মনে করছেন, এখন যারা হাটে আসছেন, তারা মূলত বাজার দেখতে ও যাছাই করতে আসছেন। তাই দরদামে তেমন বনছে না।

ছাগল বিক্রেতা শফি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘যে ছাগল সাড়ে ১০ হাজারে কিইনা আনছি, ওইডা কয় আট হাজার। ২৪ হাজারে যেডা কেনা, সেডা কয় ২০ হাজার।’

ক্রেতা-বিক্রেতার এই দর কষাকষির মধ্যেই চলছে বেচাকেনা। ছাগলের পাশাপাশি পছন্দ আর দরদামে মিলে গেলে কেউ কেউ কিনছেন গরু। তবে কোরবানির পশুর হাটের এই প্রাক সময়ে তুলনামূলক বিক্রি কম বলে দাবি বিক্রেতাদের।

সিটি করপোরেশনের কোরবানির পশুর হাটের ইজারা নিয়ম অনুযায়ী আগামী রোববার থেকে তিন দিনের হাট শুরু হবে। চলবে ঈদের আগের দিন মঙ্গলবার রাত পর‌্যন্ত।

দেশে কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণের মতো গরু আছে বলে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। ভারত ও মিয়ানমার থেকে যাতে গরু প্রবেশ করানো না হয়, সেদিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/মোআ)