এশিয়ান গেমসে কুষ্টিয়ার সাঁতারু খাদিজা

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৯:৩৫ | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০১৮, ২০:১৬

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। একজন প্রতিভাবান সাঁতারু। ১৭ আগস্ট রাতে এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে দেশ ছেড়েছেন। পদক নয়, এশিয়ান গেমসে টাইমিংয়ে উন্নতি চান খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। হিট পেরিয়ে চূড়ান্ত রাউন্ডে উঠাই মূল লক্ষ্য। তবে গেমসের জন্য এই প্রস্তুতি পর্যাপ্ত নয়।

২০১০ ঢাকা এসএ গেমসে ১৪ মাসের প্রস্তুতি। পরের আসরে ক্যাম্প হয়েছিল আট মাস। জাকার্তায় ১৮তম এশিয়ান গেমস। আসর যত বড় হচ্ছে, প্রস্তুতি ততোই কমে যাচ্ছে। বড় মঞ্চের জন্য প্রস্তুতি মাত্র তিন সপ্তাহের। স্বল্প প্রস্তুতিতে হতাশ খাদিজা আক্তার বৃষ্টি।

এশিয়ান গেমস কিংবা কমনওয়েলথ যেকোনও আসর মানেই হিটে বাদ পড়ে দেশের সাতারুরা। সাঁতারুদের মতে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্য পেতে দীর্ঘমেয়াদি অনুশীলন দরকার। এবারই প্রথমবারের মতো প্রতিনিধিত্ব করছেন খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। ২০১৭ তে জাতীয় জুনিয়র সাঁতার দিয়ে তার আত্মপ্রকাশ। চার ইভেন্টের তিনটিতেই স্বর্ণ জেতেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলার এই সাঁতারু। যুব গেমসেও জেতেন দুটি স্বর্ণপদক ও একটি রৌপ্য। কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে চান খাদিজা।

আসরে ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোক, সঙ্গে ১০০ মিটার ব্রেষ্ট ষ্ট্রোকে পুলে নামবেন খাদিজা। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছেন সাঁতার ব্যাপারটি কেমন। ভাই, মা, মামা-সবাই ছিলেন সাঁতারু। এদের দেখাদেখি সাঁতরে দেশ জয় করার স্বপ্ন তখনই মাথায় চাপে বৃষ্টির। শুরু হয়ে যায় অনুশীলন। ভর্তি হন বিকেএসপিতে। তারপর থেকে বৃষ্টি সেরার মুকুট জয় করে যাচ্ছেন। প্রথমবারের মতো আয়োজিত বাংলাদেশ যুব গেমসে কুষ্টিয়ার এই সাঁতারু পুলে ঝড় তুলেছিলেন।

দুটি স্বর্ণ ও একটি রৌপ্য জিতে সেরা সাঁতারু নির্বাচিত হয়েছেন খাদিজা আক্তার বৃষ্টি। সাঁতার নিয়ে স্বপ্নের কথা জানালেন এই কিশোরী সাঁতারু।

স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে এখন সে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী। তবে স্বপ্নের সীমানা বানিয়ে নিয়েছেন বিস্তৃত। সেই স্বপ্ন জয় করতেই ছুটে চলেছেন বৃষ্টি, ‘দেশের জন্য কিছু একটা করতে চাই। শুধু স্বপ্ন দেখতে চাই না, স্বপ্ন জয় করতে চাই। স্বপ্ন দেখলেই তো হয় না। সেটার জন্য কাজ করতে হয়। অনেকেই স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু সফল কতজন হয়? আমি আমার স্বপ্নকে স্বপ্নই রাখতে চাই না। এর জন্য যতটা অনুশীলন করা দরকার আমি করতে চাই।’

পরিবারের অন্যদের দেখে সাঁতারে নাম লেখানো বৃষ্টি বলেন, ‘সাঁতার ২০১৪ সালে শুরু করেছি। আমার পরিবারের অনেকেই সাঁতারু। পারিবারিকভাবে সাঁতারু হয়ে গেছি। আমার ভাই আসিফ রেজা একজন সাঁতারু, আমার মামা আমিরুল ইসলাম একজন সাঁতার কোচ। এ ছাড়া মা মর্জিনা খাতুন সাঁতার শেখান। ভাই আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এখন নৌবাহিনীতে চাকরি করেন।’

৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোক বৃষ্টির প্রিয় ইভেন্ট। তার অনুপ্রেরণা দুই বাংলাদেশি সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা ও নাজমা খাতুন। তবে দেশের বাইরের কোনো সাঁতারুর নাম জানা নেই তার। এমনকি কাউকে অনুসরণও করেন না। এ নিয়ে বৃষ্টি বলেন, ‘শিলা আপু, নাজমা আপুরা আমার অনুপ্রেরণা। তাদেরকে আমি ফলো করি। দেশের বাইরে ওইভাবে কাউকে ফলো করা হয় না।’

এদিকে দলের সঙ্গে যাচ্ছেন না কোচ তে গুন পার্ক। তার মতে দীর্ঘমেয়াদী ক্যাম্প না হলে এই ইভেন্টে পদকের আশা করাটা বোকামি।

১৮ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখ পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা এবং পালেমবাং শহরে অনুষ্ঠেয় ১৮তম এশিয়ান গেমসে এই কৃতী সাঁতারু অংশগ্রহণ করবেন। দলটি ১৭ আগস্ট ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তার উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন এবং ২৬ আগস্ট ঢাকায় ফিরবেন।

(ঢাকাটাইমস/১৭ আগস্ট/প্রতিনিধি/এসইউএল)