ঈদের আগে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি চান ফখরুল

প্রকাশ | ১৯ আগস্ট ২০১৮, ১৩:৩৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে গেপ্তার শিক্ষার্থীদের ঈদের আগে মুক্তি চান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে এবং তার পরবর্তী সময়ে এখন পর্যন্ত মোট ৯৯জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও অভিনেত্রী রয়েছেন। ৪ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে বেসরকারি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১৬ জনকে রবিবার জামিন দিয়েছে আদালত।

এছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য প্রতিষ্ঠানের মোট সাতজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা দু’টি ভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করে আসছিল। এই আন্দোলনের প্রকৃতি ছিল সম্পূর্ণভাবে ভিন্নধর্মী। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবীতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রচলিত রাজনৈতিক ও পেশাজীবীদের আন্দোলনের সাথে কোন মিল নেই। বাসের চাপায় সহপাঠীদের মৃত্যুতে স্কুল-কলেজে পড়ুয়ারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল প্রতিবাদ জানাতে। ভবিষ্যতে প্রাণহানি থেকে সহপাঠিদের বাঁচানোসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের এই আন্দোলন ছিল সবার জন্য শিক্ষনীয়।

ফখরুলের অভিযোগ, ‘সরকার বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নির্দোষ আন্দোলন দমাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সরকারি ছাত্র-যুব সংগঠনের ক্যাডাররা এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর সশস্ত্র আক্রমন চালায়। এতে শিশু-কিশোর-তরুণরা রক্তাক্ত হয়েছে, শারিরীক হামলায় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। এই দৃশ্য জাতির মর্মমূলে নাড়া দিয়েছে, সারাজাতি এখন স্তম্ভিত ও ব্যথিত।’

ফখরুল বলেন, নিজেদের ক্যাডারদের দ্বারা পৈশাচিক কায়দায় শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করার পরও সরকারের দমন-পীড়ন থামছে না। শুরু হয়েছে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বিচারে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেয়ার হিড়িক। ইতোমধ্যে উস্কানি-ভাংচুরের মিথ্যা অভিযোগে ৫১টি মামলায় আন্দোলনরত প্রায় ৯৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তার অভিযানে শিশু ও ছাত্রীদেরকেও ছাড়া হয়নি। যা সবচেয়ে অমানবিক, আতঙ্কজনক ও নজিরবিহীন ঘটনা। দেশজুড়েই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্দোলন নিয়ে স্বাধীনভাবে মত-প্রকাশের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহীদুল আলমসহ লেখক-শিল্পী-কলাকুশলী-অনলাইন এক্টিভিস্ট কেউই সরকারের রোষানল থেকে রেহাই পায়নি।

গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের রিমান্ডে নেয়ার নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরা এবং শহীদুল আলমসহ গ্রেপ্তার অন্যদের মামলা প্রত্যাহারসহ ঈদের আগেই মুক্তি দাবি করছি।’

ঢাকাটাইমস/১৯আগস্ট/বিইউ/ডিএম