বেড়িবাঁধ সড়কে ছিনতাই আতঙ্ক

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৮, ০৮:১২ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ০৯:২৪

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস

রাজধানীর গাবতলী থেকে বাবু বাজার পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সড়ককে কেন্দ্র করে সক্রিয় বেশ কয়েকটি ছিনতাইকারী চক্র। দুপুর থেকেই এরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। রাতে এই সড়কটি হয়ে উঠে আরও বিপজ্জনক।

আর ছিনতাইকারীদের কারণে এই সড়কটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক স্পষ্ট। ঈদের আগে হাটে পশু কিনতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগও বেড়েছে।

বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় প্রতিবারই ঈদসহ উৎসবকে কেন্দ্র করে ছিনতাইকারীদের সক্রিয়তা বাড়ে বলে জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।

সম্প্রতি বসিলা রোডে বসা কোরবানির পশু বিক্রির হাট তাদারকি করতে একটি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ বসানো হয়েছে বেড়িবাঁধ তিন রাস্তার মোড়ে। তবুও থেমে নেই ছিনতাই। এই এলাকাটি থেকে দূরে নির্জনে পেলেই ছিনতাইকারীরা ছিনিয়ে নিচ্ছে টাকা পয়সা, মোবাইল ফোন।

রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের বিপরীতে বসবাস করেন জুয়েল। শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটে পোশাক বিক্রেতার কাজ করেন। বুধবার রাতে বাসায় ফেরার স্মৃতিসৌধের আগে ছিনতাইয়ের শিকার হন।

জুয়েল বলেন, ‘বুধবার বাসায় আসার টাইমে চারটা ছেলে আমাকে থামায়। রাস্তায় তখন লোকজন ছিল না। তাদের দুইজনের হাতে বড় ছুরি ছিল। একজন আমার পকেটে হাত দিয়া মোবাইল আর মানিব্যাগ নিয়া গেল।’

‘মোবাইল আর টাকার জন্য জীবন তো দিতে পারি না। কয়দিন আগে আমার বন্ধু চরে (কামরাঙ্গীচর) থাকে, তারও একইভাবে মোবাইল নিয়া গেছে।‘

কামরাঙ্গীচরের সিকসন লোহার ব্রিজ এলাকায় ছিনতাই করা মোবাইল ফোন বিক্রি হওয়ার ঘটনা বেশ পুরনো। সিকসনে ছিনতাই করা মোবাইল ফোন বিক্রি হয়, ঢাকাটাইমসে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় ছিনতাই করা মোবাইল ফোন।

স্থানীয় বাসিন্দা ইউনূস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পুলিশ কি আর প্রতিদিন ছিনতাইকারী ধরে? আর ছিনতাইকারীরাও পুলিশের দিকে নজর রাখে। পুলিশ যেদিকে থাকে না, ওরা ওইদিকে থাকে। আমার পুলিশ আসার আগেও ওরা গায়েব।’

‘সবার থেকে তো আর ছিনতাই করা পারে না। এলাকার স্থানীয় গো ওরা চেনে। নতুন পোলাপান বা ভদ্র জাগো দ্যাহে, ওগো থেকেই ছিনতাই করে। বেশির ভাগ কাজ হয় সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১ টা, ১২ টা পর্যন্ত।‘

অবস্থা আরো শোচনীয় আকার ধারণ করেছে স্লুইসগেট থেকে গাবতলী বেড়িবাঁধ সংলগ্ন সড়কের দুই পাশে।

এই সড়কে দায়িত্ব পালন করা এক ট্রাফিক কনস্টেবল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘গাবতলী থেকে স্লুইসগেট পর্যন্ত প্রায় চল্লিশ জন ছেলে আছে যারা চুরি-ছিনতাই করে। আমাদের চোখেও পরে। অনেক সময় চোখের সামনে পরলে দৌঁড়ানি দেই।’

এ বিষয়ে দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিমুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ছিনতাই হয় বা বড় চক্র আছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নাই। ঈদের আগে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং বিভিন্ন সময়ে হয়ে আসছে তা আমরা জানি। তাই ঈদের অনেক আগে থেকেই আমরা এসব বিষয়ে কাজ করছি।‘

‘সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে এবং কোরবানির হাটে যারা গরু কিনতে ও বিক্রি করতে আসছেন, সকলের নিরাপত্তার জন্য আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি। টহল বাড়িয়েছি। রাস্তায় অন্য সময়ের চেয়ে বেশি পুলিশ মোতায়েন করেছি।’

ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/কারই/ডব্লিউবি