দেনায় রাজশাহী চিনিকল, বেতন বন্ধ শ্রমিকদের

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ২০ আগস্ট ২০১৮, ০৯:০৩

অব্যাহত লোকসানে প্রায় শত কোটি টাকা দেনায় ডুবেছে রাজশাহী চিনিকল। সেখানকার শ্রমিকদেরও বেতন বকেয়া দুই মাস। ঈদের আগে তারা বেতন পাচ্ছেন না। এ নিয়ে শ্রমিকরা রবিবার সকালে মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে চিনিকল কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন দেয়ার আশ্বাসও দিতে পারেননি।

চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশফাকুর রহমান বলেন, দেনা থাকলেও চিনি বিক্রি করে তারা শ্রমিকদের বেতন দিয়ে দেন। কিন্তু গত ঈদের পর থেকেই চিনি বিক্রি হয়নি। অবিক্রিত চিনি রয়েছে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন। ফলে চিনিকলের ৮৩৪ জন শ্রমিকের দুই মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে।

এমডি জানান, বাজারে এখন প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকায়। আর মিলগেটে চিনি বিক্রির সরকারি দর ৫০ টাকা। এর কম দামে তারা চিনি বিক্রি করতে পারবেন না। তাই ব্যবসায়ীরা চিনিকল থেকে চিনি কিনছেন না। এতে গত দুই মাসে শ্রমিকদের ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা বেতন বকেয়া হয়েছে।

এদিকে বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকদের ঈদের খুশি বিলীন হতে চলেছে। এ অবস্থায় শ্রমিকরা তাদের বকেয়া বেতনের দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেছেন। রবিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত চিনিকলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা ঈদের আগেই তাদের বকেয়া বেতনের দাবি জানান।

রাজশাহী চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বেতন না দেয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজে যোগদান করবেন না। এখন চিনি উৎপাদনের মৌসুম না হওয়ায় কাজের পরিমাণ খুবই কম। তাই বেতন না পেলে তারা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি পালন করবেন বলেও ঘোষণা দেন এই শ্রমিক নেতা।

রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠে পবা উপজেলার হরিয়ানে ১৯৬২ সালে চিনিকলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সরকার চিনিকলটিকে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত চিনিকলটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু ১৯৯১ সালের পর চিনিকলটি প্রতিবছর লোকসান দিয়ে আসছে। ফলে ঋণে জর্জরিত হয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি।

রাজশাহী চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আফাজ উদ্দিন বলেন, সীমাহীন অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে চিনিকল কখনো লাভের মুখ দেখে না। এ জন্য শ্রমিকরা জুন-জুলাইয়ের বেতন পাননি। দুর্নীতি না থাকলে চিনি বিক্রি না হলেও শ্রমিকদের বেতন দেয়া কোনো ব্যাপার ছিল না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তবে দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

বর্তমানে দেনার পরিমাণ কতো তা স্পষ্ট করে জানাননি চিনিকলের জেনারেল ম্যানেজার (অর্থ) সায়েম বিন সোলায়মান। তবে তিনি বলেন, দেনার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা তো হবেই। ঋণ নিয়ে আখ কেনা হয়, আবার চিনি বিক্রি করে ঋণ শোধ করা হয়। এভাবেই ঋণ হয়ে গেছে।

শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের বিষয়ে জানতে চাইলে চিনিকলের এমডি আশফাকুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেখান থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো মতামত পাইনি। তাই আমিও শ্রমিকদের কোনো আশ্বাস দিতে পারিনি। তবে আমরা শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দিয়েছি।

(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/আরআর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :