পুত্রবধূ হত্যায় শ্বশুরের দায় স্বীকার

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ আগস্ট ২০১৮, ১৪:৫৪

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পুলিশ কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুনের স্ত্রী শিল্পী বেগমকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার শ্বশুর আবুল কাশেম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পারিবারিক কলহ এবং ছেলে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক ফিরোজ আল মামুনের শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়ে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটান বলে জবানবন্দিতে স্বীকার করেন।

১৪ আগস্ট টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাকিম রুপম কুমার দাসের আদালতে এ জবানবন্দি দেন বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক কমল সরকার জানান।

১৩ আগস্ট বিকালে মির্জাপুর পৌরসভার বাওয়ার কুমারজানী গ্রামে শিল্প পুলিশের এএসআই ফিরোজ আল মামুন ও তার স্ত্রী শিল্পী বেগমকে বসতঘরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাতে শিল্পীর মৃত্যু হয়। মুমুর্ষূ অবস্থায় ফিরোজ আল মামুনকে ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে মামুন সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এই ঘটনায় মির্জাপুর থানা পুলিশ শিল্পীর শ্বশুর আবুল কাশেম ও শাশুড়ি অজুফা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে যোগীরকোফা গ্রামের বাসিন্দা নিহত শিল্পীর ভাই মোহাম্মদ মোস্তফা বোন জামাই ফিরোজ আল মামুন, তার ছোট ভাই সানি, বাবা আবুল কাশেম ও মা অজুফা বেগমকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে হত্যার কথা স্বীকার করায় আবুল কাশেম এবং অজুফা বেগমকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়।

সেখানে আদালতের হাকিম রুপম কুমার দাসের কাছে বাবা আবুল কাশেম হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে আবুল কাশেম বলেন, এইচএসসি পাস করার পর তিনি টিউশনি পরে ব্র্যাক স্কুলে শিক্ষকতা করে ছেলেদের মানুষ করেছেন। বড় হয়ে মামুন চাকরি পেয়ে আমাদের ভরন-পোষণের পরিবর্তে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। মামুনের প্রথম স্ত্রী সন্তান প্রসবের সময় মারা যায়। মামুনের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তার দুই ছেলেকে লালন-পালন করতে আর্থিক অনটনে পড়েন। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলায় মামুন তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করত বলে তিনি আদালতকে জানান।

ঘটনার ১৫-১৬ দিন আগেও এএসআই মামুন তাকে ও তার স্ত্রীকে অজুফা বেগমকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আহত করেন বলেও জানান। এসব ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগ বুঝে প্রথমে ছেলের বৌ শিল্পীকে ছাদের ওপর এবং পরে নিচে বেড রুমে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা ছেলে মামুনকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন তিনি। এরপর কুড়ালের লোহার অংশটুকু ধুয়ে ওয়ারড্রপের ওপর কাঠের অংশ বাসার নিচে পানিতে ফেলে দেন। এ ঘটনায় তিনি একাই জড়িত বলেও তিনি আদালতকে জানান।

মির্জাপুর থানা উপ-পরিদর্শক কমল সরকার গুরুতর আহত এএসআই মামুনের নামে হত্যা মামলার হওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যেহেতু তিনি গাজীপুর শিল্প পুলিশে কর্মরত, বিষয়টি টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের মাধ্যমে শিল্প পুলিশের সুপারকে জানানো হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক ফিরোজ আল মামুন পুলিশ পাহাড়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মামুন ছুটিতে যাওয়ার পর এ ঘটনাটি ঘটেছে। তিনি নিজেও আহত হয়েছেন। মামুন নিজেই এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে কিনা বা অন্য কারো দ্বারা হামলার স্বীকার হয়েছেন- তা টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ তদন্ত করছে। মামুন সুস্থ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

(ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

মধ্যরাতে ফের মিয়ানমারের গুলির শব্দে কেঁপে উঠল টেকনাফ সীমান্ত

উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক, দুর্ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি

বরগুনা প্রেসক্লাবের নামে ভুয়া কমিটি গঠনের অভিযোগ 

ঝিনাইদহে বাজার নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, ৩ প্রতিষ্ঠানে জরিমানা

যারা ট্রেনে আগুন দেয় তারাই ভাড়া বৃদ্ধির গুজব ছড়ায়: রেলমন্ত্রী

আলফাডাঙ্গায় দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

মানিকগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

সিলেটে পিকআপ-লেগুনা সংঘর্ষে একই পরিবারের ৫ জন নিহত

অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত প্রক্টর ও সহপাঠী রিমান্ডে

ফের মিয়ানমারের গুলির শব্দে কাঁপল টেকনাফের মাটি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :