সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়তে পারে: সচিব

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়স সীমা বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় আছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্ন সচিব বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়তে পারে।’

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা এখন ৩০। ২০১১ সালে সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর পর ঢোকার বয়সও বাড়ানোর দাবি ওঠে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।

এই বয়স সীমা ৩৫ করতে বেশ কয়েক বছর ধরেই আন্দোলনে আছে শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জাতীয় সংসদে একাধিকবার এই বয়স বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন।

তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ সাম্প্রতিক নানা ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ বছর থেকে দুই বছর বাড়িয়ে ৩২ করার চিন্তা করা হচ্ছে। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ থেকে করা হতে পারে ৩৪।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চাকরি প্রত্যাশীরা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর আন্দোলন করে আসছে। সরকার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করছে। তবে চাকরি প্রত্যাশীরা ৩৫ বছরের দাবি করে এলেও ৩২ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার।’

গত ১২ আগস্ট ঢাকাটাইমস এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে।

গত ২৭ জুন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর করার সুপারিশ করে।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাবটি দীর্ঘদিন ধরে বিবেচনাধীন ছিল। বিস্তারিত আলোচনা শেষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার সুপারিশ করেছি আমরা।’

এই সুপারিশ পাওয়ার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয় বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে।

এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা এবং সংসদ, সংসদীয় কমিটি, জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন প্রস্তাব বিবেচনায় নিচ্ছে।

ঈদের আগে মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আমরা পারস্পরিক আলোচনা করছি, বাড়ানো হতে পারে।’

‘চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়টিকে সরকার ইতিবাচকভাবে নিয়েছে।’

সচিব বলেন, ‘এন্ট্রিটা (চাকরিতে প্রবেশের বয়স) বাড়তে পারে, আশা করছি। খুব তাড়াতাড়ি জানতে পারবেন। তবে অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে নির্দেশনা নেই।’

দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়া, উচ্চশিক্ষার হার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশনজট, গড় আয়ু বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিপ্রত্যাশীরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

দাবি আদায়ে কয়েকবার রাজপথেও নেমে এসেছিলেন তারা। এই দাবি সংসদেও উঠেছিল, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বারবার চাকরিতে ঢোকার বয়স বাড়ানোর দাবি নাকচ করে দেয়া হয়।

ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/এমএম/ডব্লিউবি