লঞ্চের কেবিনে খাওয়ার আগে দাম জেনে নিচ্ছেন তো?

প্রকাশ | ২০ আগস্ট ২০১৮, ২১:০৪ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৮, ২৩:০৩

বোরহান উদ্দিন, লঞ্চ থেকে

ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার জন্য দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের প্রথম পছন্দের বাহন লঞ্চ। যানজট, সড়কের ঝক্কিঝামেলা পোহানোর হাত থেকে বাঁচতে লঞ্চেই এ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মানুষ যাতায়াত করেন। আর বছরে দুই ঈদের সময় মানুষের চাপ সবথেকে বেশি থাকে।

অভিযোগ আছে, দুই ঈদকে কেন্দ্র করে লঞ্চে বেশি ভাড়া আদায়ের। বিশেষ করে কেবিনের চাহিদা বেশি থাকার কারণে এর দাম অন্য সময়ের তুলনায় কমপক্ষে ৫শ থেকে শুরু করে হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি নেয়া হয়।

তবে এত কিছুকে পেছনে ফেলে লঞ্চ যাত্রীদের মনে কখনো কখনো দাগ কেটে থাকে কেবিনে বয়দের সরবারহ করা খাবারের দাম বেশি নেয়ার বিষয়টি। সবার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ না থাকলে কিছু কিছু কেবিন বয়ের এমন কাণ্ডে নাক কাটা যায় অন্য কর্মীদেরও।

লঞ্চযোগে বরিশাল, পটুয়াখালীসহ অন্যান্য রুটে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে এমনটা জানা গেছে। যদিও বাইরের হোটেলের থেকে লঞ্চে খাবারের দাম কিছুটা বেশি হলেও এটা নিয়ে খুব বেশি আপত্তি নেই। তবে নির্ধারিত দামের থেকে চোখে ধুলো দিয়ে কিছু কিছু কেবিন বয়ের বাড়তি দাম নেয়ায় যত আপত্তি যাত্রীদের।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বরিশাল থেকে সুরভী-৭ লঞ্চে ঢাকা যাওয়ার সময় এমন একটি ঘটনা এই প্রতিবেদকের চোখে পড়ে। পরে আরো খোঁজ খবর নিয়ে অনেকের কাছ থেকে এমন বাজে অভিজ্ঞতার কথা শোনা গেছে। যদিও অনেকের কাছে পরে বিষয়টি ধরা পড়লে তেমন প্রতিবাদ কেউ করেননি বলেও জানিয়েছেন।

সুরভী-৭ লঞ্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী রাতে ইলিশ মাছ ও ডাল চচ্চরি দিয়ে খাবার খান। যাতে ৪৭০ টাকা বিল হওয়ার কথা থাকলেও সকাল বেলা কেবিন বয় ৬৩০টাকা খাবারের বিল হয়েছে বলে জানান। পরে বিল পরিশোধ করার পর তাদের কিছুটা সন্দেহ হয়।

কিন্তু কেবিনের খাবার পরিবেশনের জায়গায় গিয়ে খাবারের মূল্য তালিকা দেখে মাথায় হাত দেন এদের একজন। কারণ সেখানে ইলিশ মাছের পিচ ২০০ টাকা করে লেখা থাকলেও তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ২৫০ টাকা করে। ডাল এবং ভাতের দামও বেশি নেয়া হয়েছে।

কেবিন বয়কে ডাকার তার কাছে আলাদা আলাদা করে খাবারের মূল্য তালিকা বলার জন্য বলতেই তালগোল পাকিয়ে ফেলে এই কর্মী। পরে অবশ্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে পার পান সে।

তুহিন নামের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ঢাকাটাইমসকে বলেন, আগেও এমনটা হয়েছে আমার সাথে। এরা রাতে খাবার খাওয়ায় অথচ বিল নেয় সকালে যখন ক্লান্ত শরীরে সবাই লঞ্চ থেকে নামে তখন। এই ফাঁকে তারা নিজেদের মত করে বিল ধরিয়ে দেয়।

লঞ্চের কেবিনে খাবার খাওয়ার আগে মূল্য জেনে নিতে পরামর্শ দিয়েছেন এই ভুক্তভোগী।

রাজধানীর সুপরিচিত স্টার হোটেলের জিএম মনিরুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমিও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। খাবারের নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি নিয়েছে। তবে আমি প্রতিবাদ করিনি।

আমানুর রহমান রনি নামের একজন ঢাকাটাইমসকে বলেন, লঞ্চে খাবারের দামটা বেশি নেয়। তবে একদিনের জন্য এটা নিয়ে তেমন কিছু মনে করি না। কারণ খাবারটি খুব মজাদার হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ব্যাপারটা খুব সামান্য হলেও এমনটা দুঃখজনক। কারণ এমন ঘটনা যেখানে ঘটবে সেই লঞ্চ কোম্পানির সুনামের বিষয়টিও জড়িত থাকে।

পটুয়াখালী-ঢাকা রুটের এরআর খান-১ লঞ্চের সুপারভাইজার আলাউদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, এমনটা খুব বেশি শুনিনি। তবে যদি আমার লঞ্চের কোনো কেবিন বয়ের বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেয়া হবে।

ঢাকাটাইমস/২০আগস্ট/বিইউ/ডিএম