ঈদে বেড়ান ‘নয় কুড়ি বিল ছয় কুড়ি কান্দার’

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামগঞ্জ
| আপডেট : ২১ আগস্ট ২০১৮, ১১:২৮ | প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০১৮, ০৯:৩৯

ব্যস্ত জীবনের বেড়ানোর এক বড় সুযোগ ঈদের ছুটি। এ সময় অনেকেই দেশের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যান। দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর অন্যতম হলো হাওর-পাহাড় আর নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পসরা সাজানো সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর ও আশপাশের এলাকা। স্থানীয় প্রবাদে যাকে বলা হয়- নয় কুড়ি বিল ছয় কুড়ি কান্দার।

আপনিও ঈদের ছুটিতে বেড়াতে পারেন ভারতের খাসিয়া ও মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে হাওর আর পাহাড়ের মিলনে সমৃদ্ধ তাহিরপুর ও দোয়ারাবাজার।

এ দুই উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো সারা বছর শিক্ষার্থী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, দেশ-বিদেশের সৌন্দর্য পিপাসু ও প্রকৃতিপ্রেমীদের পদচারণে মুখরিত থাকে। তবে দুই ঈদের ছুটিতে এসব স্থান বিপুল পর্যটকের মিলনমেলায় পরিণত হয়।

কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ সিএনজি, কেউ স্পিড বোটে আবার কেউ ইঞ্জিনচালিত নৌকায় দলবেঁধে ছোটে এক স্পট থেকে আরেক স্পটে।

তাহিরপুরে দর্শনীয় স্থান

মাদার ফিশারিজ খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওর বাংলাদেশের এক গর্ব। সীমান্ত ঘেঁষা ৩০০ ফুট উচ্চতার বারেক টিলা। উপজাতিদের মন্দির। মেঘালয় পাহাড়ের জলপ্রপাত। শাহ আরফিন (রা) আস্তানা। সনাতন হিন্দু-ধর্মাবলাম্বীদের পুণ্যতীর্থ স্থান, উঁচু-নিচু পাহাড়ের সারি। ঘন-সবুজের সমারোহ, ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্প, সীমান্ত লেক, তিনটি শুল্ক স্টেশন (চারাগাঁও, বড়ছড়া, বাগলী), মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন।

ভারতের মেঘালয়ের বুক চিড়ে নেমে আসা ছোট বড় ২০টি পাহাড়ি ছড়া। রাজা উইক্লিবসের বাড়ি, আওলী জমিদার বাড়ি। পাহাড়ি যাদুকাটা নদী, ঝর্না, মেঘ, বৃষ্টি, উপজাতি ও বাংলাদেশিদের একত্রে বসবাসের এক মিলনমেলা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোরম পরিবেশ বিরাজ করছে সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলায়।

দোয়ারাবাজারে দর্শনীয় স্থান

বাঁশতলা, হকনগর শহীদ স্মৃতিসৌধ, জুমগাঁও আদিবাসীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলো যা পর্যটকদের নয়ানাবিরাম, নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ করায় বারবার আত্মতৃপ্তির টানে আসছেন দেশি-বিদেশি হাজার হাজার দর্শনার্থী। অনেকেই ওই সব স্থানে গিয়ে তুলছেন সেলফি। আর অনেকেই একান্তে বসে আছেন, আবার অনেকেই বসিয়েছেন তুমুল আড্ডা।

সবার আকর্ষণ টাঙ্গুয়ার হাওর

এ হাওরের একটি প্রবাদ আছে- নয় কুড়ি বিল, ছয় কুড়ি কান্দার। শত বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই টাঙ্গুয়ার হাওরে নানান প্রজাতির বনজ ও জলজ প্রাণী এর সৌন্দর্যকে আরও দর্শনীয় করেছে। বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর এক বিশাল সমুদ্রের রূপ ধারণ। চারদিকে তখন রূপের প্রসার। এবারের ঈদের সময়টা এমনই। গেল ঈদুল ফিতরে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আগমন ছিল লক্ষণীয়। ঈদুল আজহার ছুটিতেও শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী হাজার হাজার মানুষের আগমনে এক মিলনমেলায় পরিণত হবে টাঙ্গুয়ার হাওর জেলার সব দর্শনীয় স্থান।

এবার হাওরপাড়ে একমাত্র বোরো ধান গোলায় তুলতে পারায় স্থানীয় মানুষের মনে ঈদের আনন্দ বিরাজ করছে। এই ঈদে হাওরজুড়ে আনন্দ-কোলাহল আরও বেশি ভিন্ন মাত্রা পাবে।

এখানে বেড়াতে আসা শিক্ষার্থী সৌরভ দাস, নাজির হোসেন, নাইম, মেহেদী হাসান ভুঁইয়াসহ (জনমেজর) অনেকে জানান, তাহিরপুর উপজেলার পর্যটন সমৃদ্ধ ও দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলো ঘুরে ভালো লাগে। তাই আমরা এসেছি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। ঈদের দিন আবার আসব। হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটবে টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেকটিলাসহ অন্যান্য দর্শনীয় স্থানে।

কীভাবে যাবেন

রাজধানী ঢাকা থেকে বিভিন্ন ধরনের বাস সার্ভিস আছে সুনামগঞ্জ জেলা পর্যন্ত। তার পর সিএনজি, লেগুনা ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে তাহিরপুর উপজেলায়। সেখান থেকে বিভিন্ন পর্যটন স্পটে যাওয়ার জন্য ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবস্থা রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :