গ্রেনেড হামলায় নিহতদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৮, ১০:৪৪ | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০১৮, ১০:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হামলার ১৪ বছর পূর্তিতে মঙ্গলবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই বেদীতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। পরে সেখানেই এক আলোচনা সভায় যোগ দেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। এর আগে নিহতদের স্মরণে মোনাজাত করা হয়।

২০০৪ সালের আজকের দিন দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্রেনেড হামলা এবং দলের নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রার ডাক দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।

শোভাযাত্রাটা করার কথা ছিল মুক্তাঙ্গনে। তবে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার অনুমতি দেয়নি। রাত সাড়ে ১১টায় মুক্তাঙ্গনের বদলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়।

তবে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশটিই শিকার হয় সন্ত্রাসী হামলা। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ১৬ জন, পরে হাসপাতালে প্রাণ হারায় আরও ছয় জন।

শেখ হাসিনাকে মানববর্ম তৈরি করে রক্ষা করেন দলের নেতারা। আর এতে রক্তাক্ত হন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের বাবা মোহাম্মদ হানিফ।

একটি ট্রাকের ওপর নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চকে ঘিরে এই হামলা হয়। তবে ওপরের বহুতল ভবন থেকে ছোড়া ১৩টি গ্রেনেড ট্রাকে না পড়ে নিচে পড়ায় বেঁচে গেছেন শেখ হাসিনা।

সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে চার পাশ থেকে ঘিরে ধরে গাড়িতে তুলে দেন নেতারা। আর তিনি গাড়িতে বসার পর হয় গুলি। কিন্তু বুলেট প্রুফ জানলার কাঁচ ভেদ করে গুলি ভেতরে যেতে পারেনি।

এই দিনটি আওয়ামী লীগ বরাবর স্মরণ করে শোক আর ঘৃণা নিয়ে। সেই সঙ্গে উঠে বিচারের দাবি।

সে সময়ের ক্ষমতাসীন বিএনপি এই মামলাকে কেবল ভিন্নখাতে প্রবাহিতই করেনি, হামলার পর হামলাকারীদের ধরার কোনো চেষ্টাই করেনি। উল্টো নেতা-কর্মীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিপেটা করে। এতে হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে এলাকা ছাড়তে পারে।

এই হামলায় আহত শতাধিক নেতা-কর্মীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা চিকিৎসাও দেননি। হঠাৎ হাসপাতাল প্রায় ডাক্তার শূন্য হয়ে যায়।

মামলার তদন্তে নেমে অপরাধীদের আড়াল করে জজ মিয়া নামে নির্দোষ একজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। তবে পরে ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর তদন্তে জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়।

পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অধিকতর তদন্তে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আরও ৩০ জনকে আসামি করা হয়।

হামলার ১৪ বছর পর বিচারিক আদালতে এই মামলা নিষ্পত্তির একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শেষ আসামি হিসেবে বাবরের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সব প্রক্রিয়া শেষে আগামী সেপ্টেম্বরেই মামলার রায় ঘোষণার আশা করা হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/ডব্লিউবি