ভারতীয় গরু না আসায় শাপে বর
এবার কুরবানি পশুর পুরো চাহিদা মিটেছে দেশি গরু-ছাগলে। ভারত থেকে গরু রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দেশে খামারি ও কৃষকদের মাঝে গরু লালন বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশি পশু দিয়ে কুরবানির যোগান মেটানো সম্ভব হয়েছে। তবে দেশি পশুর দাম একটু বেশিই। এর জন্য অতিরিক্ত দাম দিতে হলেও ক্ষেত্রবিশেষে নাখোশ নন ক্রেতারা। অন্যদিকে ন্যায্য দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন বিক্রেতা ও খামারিরা।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা বলছেন, খামারে পর্যাপ্ত সংখ্যক গরু পালন করায় দেশি গরুতে চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়েছে। আর প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে অবৈধভাবে গরু আমদানিও প্রায় বন্ধ। এ পদক্ষেপ দেশের পশু সম্পদকে স্বাবলম্বী করতে সহায়তা করেছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমানে দেশে যে পরিমাণ গরু ও অন্যান্য পশু কুরবানি করা হয় তার সিংহভাগ জোগান আসে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। দেশে গত কয়েকবছর ধরে চাহিদার তুলনায় ছাগল-ভেড়ার কোনো ঘাটতি পরিলক্ষিত হয় না। তবে কিছুটা ঘাটতি দৃশ্যমান হয় গরুর ক্ষেত্রে। আর চলতি বছর সে ঘাটতিও পূর্ণ হয়েছে।
এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, আগে প্রতি বছর প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ গরু আমদানি করা হতো ভারত, মিয়ানমার, নেপাল ও ভুটান থেকে। এর মধ্যে অধিকাংশই আসত ভারত থেকে। আর কুরাবিনর ঈদে অনানুষ্ঠানিক আমদানির পরিমাণ দাঁড়াতো ১০ থেকে ১৫ লাখ গরু।
ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে গরু নিয়ে ভয়ানক রাজনীতি শুরু হয়। আর তারা ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু রপ্তানিতে বাধাও দিচ্ছে। দেশটি যদিও বাণিজ্যিকভাবে বিশ্বের অনেক দেশেই গরুর মাংস রপ্তানি করে থাকে।
তবে গরু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রকারান্তরে বাংলাদেশের জন্য শাপে বর হয়েছে। আর একথা বলেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
রবিবার গাবতলীর গরু-ছাগলের হাট পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, ‘ভারত এদেশে তাদের গরুর সরবরাহ বন্ধ করেছে, তা আমাদের জন্য শাপে বর হয়েছে। কারণ আমরা এখন প্রাণি সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ।’
দেশে এবার প্রায় দেড় কোটি কুরবানিযোগ্য পশু রয়েছে এবং তা পর্যাপ্ত জানিয়ে কুরবানিতে পশুর সংকট হবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
ঢাকাটাইমস/২১আগস্ট/ডিএম