নির্ধারিত স্থানে কোরবানি

এবারও সাড়া মেলেনি নগরবাসীর

এম গোলাম মোস্তফা, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ আগস্ট ২০১৮, ২১:৫৯ | প্রকাশিত : ২২ আগস্ট ২০১৮, ২০:৩৬

মুসলমানদের বড় উৎসব ঈদুল আজহায় রাজধানীতে হাজার হাজার পশু কোরবানি হয়। এসব কোরবানি পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টায় অপসারণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে রাজধানীবাসীকে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। উত্তরেরও একই আয়োজন ছিল। কিন্তু এবারও তেমন সাড়া মেলেনি নাগরিকদের। বরাবরের মতো যত্রতত্র পশু কোরবানি দিয়েছেন নগরবাসী।

আজ বুধবার উৎসবমুখর পরিবেশে রাজধানীসহ সারা দেশে উদযাপিত হয়েছে ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। ঈদগাহ কিংবা মসজিদে ঈদের জামাতে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় শেষে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সাধ্যমতো পশু কোরবানি দিয়েছে মুসলমানরা।

গত ২০ আগস্ট নগর ভবনে এক মতবিনিময় সভায় মেয়র সাঈদ খোকন নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। মেয়র বলেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ, নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করুন। তাহলে বর্জ্য অপসারণ করা সহজ হবে। গত তিন বছর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কোরবানির পশু বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। আপনাদের সহায়তায় এবারও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হবে।’

রক্ত ও বর্জ্যে পরিবেশ-দূষণ এড়াতে এবার দেশের সব কটি সিটি করপোরেশনে মোট ২ হাজার ৯৩৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল পশু জবাইয়ের জন্য। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ৬২০টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনিসিসি) এলাকায় ৫৫০টি স্থান নির্ধারণ করা হয়। ডিএসসিসির পক্ষ থেকে ঈদের আগে কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন এলাকার ইমাম ও কসাইদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কিন্তু ওই সব স্থানে খুব কম মানুষই তাদের কোরবানির পশু জবাই করেছে। তবে আশপাশের বাসিন্দাদের কেউ কেউ সেখানে কোরবানির পশু জবাই করেছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের নামাজের পর বাসার সামনের রাস্তায়, অলিগলিতে পশু কোরবানি দেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের অনেকেই জানেন না যে পশু জবাই করার জন্য ডিএসসিসির নির্ধারিত জায়গা আছে। আবার অনেকে সেটি জানলেও বাসা থেকে অনেক দূরে ও মাংস আনতে ঝামেলায় পোহানোর আশঙ্কায় সেখানে যাননি।

রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন, পরিবাগ, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, মতিঝিল, খিলগাঁও এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকের পশু জবাইয়ের জন্য রাখা হয়নি স্বাস্থ্যসম্মত কোনো পলিথিন, সংক্রমণনাশক ওষুধ কিংবা বর্জ্য রাখার ব্যাগ।

যারা সড়ক ও ড্রেনের পাশে কোরবানির পশু জবাই দিয়েছেন, তাদের অনেকে পানি দিয়ে ওই জায়গার রক্ত পরিষ্কার করেছেন। অনেকে আবার রক্ত ও বর্জ্য পরিষ্কার না করায় সেখানে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। আবার অনেকে পানি দিয়ে ধুয়ে দিলেও ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করেনি।

রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনে রাস্তার পাশে কোরবানি দিয়েছেন জসিম। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জায়গাটি সম্পর্কে তিনি জানেন। তবে রাস্তায় কেন কোরবানির পশু জবাই করেছেন জানতে চাইলে তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থান অনেক দূরে। আমার লোকবল সংকট। তাই বাড়ির পাশে রাস্তায় কোরবানি দিলাম। এই রক্ত, বর্জ্য সবকিছু আমি নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার করে ফেলব।’

পানি দিয়ে ধুয়ে দিলেও তো রোগ-জীবাণু ছড়াবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার বাসার সামনে দুর্গন্ধ হলে তো ভোগান্তি আমাদেরই হবে। তাই পরিষ্কার করার দায়িত্বও আমাদেরই। তবে শুধু পানি দিয়েই ধুয়ে দেব না, সব পরিষ্কার করার পর ব্লিচিং পাউডার দিয়ে দেব যাতে জীবাণু না ছড়ায়।’

পরিবাগের সামছুল আলম তার বাসার গেটের পাশে ড্রেনের ওপরে গরু জবাই করেছেন। ঢাকাটাইমসের সঙ্গে আলাপকালে তিনিও জানান, দূরত্ব বেশি বলে ডিএসসিসির নির্ধারিত স্থানে যাননি পশু জবাই দিতে। বাসার সামনে পশু জবাই ও কাটাকুটির পর প্রচুর পানি ঢেলে পরিষ্কার করেচেন বলে জানান তিনি। তবে তিনি ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করেননি।

নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিতে মেয়র সাঈদ খোকনের আহ্বানে কতটা সাড়া পাওয়া গেছে জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মাদ বিলালের দাবি, নাগরিকরা বেশ সাড়া দিয়েছেন।

বিল্লাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পরিচ্ছন্নতা কাজের সুবিধার্থে মেয়র মহোদয় সম্মানিত নাগরিকদের নির্ধারিত স্থানে কোরবানির পশু জবাই করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তাতে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। তবে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র পশু জবাই করা হয়েছে। আসলে এটা আমাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস। সেটা এক দিনে যাবে না। তবে সম্মানিত নাগরিকগণ ভবিষ্যতে আরও সচেতন হবেন বলে আশা করি।’

যত্রতত্র পশু জবাই হওয়ায় বর্জ্য অপসারণে মেয়রের ২৪ ঘণ্টার অঙ্গীকারে কোনো প্রভাব পড়বে কি না এমন প্রশ্নে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘না সেটা হবে না। আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সজাগ রয়েছে। নাগরিকদের আমি অনুরোধ করব, তারা যেন যেখানে-সেখানে বর্জ্য না ফেলে নির্ধারিত কন্টেইনারে ফেলে। তাহলে আমাদের পরিচ্ছন্নতার কাজ আরও সহজ হবে।’

(ঢাকাটাইমস/২২আগস্ট/জিএম/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের বিচার

এক হাতে ইফতারের পানির বোতল, আরেক হাতে যান চলাচলের ইশারা ডিসির

এলিফ্যান্ট রোডে বাসা থেকে শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ঢাকাস্থ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কল্যাণ সমিতির ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

অসুস্থতার যন্ত্রণা সইতে না পেরে ছুরিকাঘাতে রিকশাচালকের আত্মহত্যা

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’

বুধবার থেকে এক ঘণ্টা বাড়ছে মেট্রোরেল চলাচলের সময়

ঈদকে সামনে রেখে ডিবি-সাংবাদিক পরিচয়ে অপহরণের ফাঁদ

ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে জাইকা ও ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে রাজউকের সভা

২৭ মার্চ থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :