ফিরতি যাত্রায়ও ট্রেনের সময় বিপর্যয়ে ভোগান্তি

এম গোলাম মোস্তফা, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০১৮, ১৩:৫৯ | প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট ২০১৮, ১৩:২৫

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। ছুটি শেষে রবিবার খুলেছে সরকারি অফিস-আদালত। শেকড়ের টানে যুদ্ধ করে ঈদে গ্রামে ফেরা মানুষেরা কর্মস্থলে ফিরতেও যুদ্ধ করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঈদযাত্রার মতো ফিরতি যাত্রায়ও ট্রেনের সময় বিপর্যয় অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।

রবিবার বেশিরভাগ ট্রেনের ঢাকায় আসতে তিন থেকে চার ঘণ্টা দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে প্রতিটি স্টেশনে অতিরিক্ত সময় লাগায় দেরি হচ্ছে বলে জানান তারা।

রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটির কমলাপুর স্টেশনে আসার নির্ধারিত সময় ছিল ভোর ৪টা ৫৫ মিনিট। এটি ঢাকায় পৌঁছার সম্ভাব্য সময় ৮টা ১৫ মিনিট দেয়া হলেও সেটি নয়টার পরে এসে পৌঁছায় স্টেশনে। রংপুর থেকে ছেড়ে আসা রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছার কথা থাকলেও সাড়ে দশটায় স্টেশনে এসে পৌঁছায়নি।

চিলাহাটী থেকে ছেড়ে আসা নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছার কথা থাকলেও সম্ভাব্য পৌঁছার সময় দেয়া হয়েছে ১১টা ১০ মিনিটে। লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা ঈদ স্পেশাল লালমনি এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের পরিবর্তে ৯টা ৩০ মিনিট দেয়া থাকলেও সেটি ১২টার সময়ও কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছাতে পারেনি।

দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রায় চার ঘণ্টা বিলম্বে পৌঁছে। কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনটি সকাল ৮টা ১০ মিনিটে পৌঁছানোর কথা থাকলেও সেটির পরিবর্তিত সময় দেয়া হয়েছে দুপুর ১২টা। ঈশ্বরদী থেকে ছেড়ে আসা ফাস্ট প্যাসেঞ্জার বেলা ১১টায় আসার কথা থাকলেও সম্ভাব্য সময় জানানো হয়নি। সিরাজগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে পৌঁছার কথা থাকলেও সেটি এখনও সম্ভাব্য পৌঁছার সময় জানানো হয়নি।

ঈদযাত্রার মতো ফিরতি যাত্রায়ও ট্রেনে কেন সময় বিপর্যয় হচ্ছে জানতে চাই কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ঈদের সময় ট্রেনে মানুষের ভিড় বেশি থাকে, ট্রেনের ভেতরে এবং ছাদে মানুষে একেবারে পরিপূর্ণ থাকায় ট্রেনগুলো প্রতিটি স্টেশনে বাড়তি সময় দাঁড়াতে হচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকায় ট্রেন ধীরগতিতে চালাতে হচ্ছে। এসব কারণে ট্রেনগুলো আসতে দেরি হচ্ছে।’

এদিকে রবিবার সকালে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে দেখা যায়, বিভিন্ন রুটের লঞ্চগুলো ঢাকায় এসে পৌঁছছে। প্রত্যেকটি লঞ্চেই ছিল রাজধানীমুখি মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। এদের প্রায় সবাই সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী। দুই-একটি লঞ্চ দেরিতে ছাড়ার অভিযোগ পাওয়া গেলেও সার্বিক যাত্রা স্বস্তিদায়ক ছিল বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।

অন্যদিকে, সড়ক পথে ফেরিঘাটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বলে দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যাত্রীরা ঢাকা পৌঁছাচ্ছেন সম্ভাব্য সময়ের বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে।

ঢাকার গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পরিবহন মালিক সমিতির সদস্য মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, মাওয়া রুটে নাব্য সংকটের কারণে চাপ পড়েছে দৌলতদিয়ায়। গতকাল (শনিবার) রাতে যে গাড়িগুলো দক্ষিণবঙ্গ থেকে ছেড়ে এসেছিল, সেগুলো সব এখনও গাবতলী পৌঁছাতে পারেনি।

তবে উত্তর জনপদের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা বাসে চড়ে শনিবার রাতে বা রবিবার ভোরে রওনা হয়েছেন, তারা মোটামুটি স্বস্তিতেই ঢাকায় পৌঁছেছেন।

গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে আসা আল হামরা পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টার ম্যানেজার রুহুল কুদ্দুস ঢাকাটাইমসকে বলেন, গতকাল রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে যে বাসগুলো ছেড়ে এসেছিল সেগুলো নির্বিঘ্নেই সকালে পৌঁছায়, পথে তেমন যানজটও ছিল না।

সরকার ট্রাভেলসের একজন ব্যবস্থাপক জানান, পাবনা থেকে ছেড়ে আসা তাদের ছয়টি বাস সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে গাবতলী চলে এসেছে। পথে কোথাও বড় যানজটে পড়তে হয়নি তাদের।

অবশ্য ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে যারা এসেছেন, তাদের গাজীপুরের কোনাপাড়া, জয়দেবপুর চৌরাস্তা, টঙ্গী রেলগেইট এলাকায় কিছুটা জট পেরিয়ে আসতে হয়েছে বলে জানান আরিফুল নামের এক যাত্রী। ময়মনসিংহ থেকে যাত্রীর সঙ্গে কথা হয় মগবাজারে। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ময়মনসিংহ থেকে আসতে গাজীপুর চৌরাস্তায় আধাঘণ্টার মতো সময় বেশি লাগছে যানজটে। এছাড়া টঙ্গী রেল গেইটে কিছু সময় জট ছিল।

(ঢাকাটাইমস/২৬আগস্ট/জিএম/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :