গল্প

মৃতের নগরীতে এক যুবক

শাহ নিসতার জাহান
 | প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট ২০১৮, ০৮:৩৬

নদীটি এখানেই বাঁক নিয়েছে। বেশ বড় বাঁক। রামচর ঘুরে শফিপুরের দিকে। নদীটি প্রতিবছর ভাঙে। এবার কতটুকু ভাঙলো কে জানে। যুবক এখানেই একটু দাঁড়ায়। সন্ধ্যা হওয়ার মুখে। কার্তিকের হালকা ঠান্ডা। তবুও তার চিবুকে একটু একটু ঘামের রোয়া। এটি ঘটছে তার টেনশনের কারণে। টেনশন, কারণ তার দেরি হয়ে গেছে। তাছাড়া সে ঠিক ঠিক পথ ধরতে পেরেছে কি না সেটিও এক কথা। দেরি হওয়ার পেছনে তার দোষ নেই। চরের মধ্যে লঞ্চ সেঁটে গেল। টানা দু ঘণ্টার হ্যাপা।

ঠিক পথে চলছে কি না যুবক নিশ্চিত নয়। তবু সে ওই পথ ধরেই এগোয়। এক্ষণে আবার একটু দাঁড়ালো সে। এখানে রাস্তাটি দুটি ভাগ হয়েছে। সে কোন পথে যাবে? এবার তার বেশ ধন্ধই লাগে। আর একবার সে এখানে এসেছিল। সেটি পাঁচ-ছয় বছর আগের কথা। তিনদিন থেকেছিল। এতদিন পর আবার এসেছে। একটু যেন ভুল ভুল মনে হচ্ছে।

চারদিকে কুয়াশার একটি ক্ষীণ আভা দেখা যায়। ধোঁয়ার মতো। রাস্তার দু’পাশে পোয়াতি ধানক্ষেত। ধানগাছের গলার মধ্যে আটকে আছে ধানের বাচ্চারা। গাছের স্বাস্থ্য বেশ ভালো। ধানের ফলন এবার ভালো হবে মনে হয়। সেটিকে কি বাম্পার ফলন বলবে? হতে পারে। হাস্যকর সব সরকারি কথাবার্তা। শুধু বাম্পার ফলনের কথাটি বলবে গলা উঁচিয়ে। সে আবার তাকায় ধানক্ষেতের দিকে। দূরে আরও কিছু ক্ষেত মনে হয় সাদাটে। ওখানে ধান বেরিয়ে গেছে। হয়তো কচিধানের মধ্যে আঁঠালো দুধ জমে থাকবে। কিংবা দু-একদিনের মধ্যেই জমবে। বাতাস এলো এক দমকা। গাছগুলো ফুর্তিতে নাচতে শুরু করলো। ঢ্যামনা নাচন তাদের। রাস্তার পাশের খালে একটি মাছ ঘাঁই দিল। টাকি মাছ। দুটি পাখি ডেকে উঠলো সুর করে। বোধহয় সন্ধ্যা হওয়ার জানান দিলো একে অন্যকে। এমন দৃশ্য কতদিন দেখা হয় না তার! এসব দেখার জন্যই হতে পারে যে যুবক আরও ক্ষণিক দাঁড়ায়। ধানগাছের শরীর ঘেঁষে দৃষ্টি ফেললো সে। উদাস ভঙ্গি।

যুবককে দেখে মনে হয় সে বেশ শান্ত। আসলে তা নয়। সে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। তবে তার চিবুকের ঘাম উবে গেছে। এখন একটু যেন শীত শীত লাগছে তার। মনে হচ্ছে এটি ভুল রাস্তা। ওই পথ ধরাই উচিত ছিল। পরক্ষণেই মনে হয়, না, এ-পথই ঠিক। কাউকে দেখতেও পাচ্ছে না সে। নাকি ভুল করে ময়েঞ্জোদারোতে ঢুকেছে? তাও হতে পারে। আচ্ছা, ময়েঞ্জোদারো শব্দের অর্থ কী? মৃতের শহর, নাকি মৃতের স্তূপ? সে প্রথমে যাবে সেলিমপুর বাজারে। নুরু মিয়ার চায়ের দোকান। একেবারে বাজারের শেষ মাথার দোকান। লোকটির হাঁপানি রোগ। দেখে মনে হয় শক্তি নেই। নেই যে তাও ঠিক। কিন্তু বেশ কাজের। বিশ্বাস করার মতো। সব সময় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

যুবক পকেটে হাত রাখে। হাতিয়ারটি আছে, পড়ে আছে শান্ত হয়ে। তার চিন্তাহীন ভাব এবং সাহস দেখে বোঝা যায় এসব হাতিয়ার নিয়ে চলাচল করতে সে খুবই অভ্যস্ত। কোনো চাঞ্চল্য নেই, উত্তেজনা তো নয়ই। তার এগিয়ে যাবার ধরন দেখে মনেও হয় না এ জায়গায় সে প্রায় নতুন। সে সত্যি অবাক হয়। একজন লোকও সে পেলো না এতক্ষণ। সত্যি মৃতের নগরীতে ঢোকেনি তো? অবশ্যি মৃতের নগরীর গাছপালার ভেতর দিয়ে আলোর আভাস দেখা যায়। বাড়িতে বাড়িতে আলো জ¦লছে। ওইদিকে একটি মানুষের চিৎকার শোনা গেল। তার উত্তরে আর একজন কী যেন বললো। একই উচ্চ গলায়। এবার দুজন লোকের দেখা পাওয়া গেল। কিন্তু এদেরকে আর দরকার হলো না তার। কারণ এখন সে নিশ্চিত বাজারের পথই এটি। সে একটি বাড়ির সামনে দাঁড়ালো। দৃষ্টি কঠোর হলো তার। কিন্তু মুহূর্তমাত্র। যুবক আবার হাঁটতে লাগলো। নুরু মিয়ার সঙ্গে দেখা করা দরকার আগে।

খ. ইীল পালের চেহারার বর্ণনা দেয়া কঠিন। বেশ লম্বা মানুষ। চেহারা এক সময় গোলই ছিল। ভেতরে ঢুকে যাওয়া গাল। একটি দাঁতও বোধহয় নেই। যখন হাঁ করে মনে হয় পৃথিবীর যাবতীয় বাতাস ঢুকে পড়বে তার মুখের ভেতর। গলায় তুলসীর মালা। সেটি সেঁটে আছে যেন। লম্বা করে কাটা চুল। পরনে আধ ময়লা ধূতি।

সারাদিন যেমনই যাক, সন্ধ্যায় তার ব্যস্ততার শেষ নেই। এ সময় তার কাজই হলো প্রতিবেশীদের নিয়ে কীর্তনের আয়োজন করা। ভগবানকে সন্তুষ্টির চেষ্টা। তবে ভগবান তার এ আরাধনার উত্তর কতটা দেন তা নিয়ে নীলু পালের জিজ্ঞাসার অন্ত নেই। এরপরও কীর্তনে তার উৎসাহ সীমাহীন। সে যখন ‘হরে’ বলে চিৎকার করে, মুখটাকে মনে হয় যেন কামারের হাপর। বাতাস ঢুকচ্ছে, বের হচ্ছে। দাঁত না থাকায় উচ্চারণও হয় অদ্ভুত। আর খাবার মুখে নিয়ে চিবুতে থাকলে মনে হয় যেন ভেংচি কাটছে। যুবকের মনে হলো কীর্তন শেষ পর্যায়ে। অনেক গলা মিলিয়ে একটি হৈচৈ ব্যাপার শুরু হয়েছে। সঙ্গে আছে ঢোল, কাঁসা ইত্যাদি বাদ্য।

যুবক এ বিষয়টি খুব খেয়াল করলো। এতক্ষণ তবু দু-একটি শব্দের পার্থক্য বুঝতে পারতো। এখন এই সম্মিলিত উত্তেজনাকর উচ্চারণে যুবক কিছুই বুঝতে পারছে না। তার মনে হলো, এরা সবাই বলছে, ‘হরে কৃষ্ণ, হরে রাম না পারলে কি জোরের কাম।’ সে মুখ টিপে একটু হাসলো। এটি ছোটবেলায় তার দাদু তাকে বলেছিল হাসতে হাসতে। মনে আছে তার। মুহূর্তমাত্র। মুখ থেকে হাসিটি উবে গেল তার। ঝেড়ে ফেলল যেন। সে তাকাল তার পাশের লোকটির দিকে। নুরু মিয়া।

তারা গিয়ে দাঁড়ালো নীলু পালের ঘরের সামনে। সে আবার একটু তাকালো নুরু মিয়ার দিকে, যা বোঝার তা বুঝলো সে। নুরু মিয়া ডাক দিলো নীলু পালকে। ঘর থেকে বের হয়ে এলো। নীলু পাল হাতজোড় করে নমস্কার করতে যাবে তখনই নুরু মিয়া বললো, নীলু দা জাহিদ সাহেবকে পৌঁছে দিলাম।

জাহিদ। না, এটি যুবকের নাম নয়। তার নাম ইয়াহিয়া আহমেদ রুহেল। কিন্তু কেউ কারও সঠিক নামে পরিচিত হবে না তাই তো ঠিক। আসল নাম বলার ম্যালাই ঝামেলা। পেছনে টিকটিকি লাগলে তাদের খুব সুবিধে। তাই সবার নাম বদলে যায়, বদলানো হয়। নীলু পাল খুশির হাসি হাসলো। হাত বাড়িয়ে দিলো। বললো, আসার তো কথা বিকেল বেলা। পাঁচটার মধ্যে। দেরি হলো যে! পথে অসুবিধে হয়নি তো?

না। লঞ্চে দেরি হলো। দু ঘণ্টা আটকে ছিল চরে।

আমি খুব চিন্তায় ছিলাম। কখন কী ঘটে বলা তো যায় না।

আমি তো আরও একবার এখানে এসেছিলাম।

সে তো অনেকদিন আগে। মাত্রই তিনদিন ছিলেন।

তা ঠিক।

ঘরে আসেন। আপনার বিশ্রাম নেয়া দরকার। আপনি ক্লান্ত। রুহেল কিছুই বললো না। সে সত্যি ক্লান্ত।

ঘরের বারান্দাতেই দু-তিনজন মহিলা। নিজেদের মধ্যে গল্প করছে। সবাই মাঝবয়সী। একজন বৃদ্ধা। রুহেলকে দেখে তাদের গল্প থেমে গেল। মহিলারা তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। সে দেখেও দেখলো না।

গ. হাতিয়ারটি নিয়ে হরি কিশোর দাঁড়িয়ে থাকবে এমনই কথা। কিন্তু এ লোককে রুহেল চেনে না। তার গায়ে পাঞ্জাবি থাকবে, গলায় মাফলার। হরি কিশোর এসে রুহেলের কাছে সময় জানতে চাইবে। তারপর জানতে চাইবে এখান থেকে বাস স্টপেজ কতদূর। সব ঠিক ছিল। মাফলার গলায় এক লোক এসে এসবই জিজ্ঞেস করল। কিন্তু এ লোক ছিল কারও ষড়যন্ত্রের হরি কিশোর। পুলিশের লোক। রুহেল সরল মনে বলল, হাতিয়ারটি কোথায়?

লোকটি বললো, সেটি থানায়। তোমাকে খুঁজে ফিরছি বহুদিন। আজ পেলাম। একদম পালাবার চেষ্টা করবে না। মুহূর্তে আরও কয়েকজন লোক তাকে ঘিরে ধরলো। পরে জানা গেল ওই হরি কিশোরও পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। রিয়াজ! হারামির বাচ্চা। রুহেল গালি দেয়। স্বার্থবাদী দালাল।

খুব বেশি সময় নেয়া ঠিক হবে না। সময় যত যাবে ততই মানুষের চোখে পড়বে সে। তার হাতে সময় তিনদিন। কাজটি করবে সে নিজে। কাউকে কিছু জানাবে না সে, জানানোর দরকার নেই। তার বুকে আগুন জ¦লছে। নিজ হাতেই নিতে হবে প্রতিশোধ। এখন সুযোগ হয়েছে তার। বুকের আগুন যদি এবার নেভানো যায়।

তৃতীয় ঘরটিতে ঘুমোয় হারামির বাচ্চাটা। পাকা খবর এটি। ওই ঘরের পেছনের দিকে একটি জানালা আছে। প্রথম রাতেই একটি সাংঘাতিক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল। একেবারে মুখোমুখি হয়ে পড়েছিল নিপার। ওর সঙ্গে আর একটি মেয়ে ছিল। নিপার বান্ধবী হতে পারে। নিপা কি লক্ষ্য করেছিল ওকে? না, তা করবে কেমন করে? তবে ও যেভাবে অবাক হয়েছিল তাতে খুব ভয় পেয়েছিল সে। বলতে কি, ভয়টি এখনো যায়নি পুরোপুরি। চিনে ফেললো তো? তবে রুহেলকে চিনতে পারলে নিপা কথাও বলতো নিশ্চয়ই। তাতেই কেলেঙ্কারি হয়ে যেত। জানাজানি হয়ে যেত সব। কাজের কাজ হতো না কিছুই। অবশ্যি একাকি নিপার সঙ্গে দেখা হলে কেমন হতো? খুব ঝামেলা হতো না বোধ হয়। সে জানে রুহেল কী চায়। নিপাও তাই চায়। সুতরাং সমস্যা নেই।

গতরাতে রিয়াজের ঘরের কাছে গিয়েছিল রুহেল। জানালা বন্ধ। শীতকাল বলেই হয়তো তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেয়। খুব অবাক লাগে তার। হারামির বাচ্চাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। হাট-বাজারেও যায় না। পাত্তাই পাওয়া যাচ্ছে না। প্রয়োজনে ঘরে ঢুকেই অপারেশন চালাতে হবে। তারপর যা হয় হবে। তোর আর ক্ষমা নেই। অনেক বেঁচেছো। এবার পথ দেখ। আর সময় দেয়া যায় না। যা করার আজ অথবা কালই করতে হবে। সে ধমকালো নিজেকে। আবার কাল কেন? আজই করতে হবে যা করার। হাতে সময় নেই।

গতরাতে অবশ্যি একটি সমস্যা হয়েছিল প্রায়। ঘরে কোনো ফাঁক-ফোকর আছে কি না দেখছিল রুহেল। শেষে যখন জানালার পাশে গেল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে জানালা খুলে দিলো কে যেন। রুহেল সরে যেতে গিয়েও একটু তাকাল। নিপা। থু-থু ফেলল। তারপর আবার জানালা বন্ধ। ইচ্ছা করছিল নিপাকে ডেকে বলে, আমি এসেছি, তুমি তৈরি থেকো। হারামির বাচ্চাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবো।

কীভাবে কাজটি করতে হবে, মোটামুটি কয়েকটি ছক মাথার মধ্যে এঁকে ফেলেছে। আজ অপারেশন সাকসেস হবেই, যা করে হোক। কোন পথে সরে পড়ার সুবিধে ভালো, কোন পথে ঢুকতে পারা যাবে সহজে, রুহেলের সব জানা। সে উঠে দাঁড়ালো। তার চেহারা কঠোর, কপালে একটু একটু ঘাম।

তার কপাটে টোকা পড়লো। নিশ্চয়ই নীলু পালের বৌ। মহিলা খুব ভালো। তার যত্নের ত্রুটি রাখেনি। সব সময় খোঁজ নেয়। সারাক্ষণ মাথায় ঘোমটা টানা থাকে। কালো, হালকা-পাতলা মহিলা। কিন্তু এক্ষণে রুহেলের বিরক্তির সীমা রইল না। সে এখন কাজে বের হবে। তবে এসব বিরক্তির কোনো মানে এখন নেই। রুহেল কপাট খুলে দিলো। খুলে দিয়ে রীতিমতো অবাক সে। এত অবাক যে তার গলা দিয়ে কথা বেরুলো না অনেকক্ষণ। নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, নিপা, তুমি?

নিপাও একটুক্ষণ চুপ থাকলো। মুহূর্তই যেন বা বললো, রুহেল তুমি কেমন আছ?

আমার যেমন থাকার কথা। ভালো আছি, খুব ভালো আছি।

আমি তোমার কাছেই এসেছি রুহেল।

তুমি আমার কথা জানলে কেমন করে?

সেদিন আমাদের বাড়ির সামনে তোমাকে দেখেই চিনেছি। আর আমি তোমার পরিকল্পনাও অনুমান করছি। এজন্য রিয়াজকে ঘর থেকে সেদিন থেকেই বের হতে দিইনি। একবারের জন্যও না।

‘নিপা, আমি তোমার জন্যই এখানে এসেছি।’ রুহেল আবার বললো কথাটি।

আমি জানি।

আমাকে সাহায্য কর।

কিন্তু রুহেল, আমি এসেছি তোমার ভিক্ষে চাইতে।

কী?

আমি রিয়াজকে ভিক্ষা চাই।

নিপা, তুমি একথা বলছো?

রুহেল প্লিজ। দয়া করো।

আমি কি তোমাকে দেখছি না অন্য কাউকে?

এ ভিক্ষা আমাকে তোমার দিতেই হবে।

কে কাকে ভিক্ষা দেয়! তুমি আমাকে বিস্মিত করেছো। আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে এ জানোয়ার। তারপর কৌশলে তোমাকে বিয়ে করেছে। আমার এতগুলো বছর, আমার এত স্বপ্ন নষ্ট হলো। কেবলই ওর জন্য। আমার কথা বাদ দাও, কী জবাব তুমি দেবে হরি কিশোরের আত্মাকে? তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে, সে কথা জানো? পার্টির ছত্রছায়ায় কত স্বার্থ আদায় করেছে আর কত পরিবার, কত লোকের সর্বনাশ করেছে এই লোক। তুমি সে সব ভুলে গেলে?

আমি নিজেও ওকে ক্ষমা করতে পারব না কখনো। তবু ওর প্রাণভিক্ষা চাইছি আমি। আমি জানি তোমার বুকে আগুন। আগুন আমার বুকেও কম নেই। তবুও ওকে মাফ করো।

রুহেল বিস্মিত। তাকালো নিপার দিকে। কী যেন বলতে চাইল। তার আগেই নিপা বলল, ও এখন আর মানুষের মধ্যে নেই। তোমার কথা শোনার পর থেকেই ও মরে গেছে। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। ঘুম নেই সারা রাত। আর-

বলো, বলে যাও।

আমার পেটে ওর বাচ্চা। তুমি শুধু ওকে একবার দেখ। সে কাকে ধরে বড় হবে? রিয়াজ ঘরে ঢুকল কাঁদতে কাঁদতে। সে পা জড়িয়ে ধরতে চাইল রুহেলের। রুহেল সরে গেল।

ঘ.

এখানে আর থাকার কোনো মানে হয় না। রুহেল রওনা হলো। নুরু মিয়া এগিয়ে দিলো তাকে। বললো, কমরেড, আপনি কেন এলেন কিছুই বললেন না।

এমনি এলাম বেড়াতে। আমি কি আসতে পারি না?

তা তো অবশ্যই পারেন।

এমনি এসেছিলাম। আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে।

আবার আসবেন?

তার হয়তো দরকার হবে না।

নুরু আর কথা বলে না। তাকায় কমরেডের দিকে। কমরেড আর কিছু বলে কি না তার অপেক্ষা। কিন্তু সেও কিছুই বলে না। একটু হাসে। তারা দ্রুত পা ফেলে। নিজেকে অথর্ব মনে হয় রুহেলের। ইচ্ছা হচ্ছে পকেটে পড়ে থাকা পিস্তলটি ফেলে দিতে। কেন এমন হচ্ছে কে জানে?

(ঢাকাটাইমস/২৭আগস্ট/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :