‘সুচিন্তা’র জঙ্গিবাদবিরোধী সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট ২০১৮, ১৯:১২

অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের মনোজগৎ জাগ্রতকরণ ও জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রম হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে প্রায় এক বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেমিনার করে আসছে ‘সুচিন্তা ফাউন্ডেশন’।

‘জাগো তারুণ্য রুখো জঙ্গিবাদ’ শিরোনামে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমের এবারের সেমিনারটির আয়োজন করা হয়েছিল মিরপুরের প্রাইম ইউনিভার্সিটি অডিটোরিয়ামে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য দেন- মিরপুর যুবলীগ ও এক সময়ের ছাত্রনেতা সাজ্জাদুর রহমান রাসেল। তিনি বলেন, আইএস-এর ওয়েবসাইটে লক্ষ্য করলে দেখবেন সেখানে নবি করিম (স.)-এর একটি বাণী উদ্ধৃত করা হয়েছে- ‘তাদেরকে যেখানে পাবে হত্যা কর, যারা বিধর্মী।’ অথচ কোন ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ সেখানে দেয়া হয়নি। মক্কা বিজয়ের সময় কোন একটি যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও প্রতিহত করতে এই বক্তব্য তিনি রেখেছিলেন। কিন্তু সে ঘটনার তাৎপর্য উল্লেখ না করে খণ্ডিতভাবে বক্তব্যটির অংশ দিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে মানুষকে। এভাবেই জঙ্গিরা ইসলামকে ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। অথচ নবিজী (সা.)-এর মত মানবিক মানুষ সারা দুনিয়ায় কম আছেন। যা অন্য ধর্মের মানুষ দ্বারাও স্বীকৃত।

অনুষ্ঠানে ছিলেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের পরিচালক কানতারা খান। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তরুণরাই দেশের শক্তি। তবে সেই তরুণদের যৌক্তিক হতে হবে। নিরাপদ সড়কের আন্দোলন সরকারসহ সকলেই সমর্থন করেছে। সরকার সকল দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছে। দাবি পূরণের পর এই আন্দোলন হয়ে উঠেছিল ‘অন্যদের’ উপস্থিতিতে ‘অনিরাপদ’। তৃতীয় শক্তির সেখানে অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। আর সেখানে প্রবেশ ঘটেছিল উচ্ছৃঙ্খলতা আর জঙ্গিবাদের। এইভাবেই জঙ্গিরা তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সফল করতে কোন না কোন মাধ্যমের আশ্রয় নেয়। কখনো ধর্মের, কখনো মতবাদের, কখনো সামাজিক আন্দোলনের নামে অন্যয়ভাবে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করে।

তরুণ সাংসদ অনুপম শাহজাহান জয় অনুষ্ঠানের অন্যতম আলোচক ছিলেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। আমি গ্রামের ছেলে, গ্রামে বড় হয়েছি। আপনাদের চেয়ে আমার বয়স খুব বেশি নয়। দেশ ডিজিটাল হয়েছে। কিন্ত মানসিকতায় আমরা ডিজিটাল হয়ে উঠতে পারিনি। এখনও আমরা সাঈদীকে চাঁদে দেখি। গুজবে কান দেই। মুসলমান হয়েও আমাদের অনেকে কোরআন পড়িনি। ফলে উগ্রপন্থীরা আমাদের অজ্ঞতার সুযোগ নেয়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অগ্রসর রাষ্ট্র। অনেকের কাছেই এই উন্নয়ন ও সাফল্য ঈর্ষণীয়। জঙ্গি হামলার ঘটনায় দেখলাম বাইরের অনেক দেশই ‘লাইভ’ করছে। জঙ্গিরা কাদের হত্যা করেছে? যারা বাংলাদেশের বন্ধু। যারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে এসেছে। মনে রাখতে হবে দেশটা নিজের, দেশটা সবার। ভারতে লক্ষ্য করলে দেখবেন তারা বক্তব্যের শেষে ‘জয় হিন্দ’ বলে। অথচ আমাদের অনেকেই ‘জয় বাংলা’ বলতে দ্বিধাবোধ করেন। ‘জয় বাংলা’ কোন ব্যক্তি বা দলের স্লোগান নয়। বাংলাদেশের স্লোগান।

শেষে তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে তার বক্তব্য শেষ করেন।

সুচিন্তা গবেষণা সেলের পক্ষ থেকে আশরাফুল আলম শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন উত্তরের মধ্যদিয়ে জঙ্গিবাদ বিষয়ে তাদের মতামত ও জিজ্ঞাসার উত্তর দেন।

অনুষ্ঠানে সমাপনী ঘোষণা করেন প্রাইম ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন ‘আজ সারাবেলা’র সম্পাদক জববার হোসেন।

(ঢাকাটাইমস/২৯আগস্ট/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :