তিন বছরের মধ্যে ‘রাজন হত্যার’ পুনরাবৃত্তি

আজহারুল হক, ময়মনসিংহ
| আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০১৮, ১৪:৪২ | প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০১৮, ১৪:২২

তিন বছর আগে সিলেটে শিশু রাজন হত্যারই যেন পুনরাবৃত্তি। চুরির অপবাদ দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া শিশুকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে।

১৩ বছর বয়সী শিশু রাজনকে যেভাবে গাছে বেঁধে পেটানো হয়েছিল, ১৪ বছর বয়সী শিশু রিয়াজকেও পেটানো হয়েছে একই কায়দায়। রাজন যেমন বারবার আকুতি করছিল মার থামানোর জন্য, রিয়াজও তাই করেছে।

রাজনকে আর না মারতে যেমন প্রত্যক্ষদর্শীদের অনুরোধ গায়ে মাখেনি নির্যাতনকারী, রিয়াজের ক্ষেত্রেও ঘটেছে তেমনই।

সিলেটের কুমারগাঁওয়ে রাজনকে গাছে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল ২০১৫ সালের ৮ জুলাই। আর আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের উথুরী-ঘাগড়া টাওয়ারের মোড় বাজারের কাছে হত্যা করা হয় রিয়াজকে।

শিশুটিকে আটক করা হয় ভোর পাঁচটার পরে। আর নির্যাতন চলে এক ঘণ্টারও বেশি। সকাল সাতটার দিকে ছেলেটির মৃত্যুর পরই কেবল ক্ষান্ত দেয় নির্যাতনকারীরা। আর এরপর কেবল ঘটনাস্থল নয়, এলাকাও ছেড়ে পালিয়ে যায় তারা।

রিয়াজ ঘাগড়া-উথুরী-ছিপান উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। সে উথুরী গ্রামের সৌদি প্রবাসী সাইদুর রহমান শাহীনের ছেলে। গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ খান বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকাটাইমসকে জানান, ভোর পাঁচটার দিকে উথুরী-ঘাগড়া টাওয়ারের মোড় বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফুলের মনিহারী দোকানের ‘তালা ভাঙার চেষ্টার’ কথা বলে রিয়াজকে আটক করেন ব্যবসায়ী আশরাফুল ও তার ভাই কামরুল এবং প্রতিবেশী রশিদ।

পরে খুঁটির সাথে বেঁধে ফেলা হয় রিয়াজকে। লাঠি দিয়ে পা ও কাঁধে চলে বেদম পিটুনি। কিশোর বয়সী ছেলেকে এভাবে পিটুনির প্রতিবাদ জানান উপস্থিত লোকজন। ছেলেটি আসলেই চুরি করতে এসেছে কি না, তা যাচাই করতে বলেন। আর সেটা করলে পুলিশে দেয়ার কথাও বলেন তারা।

এভাবে মারলে ছেলেটা মারা যেতে পারে- এমন সতর্কতা উপেক্ষা করেও চলতে থাকে লাঠির আঘাত। আর এতে তার নেতিয়ে পড়া ছোট্ট দেহটির আর জেগে উঠা হয়নি। পুরোপুরি নিস্তেজ হয়ে যায় সে।

প্রত্যক্ষদর্শী উথুরী গ্রামের ইমন ও মোতালেবের বর্ণণা অনুযায়ী, কিশোর রিয়াজ আকুতি করে বলছিল ‘আমি চুরি করতে আসি নাই। আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। আমার জান ভিক্ষা দেন।’

মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিন ব্যবসায়ী তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনার পর থেকে আশরাফুলসহ বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী দোকান ঘর বন্ধ করে পলাতক রয়েছে।

রিয়াজের দাদি খোদেজা খাতুন বিলাপ করতে করতে বলেন, শক্রতা করে তার নাতিকে অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস/৩০আগস্ট/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :