‘ড. কামালকে বলেছি, রাস্তায় নামতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:৫২
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে হলে রাস্তায় নামতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব ও যুক্তফ্রন্ট নেতা মাহী বি চৌধুরী। বলেছেন, ‘আমাদের রাজপথে নামতে হবে। গায়ে যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশের মাটির ধূলা লাগবে না ততক্ষণ বাংলাদেশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারব না।’

‘ড. কামাল হোসেনকে বলেছি, আপনার শরীরে যতক্ষণ পর্যন্ত শ্রমিকের ঘামের গন্ধ পাওয়া যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। রাজপথে নামতে হবে। মানুষকে গিয়ে বলতে হবে আমি তোমার পাশে আছি।’

বেসরকারি টিভি স্টেশন চ্যানেল আইয়ের ‘তৃতীয় মাত্রা’ অনুষ্ঠানে যুক্ত ফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও বিকল্প ধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরী এই কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে তৃতীয় শক্তি হওয়ার বাসনা নিয়ে গত নভেম্বরে বিকল্পধারা, নাগরিক ঐক্য ও জেএসডি নিয়ে যাত্রা শুরু করে যুক্তফ্রন্ট। এই প্রক্রিয়ায় ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবদুল কাদের সিদ্দিকীও। গত ১৯ আগস্ট এক বৈঠক শেষে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট নিজেদের জানান দেয়।

মাহী বি চৌধুরী বলেছেন, ‘বড় দুই রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ-বিএনপি) নেতাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তৃতীয় শক্তির (যুক্তফ্রন্ট) নেতাদের বিরুদ্ধে নেই। তবে নিজেদের দৃঢ় করতে সেই কনফিডেন্স আমরা এখনও তৈরি করতে পারছি না। প্রেস কনফারেন্স ও গোল টেবিলের মাধ্যমে রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’

‘প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের বাইরে যখন তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থানের চেষ্টা হয় সাথে সাথে আমরা দেখি সেখানে একটি ষড়যন্ত্রের গন্ধ তৈরি হয়। তৃতীয় শব্দটা শুনলেই যেন মনে হয় একটা স্টাবলিস-এর বাইরে।’

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যেমন মানুষের প্রত্যাশার উপর নির্ভর করে রাজনীতি করে, তেমনি তৃতীয় শক্তিও তাই করে জানিয়ে মাহী বলেন, ‘কিন্তু বড় দুই দল জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না। বার বার নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের সেই ফাস্টট্রেশনের কথাটা জানিয়ে দিচ্ছে যে- আমরা খুশি না তোমাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমে। সমস্যা হলো, এই দুটি দলের বাইরে আমরা একটি রাজনৈতিক শক্তিকে তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছি- এটাই বাস্তবতা।’

‘১৯৯১ সাল থেকে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হবার পর থেকে দেখবেন ৯১ সালে বিএনপি, ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ, ২০০১ সালে বিএনপি জোট সরকার আবার ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার। প্রতি নির্বাচনে যে পরিবর্তন; জনগণও স্থির হতে পারছে না।’

তবে এই ব্যর্থতার কারণ হিসেবে মাহী মনে করেন, ‘দুই দলের রাজনৈতিক যে চক্র তার মধ্যে পেশিশক্তি নির্ভর রাজনীতি, কালো টাকা নির্ভর রাজনীতি, দখল বানিজ্যের রাজনীতি এবং ৪৭ বছরের পেশি শক্তির রাজনীতির যে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ পেয়েছে এর বাইরে আপনি একদিনে পরিবর্তন আনতে পারবেন না। এই জন্য কিন্তু আমরা জাতীয় ঐক্যের কথা বলছি।’

জাতীয় ঐক্য হলে তো সব দল মিলে ঐক্য হতে হবে এমন প্রশ্নে মাহী বি চৌধুরী বলেন, আমরা শুধু বিএনপি নয় সবার মধ্যে ঐক্যের কথা বলেছি। আওয়ামী লীগ এমন একটা শক্তির জায়গায় রয়েছে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় তাদের কেউ সরাতে পারবে না। আওয়ামী লীগ সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি সংসদের প্রধান বিরোধী দলকেও নিয়ন্ত্রণ করে। এমন অবস্থায় দলটি মনে করতে পারে আমরা সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। আমরা তাদের বিরুদ্ধে রাজপথে নামার জন্য শক্তিসঞার করতে পারছি না; এই জন্যই জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন।’

আওয়ামী লীগের বাইরে জাতীয় ঐক্য হতে হলে জামায়াতে ইসলামীকে বাদ দিতে হবে উল্লেখ করে মাহী বলেন, ‘৮ দলীয় বাম মোর্চাকে আনতে হবে। বিএনপিসহ তাদের জোটভুক্ত দলগুলোকে আনতে হবে। তবে জামায়াত ইসলামীকে বাদ দিয়ে আসতে হবে। তাহলে একটা জাতীয় ঐক্যের সম্ভবনা রয়েছে। সেই ঐক্যের আবার একটা ভারসাম্য থাকতে হবে।’

বিএনপি বাদে ১৫০ আসনে যুক্তফ্রন্টের যোগ্য প্রার্থী আছে কি-না প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যোগ্য প্রার্থী ৩০০ আসনেই আছে। তবে তাদের পাস করিয়ে আনার জন্য যে সংগঠন, পেশি শক্তির প্রয়োজন সেগুলো আমাদের নেই। আমি মনে করি বিএনপির যোগ্য প্রার্থীর অভাব আছে তবে আমাদের নেই।’

ঢাকাটাইমস/০১সেপ্টেম্বর/এসএস/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :