আরপিও সংশোধনের ফাইল আমার কাছে আসেনি: আইনমন্ত্রী
নির্বাচন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীর ফাইল এখনো আইনমন্ত্রী কাছে পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, তবে ফাইটি তার মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে পৌঁছেছে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
গত ৩০ আগস্ট নির্বাচন কমিশন এক বৈঠকে আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিধান রেখে আরপিও সংশোধনের প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চারজন ইভিএমের পক্ষে মত দিলেও নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তাতে দ্বিমত করেন। তিনি বৈঠক বর্জন করে ছয়টি বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দেন।
বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনে ইসির ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনা করে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাড়াহুড়া করে ইভিএম চাপিয়ে দেয়া যাবে না।
আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান এক অনুষ্ঠানে। তবে বাছাই করা কিছু কেন্দ্রে কিংবা আসনে তা ব্যবহার করা হতে পারে।
আরপিও সংশোধনে ইসির অনুমোদিত প্রস্তাবের ফাইলটি তার কাছে পৌঁছেছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আরপিও সংশোধনীর বিষয়ে ভেটিং ও আইনি পরামর্শের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগে পৌঁছেছে। তবে আমার কাছে এখনো আসেনি। লেজিসলেটিভ বিভাগ সেটা দেখবে, তারপর তা আমার কাছে পাঠাবে।’
আর কদিন পরে বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশন বসবে। এরপর কবে নাগাদ সংসদ ভাঙছে তা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি আগামী ৯ সেপ্টেম্বর যে সংসদ অধিবেশন ডেকেছেন সেটা হবে এই সংসদের শেষ অধিবেশন। তবে সংসদ ভাঙবে না। সংসদের কার্যকাল পর্যন্ত এই সংসদ বহাল থাকবে।’
নির্বাচনকালীন সরকার কবে ঘোষণা হবে এবং এর আকার কেমন হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা (ঘোষণা) প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব। নির্বাচনকালীন সরকারের আকারও উনিই (প্রধানমন্ত্রী) জানেন। কেননা, সংবিধান অনুযায়ী এটা ওনার দায়িত্ব।’
এর আগে ঢাকা জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী। নকলনবীশদের অনুলিপি কাজ বাবদ অর্থ আদায় ও পরিশোধ বিধিমালা, ২০১৮ এর আলোকে তাদের পারিশ্রমিক প্রদান উপলক্ষে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়।
আনিসুল হক বলেন, ‘আমার মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ পাই ৫ বছর, এক যুগের বেশি সময় পরও অনেকে জমির রেজিস্ট্রেশন পান না। এর কারণ জানতে চাইলে বলা হলো, বালাম নেই, ইনডেক্স নেই, স্লিপ নেই, এ জন্যই দেরি হয়। আমি মন্ত্রী হওয়ার দুই মাসের মধ্যে এসব সমস্যা দূর করতে আমরা টেন্ডার দিয়ে সমস্যার সমাধান করি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, অনেকে ঘরে বসে বক্তৃতা দেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, দেশ এমনিতেই উন্নত হয়ে যেত। কিন্তু আমার কথা হলো, নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে জনপ্রতিনিধিরা আছেন, প্রত্যেক এলাকায় জনগণের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মেম্বাররা আছেন। তাই সর্বস্তরেই গণতন্ত্র আছে। আর গণতন্ত্র আছে বলেই শেখ হাসিনার সরকার দেশের উন্নয়ন করছে।’
নিবন্ধন কার্যালয়ের মহাপরিদর্শক খান মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন আইন বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক।
(ঢাকাটাইমস/৩সেপ্টেম্বর/এমএবি/মোআ)