মগবাজার-মৌচাক উড়ালসড়ক

পথ এখন গতিময়

কাজী রফিকুল ইসলাম
| আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:০৬ | প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:০৮

রাজধানী ঢাকার পরিবহনের গতি বাড়াতে সরকার যতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে তার অন্যতম মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। তিন ধাপে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় এই উড়ালসড়ক। নির্মাণকালীন দুর্ভোগের অবসান হয়েছে। এখন সুফল পাচ্ছে সবাই। এলাকাবাসী বলছেন, মৌচাক মোড়ের নিয়মিত যানজট থেকে তারা রক্ষা পেয়েছেন।

‘এই মোড় দিয়ে আমি কলেজে জেতাম। এখনো এই রাস্তা দিয়েই ইউনিভার্সিটিতে যাই। এমন অনেক দিন হয়েছে জ্যামের কারণে হেঁটে বাসায় যেতে হয়েছে। তখনকার চিত্র আর এখনকার চিত্র পুরোই আলাদা।’ বলছিলেন মালিবাগের বাসিন্দা লিজা আক্তার।

যানজট কমায় বেড়েছে বাসের রুট। মোহাম্মদপুর থেকে মৌচাক-মালিবাগ থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটে চালু করা হয়েছে স্বাধীন পরিবহন নামে একটি বাসের রুট। ফ্লাইওভার নির্মাণের আগে এই রুটে চলাচল ছিল বেশ কষ্টদায়ক এমন দাবি করেন বেসরকারি চাকরিজীবী মো. লিয়াকত আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ঢাকার তো কত রূপ দেখলাম। যখন ঢাকায় আসি, তখন গাড়ি ছিল কম, এত মানুষও ছিল না। মানুষ বাড়ল, গাড়ি বাড়ল, জ্যামও বাড়ল। ফ্লাইওভারগুলো না হলে মানুষ খুব বিপদেই পড়ত। মালিবাগ থেকে কারওয়ান বাজার খুব দূরে নয়। আগে বাসে উঠলে মনে হতো কত না দূর! এখন দূরত্ব কমছে। ঢাকার মধ্যে আরো যদি কিছু ফ্লাইওভার বানানো যায় আর এগুলোকে মেনটেইন করা যায় তাহলে শুধু আমরা না, আমাদের ছেলেমেয়েরাও খুব উপকৃত হবে।’

জানা যায়, মুখে মুখে নাম মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার হলেও এটি আসলে একটি বহুমুখী ফ্লাইওভার। ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ করা হয় তিনটি ভাগে। প্রথমাংশ তেজগাঁও-সাতরাস্তা থেকে মগবাজার মোড় হয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল। এ অংশটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৫৫৫ কিলোমিটার। এই অংশটি ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ফ্লাইওভারটির উদ্বোধন করেছিলেন। এর সঙ্গে এফডিসি থেকে সোনারগাঁও রেলক্রসিং পর্যন্ত বর্ধিতাংশ রয়েছে। এটি যানচলাচলের জন্য ২০১৭ সালের ১৭ মে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

ফ্লাইওভারটি দ্বিতীয় অংশ হলো বাংলামোটর থেকে মগবাজার মোড় হয়ে মৌচাক পর্যন্ত। এর দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ২০৮ কিলোমিটার। এই অংশটি যানচলাচলের জন্য ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সর্বশেষ তৃতীয় অংশটি হচ্ছে শান্তিনগর-রাজারবাগ-মালিবাগ-রামপুরা। এ অংশটির দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৯৩৭ কিলোমিটার। ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন। এ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পুরো ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। ফ্লাইওভারটি ৮ দশমিক ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ তিন তলাবিশিষ্ট। চার লেনের এই ফ্লাইওভারটি ১০ মাত্রার ভ‚মিকম্প সহনশীল। ১ হাজার ২১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এর প্রতি মিটারে খরচ হয়েছে ১৩ লাখ টাকা।

ঢাকাটাইমস/৫সেপ্টেম্বর/কারই/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :