লেগুনা বন্ধ, লেগুনা চলছে

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:১৩ | প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:৫৬

রাজধানীতে লেগুনা বন্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঘোষণার পরদিন নগরীতে বেশ কিছু রুটে লেগুনা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে কিছু রুটে আগের মতোই চলছে যানবাহনগুলো, যদিও সংখ্যায় কম।

পুলিশের এই ঘোষণায় চালক এবং যাত্রীরা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। চালক-শ্রমিকরা বলছেন, এত টাকা খরচ করে গাড়ি নামিয়েছেন, রুট পারমিটও নিয়েছেন। আর এটা তাদের জীবিকার উৎস। বন্ধ হয়ে গেলে কী করে খাবেন, সেই প্রশ্ন তুলছেন।

অন্যদিকে যাত্রীরা পুলিশের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলছেন, এখন অতিরিক্ত টাকা দিয়ে রিকশা বা অন্য বাহনে চললে সে অর্থ কে দেবে।

মঙ্গলবার ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সংবাদ সম্মেলন করে শহরে লেগুনা বন্ধ করে দেয়ার কথা জানান। বলেন, ‘সড়কে বিশৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনার কারণ লেগুনা। তাই এখন থেকে শহরের কোথাও এই গাড়িগুলো চলতে দেয়া হবে না। এতদিন যেসব লেগুনা চলছে, তার কোনও রুট পারমিট নেই। সব অবৈধভাবে চলছে, কারও কোনও অনুমতি নেই।’

পুলিশের এই ঘোষণায় তাৎক্ষণিকভাবেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে। কারণ, নগরীর বেশ কিছু এলাকা আছে যেখানে যাত্রীরা চলাচলের জন্য প্রধানত লেগুনা ও হিউম্যান হলারের ওপর নির্ভর করেন। যেমন ফার্মগেট থেকে জিগাতলা, ফার্মগেট থেকে নিউমার্কেট, ফার্মগেট থেকে মোহাম্মদপুর, মোহাম্মদপুর থেকে জিগাতলা, মোহাম্মদপুর রিং রোড থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট থেকে তেজগাঁও হয়ে নাখালপাড়া, মিরপুর-২ থেকে আগারগাঁও হয়ে ফার্মগেট, গুলিস্তান থেকে বাসাবো, মুগদা, মান্ডা, লিখগাঁও প্রভৃতি। এসব রুটে বাস সেবা নেই বা থাকলেও খুবই সীমিত।

পুলিশের ঘোষণার পরদিন মোহাম্মদপুর রিং রোড থেকে ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ফার্মগেট রুটের লেগুনা চলাচল বন্ধ দেখা গেছে। দেখা মেলেনি জিগাতলা থেকে ফার্মগেটমুখী লেগুনারও।

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সড়কে চলাচলকারী লেগুনা মালিক বাচ্চু বলেন, বেড়িবাঁধ রুটে আপাতত লেগুনা চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এই রুটে এসব যানবাহন চলবে।

বাচ্চুর দাবি, ‘লেগুনা সিটিতে বন্ধের কথা বলা হইছে। বেড়িবাঁধ সিটির বাইরে।’

তবে ঢাকা উদ্যান থেকে শ্যামলী, শিয়া মসজিদ থেকে শ্যামলী রুটগুলোতে আর মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ সড়কে সীমিত পর্যায়ে লেগুনা চলাচল করতে দেখা গেছে।

নগরীর বিভিন্ন রুটে এই যানবাহনগুলো চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে সংখ্যায় কম। আর এ কারণে যাত্রীচাপ তুলনামূলক বেশি আর তারা গাড়িতে উঠতেই গলদঘর্ম। আর এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটিকে লেগুনার চলাচলে বাধা দিতে দেখা যায়নি।

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া মিরপুর ১ নম্বর ও মিরপুর ১০ নম্বর রুটের লেগুনাও চলছি। যদিও যাত্রীর চাপের তুলনায় লেগুনার সংখ্যা কম ছিল এই রুটটিতে।

গুটি কয়েক লেগুনা দিয়ে কিছুদিন আগে লেগুনা রুট চালু হয়েছে আটিবাজার থেকে নিউমার্কেট। সকাল থেকে সড়কে দেখা গেছে এই রুটের প্রায় প্রতিটি লেগুনা।

মোহাম্মদপুর থেকে ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোড হয়ে লেগুনা চলাচল করছে জিগাতলা পর্যন্ত। জায়গায় জায়গায় পুলিশ তল্লাশি চৌকি বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি করলেও কোনো লেগুনাকে আটকাতে দেখা যায়নি।

চালকরা জানান, গাড়ির কাগজপত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স যাদের আছে, কেবল তারাই লেগুনা নিয়ে বের হয়েছেন।

পুলিশের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ একজন চালক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমগো লাইনের সব গাড়ি নতুন। সবডির কাগজ ঠিক আছে। আমগো অরজিনাল লাইসেন্স আছে। গাড়ি চালামু না ক্যান?’

‘কইলেই গাড়ি বন্ধ করুম নাকি? লাইন তো সরকাররেই ট্যাকা দিয়া নেওয়া লাগছে। আমরা কি লাইসেন্স ঘরে বইয়া বানাইছি? টাকা দেই নাই? এহন কইলেই অইব গাড়ি বন্ধ?’

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনায় যেটা আছে সেটা হল রাজধানীর প্রধান সড়কের যেখানে বাস চলাচল করে সেখানে লেগুনা চলাচল করতে দেওয়া হবে না। তাদেরকে আমরা অন্যান্য রোডে ঢুকিয়ে দেব। আর অবৈধ যেসব লেগুনা আছে সেগুলো রাস্তায় চলবে না।’

ঢাকাটাইমস/০৫সেপ্টেম্বর/কারই/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজধানী এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :