ফরিদপুর কলেজ এলজিআরডি মন্ত্রীর নামে

সাজ্জাদ বাবু, ফরিদপুর থেকে
| আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২৩:০৭ | প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২৩:০৩

ফরিদপুরের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফরিদপুর মহাবিদ্যালয়ের নাম পাল্টে ‘ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজ’ করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের সুপারিশের আলোকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাছিমা খানম সাক্ষরিত এক আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।

১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটিতে শুরুতে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যযন্ত পড়ানো হতো। তবে বর্তমান সরকারের আমলে ২০১১ সালের এপ্রিলে সেখানে স্নাতক এবং চলতি বছর স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স কোর্স চালু হয়, যদিও এখনও ছাত্র ভর্তি শুরু হয়নি।

শুরুতে সমাজবিজ্ঞান ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক কোর্স চালু হয় আর পরে ব্যবস্থাপনা, সমাজকর্ম ও ইতিহাস বিভাগে চালু হয় এই কোর্স।

কলেজটিতে স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স কোর্সে এখনও ছাত্র ভর্তি শুরু হয়নি। হিসাব বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র ভর্তি হবে।

কলেজের ফেসবুক পেজে থাকা নম্বরে যোগাযোগ করা হলে একজন বলেন, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের বাসার পাশেই আমাদের কলেজ। তার নামে নামকরণ হওয়ায় এর উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি।’

‘আমাদের চাওয়া সরকারি হলে ভালো হয়। রাজেন্দ্র কলেজ আছে, সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ আছে। তারপরও আমাদের চাওয়া আছে। মন্ত্রী মহোদয় নিশ্চয় এটা দেখবেন।’

এবিষয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেল বলেন, ‘মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের প্রতি ফরিদপুরবাসীর অকুণ্ঠ ভালবাসার ফলশ্রুতিতে কলেজটির নাম পরিবর্তিত হয়েছে। ফরিদপুর প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এর ফলে কলেজটি শিক্ষার মানসহ সকল দিকে আরো এগিয়ে যাবে।’

ফরিদপুরের বিশিষ্ট্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর মোহাম্মদ শাহজাহান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নামে কলেজটির নামকরণ করায় কলেজটি প্রাণ ফিরে পেলো। আর সবচেয়ে বড় বিষয়, প্রতিটা মানুষরে ভালোকর্মের কিছু প্রতিদান দিতে হয়। ফরিদপুরবাসীর অভিভাবক ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এটা প্রাপ্য ছিল। এটা খুবই খুশির খবর।’

অ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামী বলেন, আমাদের অভিভাবক মাননীয় মন্ত্রীর নামে কলেজটির নামকরণ হওয়ায় কি যে খুশি হয়েছি তা বলে বোঝানো যাবে না। ফরিদপুরবাসী হিসেবে আমরা আনন্দিত। এই কলেজের নামফলকে আজীবন তিনি আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।

ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ সামিম বলেন, ফরিদপুরের ছাত্র সমাজের প্রানের দাবি আজ পূরণ হয়েছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আগামী দিনে এই কলেজটি দেশের অন্যতম বিদ্যাপিঠ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ড. বিমল কুমার বিশ্বাস বলেন, এর আগে মাননীয় মন্ত্রী মহদয় এই কলেজের সভাপতি ছিলেন। তিনি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে কলেজের অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়া তার নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ হওয়ায় ফরিদপুরবাসীর পাশাপাশি কলেজ কর্তৃপক্ষ আমরা আনন্দিত। আমরা আশা রাখি এখন কলেজের উন্নয়নের কাজ আরো সহজ হবে। এতে এই অঞ্চেলের শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক ও মানগত শিক্ষার দ্বার উন্মোচন হবে।

ফরিদপুর শহর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ফরিদপুরকে মানুষ আগে ফকিরপুর বলত। যিনি আজ সেই নাম ঘুচিয়ে দেশের মধ্যে অন্যতম জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি আমাদের প্রাণের মানুষ মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তার নামে এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।

ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম ফোয়াদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর মাননীয় মন্ত্রী ফরিদপুরকে শুধু দিয়েই গেছেন। এই নামকরণের মাধ্যমে তার কিঞ্চিৎ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে। ফরিদপুরবাসি আজ গর্বিত তার মতো একজন মাহান মানুষের নামে এই কলেজটি নামকরণ করায়।

ফরিদপুরের জেলা আ.লীগ সভাপতি অ্যাড সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, আমি আজ অত্যন্ত আনন্দিত। যে মানুষটি দিনরাত ফরিদপুরের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে চলেছেন তার নামে একটি প্রতিষ্ঠান আগেই হওয়া উচিত ছিল। আমি এই কলেজের একজন পরিচালনা পরিষদের সদস্য হয়ে গর্ববোধ করছি।

এ বিষয়ে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ মোশারফ আলি বলে, এ নামকরণ ছিল সময়ের দাবি। আমরা অত্যন্ত আন্দনিত যে ফরিদপুরের উন্নয়নের পুরোধা মাননীয় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নামে কলেজটির নামকরণ হয়েছে।

ফরিদপুর জেলার অবকাঠামো, শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, ফরিদপুর মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে মন্ত্রী এই কলেজের অভূতপূর্ণ উন্নয়ন করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে ফরিদপুরবাসী মন্ত্রী মহোদয়কে উন্নয়নের রূপকার ও কর্মবীর খেতাবে ভূষিত করেছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, এই ফরিদপুরবাসী প্রাণের দাবি ছিল ফরিদপুরের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যেন তার নামে নামকরণ করা হয়। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার প্রেক্ষিতে ফরিদপুর মহাবিদ্যালয় কলেজটির নাম পরিবর্তন করে ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজ নাম করণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করছি যে এমন একজন মানুষের নামে কলেজটির নাম করণ হলো যিনি শুধু ফরিদপুরের নন বাংলাদেশের গর্ব। আমি বিশ্বাস করি ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কলেজ দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হবে।

ঢাকাটাইমস/০৫সেপ্টেম্বর/ইএস/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :