বাগেরহাটে নছিমন চালক হত্যায় ৪ জনের ফাঁসি
বাগেরহাটে মো. মামুন মোল্লা (২০) নামের এক নছিমন চালককে হত্যার দায়ে চারজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্য একজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় মো. সোহাগ ফকির ও ইব্রাহিম মোল্লা নামের দুজন আসামি আদালতে উপস্থিতিতে ছিলেন। বাকিরা পলাতক।
নিহত মো. মামুন মোল্লা বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ মোল্লার ছেলে।
ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, বাগেরহাটের সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ খানপুর গ্রামের মোহম্মদ আলীর ছেলে মিজান (৩০), একই উপজেলার ভট্ট বালিয়াঘাটা গ্রামের প্রয়াত আব্দুল ফকিরের ছেলে মো. সোহাগ ফকির (২৯), একই গ্রামের আবাসন কেন্দ্রের গোলাম মোস্তফা ওরফে খান সাহেবের ছেলে ইব্রাহিম মোল্লা (২৮) এবং একই গ্রামের জুনু ওরফে ইসমাইল মোল্লা (৩৫)।দুই বছরের কারাদণ্ড পাওয়া আসামি মো. জয়নাল আবেদিনের বাড়ি খুলনার দাকোপ উপজেলার চালনা গ্রামে।
মামলার নথির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর নছিমন চালক মো. মামুন মোল্লাকে খুলনায় যাওয়ার জন্য স্থানীয় চার যুবক ভাড়া করেন। তাদের নিয়ে মামুন খুলনার উদ্দেশে রওনা হলে পথিমধ্যে ওই চার যুবক খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকার ফাঁকা জায়গায় নিয়ে তাকে পিটিয়ে ও শ^াসরোধ করে হত্যা করে রাস্তার পাশে একটি ডোবার কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রেখে নছিমনটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে মামুন নিখোঁজ ছিলেন।
ছেলে মামুন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার দুই দিন পর তার বাবা আব্দুল্লাহ মোল্লা বাগেরহাট মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর নিহতের বাবা জানতে পারেন স্থানীয় চার যুবকের কাছ থেকে নছিমনটি কেনেন খুলনার দাকোপ উপজেলার চালনা গ্রামের জয়নাল আবেদিন। এরপর ২০১৪ সালের ১ জুলাই বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩ণ্ড৪ জনকে আসামি করে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন তিনি।এই হত্যা মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ তদন্তে নেমে সোহাগ ফকির ও ইব্রাহিম মোল্লাকে নারায়ণগঞ্জের একটি বস্তি থেকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নছিমন চালক মামুনকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় তারা।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক আমির হোসেন তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৮ ডিসেম্বর পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ১২ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চারজনকে ফাঁসি এবং একজনকে দুই বছরের দণ্ড দেন।
(ঢাকাটাইমস/৬সেপ্টেম্বর/মোআ)