হাসপাতালে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রসূতিকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ

বাগেরহাট প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:১৮

বাগেরহাট সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসকের হাতে দুই প্রসূতি মা ও এক স্বজন প্রহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রবিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি রোগীকে দেখতে এসে প্রসূতি বিভাগের জেষ্ঠ্য (সিনিয়র কনস্যালটেন্ট) চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ ওই রোগী ও স্বজনের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে গায়ে হাত তোলেন। এই ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীর স্বজনরা ওই চিকিৎসকের আচরণে ক্ষুব্ধ হন এবং তারা বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান।

পরে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মণ্ডল ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

গাইনি বিভাগের ওই চিকিৎসক কেন রোগী ও রোগীর স্বজনের গায়ে হাত তুলেছেন- তা জানাতে কারণদর্শাতে নোটিশ দিয়েছেন সিভিল সার্জন।

ঘটনার পর গাইনি বিভাগের চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ হাসপাতাল ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি ফোন রিসিভ না করায় তা বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মারধরের শিকার রোগীরা হলেন, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চমালা গ্রামের জাহিদুল বাবুর স্ত্রী ফাতেমা বেগম, একই উপজেলার গাজীরঘাট গ্রামের আলম শেখের স্ত্রী রোজিনা বেগম এবং রোজিনার মা (রোগীর স্বজন) নাছিমা বেগম।

নাছিমা বেগম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, রবিবার ভোরে বাড়ি থেকে সন্তান প্রসবের জন্য আমার মেয়েকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। তখন চিকিৎসক আমার মেয়েকে দেখে ভর্তি করে নেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক আবুল আজাদ আসেন নিয়মিত রাউন্ড দিতে। তখন আমার মেয়ের প্রসব বেদনা শুরু হয়। সেসময় মেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করছিল। এসময় তিনি এসে আমাকে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যেতে বললে আমার বেরোতে একটু দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমাকে দুটি চড় মারেন। আমি চড় খেয়ে ঘুরে পড়ে যাই। তিনি আমাকে চিকিৎসা না দিয়ে উল্টে আমার সন্তান সম্ভবা মেয়েকেও মাথায় চড় মারেন।

প্রসূতি রোজিনা বেগম বলেন, সন্তান প্রসবের জন্য হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের হাতে মার খেলাম। এর থেকে কষ্টের আর কি আছে। আমি এই ডাক্তারের বিচার চাই।

হাসপাতালে ভর্তি অন্য প্রসূতি ফাতেমা বেগম অভিযোগ করেন, রোজিনাকে মারধর করে চিকিৎসক আমার বেডে আসেন। তখন আমাকে বলে এ তোর তো শনিবার যাওয়ার কথা, তুই যাসনি কেন। এ বলেই আমার মাথায় থাপ্পড় দেন।

গাইনি ওয়ার্ডের অন্য আরেক রোগী মাহিনুর বেগম বলেন, ডাক্তার এভাবে রোগীকে মারধর করে তা আগে কখনও শুনিনি বা দেখিনি। সকালে এ ডাক্তার মারলেন। এর আগে শনিবার রাতে আলট্রাসোনো করার সময় ডাক্তার আমার সাথে খুবই খারাপ ব্যবহার করেন। গাইনি ওয়ার্ডে একজন নারী চিকিৎসক দিলে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যেত বলে মত দেন ওই রোগী।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. অরুণ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে আমার অফিস কক্ষে ছিলাম। খবর পেয়ে আমি প্রথমে ওয়ার্ড মাস্টারকে গাইনি ওয়ার্ডে পাঠাই। পরে মারধরের শিকার রোগীরা এসে আমার কাছে অভিযোগ করেন। মারধরের শিকার রোগী ও তার স্বজনের জবানবন্দি নিয়েছি। রোগীদের গায়ে হাত তোলার ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনস্যালটেন্ট চিকিৎসক আবুল কালাম আজাদ রোগী ও তার স্বজনের গায়ে হাত তুলে অপরাধ করেছেন। আমি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। তিনি কেন রোগী ও তার স্বজনের গায়ে হাত তুলেছেন তা জানাতে কারণ দর্শাতে নোটিশ দিয়েছি। আগামী তিন কাযর্ দিবসের মধ্যে তা লিখিতভাবে জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৯সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :