সেফ হোমের পলাতক পাঁচ নিবাসী এখনো উদ্ধার হয়নি

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৪৪

গাজীপুরের মোগরখাল এলাকায় নারী ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র থেকে নিবাসী পালিয়ে যাবার পর ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে দুই দিন পার হলেও উদ্ধার হয়নি অপর পলাতক পাঁচ নিবাসী।

যদিও জেলা প্রশাসন বলছে, পলাতকদের মধ্যে সর্বশেষ দুইজনের অবস্থান শনাক্ত হয়েছে। তবে তাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। আর আবাসন সমস্যা, বিনোদনের অভাব ও বাজেট ঘাটতির কারণে সেফ হোমের নিবাসীরা পালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে তদন্ত কমিটি। এজন্য কয়েক দফা সুপারিশও করেছে তদন্ত দল। বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

জানা গেছে, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত গাজীপুরের মোগর খালের এই নিবাসে থাকেন ৩৪ জন নিবাসী।

গেল শুক্রবার রাতে নিবাসের রুমের জানালার গ্রিল কেটে কেন্দ্র থেকে ১৭ নিবাসী পালিয়ে যায়। ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুলিশ অভিযান শুরু করে। পরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে আটজন এবং বাকিদের গাজীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর দুদিন পার হলেও অপর পাঁচজন নিবাসীকে উদ্ধার করা যায়নি।

জেলা প্রশাসন থেকে দাবি করা হয়, পলাতক পাঁচ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে দুইজনের অবস্থান শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া অপর পলাতকদের মধ্যে দুইজন বাক প্রতিবন্ধী রয়েছেন। সবাইকে দ্রুত সময়ে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে বলে দাবি তাদের।

পালিয়ে যাওয়া নিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বছরের পর বছর তারা চার দেয়ালে বন্দি। এখানে ফ্যান নেই, আবাসন নিয়ে রয়েছে সমস্যা। তাই অপর মেয়েদের পরামর্শে তারা পালিয়ে যান। পরে একটি হোটেলে ওঠেন তারা। হোটেল থেকে পুলিশ ফের তাদের আটক করে সেফ হোমে নিয়ে আসে। তবে এসব নিবাসীদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলতে চাইলে অপারগতা প্রকাশ করে নিবাসের কর্তৃপক্ষ। এসময় কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে নিবাসীরা তাদের এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

কয়েকজন নিবাসী বলেন, এখানে কেউ তিন বছর, কেউ চার বছর ধরে আছেন। নিরাপরাধ দাবি করে তারা বলেন, মামলা না থাকলেও বাইরের জগত থেকে তারা বিচ্ছিন্ন। তাই স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার জন্য কয়েকজন নিবাসীর পরামর্শে জানালার গ্রিল ভেঙে পালিয়েছেন তারা।

নিবাসীদের পালিয়ে যাবার ঘটনায় কর্তৃপক্ষের কোন গাফলতি নেই বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির উপ-পরিচালক ফরিদা খানম। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ নিবাসীদের ব্যাপারে সচেতন। তবে ১৭ জন কিভাবে পালাল তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। নিরাপত্তায় এখানে কোন ঘাটতি ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে পর্যাপ্ত পুলিশ প্রটেকশন ছিল। তারা কিন্তু হাইলি প্রটেক্টেড।

এরই মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দিদারে আলম মাকসুদ চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের কাজ শুরু করেছে। এছাড়া মহিলা অধিদপ্তর থেকেও আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে আবাসন সমস্যা, চিত্তবিনোদনের অভাব, বাজেট ঘাটতিসহ বেশ কয়েকটি সমস্যা চিহ্নিত করেছে তদন্ত দল। এগুলো সমাধানে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত দলের প্রধান দিদারে আলম মাকসুদ চৌধুরী।

নারী ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্র থেকে নিবাসী পালিয়ে যাবার ঘটনা এই প্রথম। তাই কেন্দ্রটিতে নিরাপত্তা জোরদারসহ ঘটনা পুনরাবৃত্তি রোধে কাজ করছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।

(ঢাকাটাইমস/৯সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :