মোজাম্মেলকে এবার বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:০৫

চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীকে এবার বিস্ফোরক আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। মামলাটি গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাফরুল থানায় দায়ের করা হয়।

সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মোজাম্মেলকে হাজির করে পুলিশ। পরে তাকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।

১৩ সেপ্টেম্বর তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তাকেও হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।

মোজাম্মেল চৌধুরীর আইনজীবী জায়েদুর রহমান জানান, চাঁদাবাজির মামলার পর মোজাম্মেলকে কাফরুল থানার বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে।

‘গ্রেপ্তার দেখানোর ব্যাপারে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আদালতে বলেছেন, তিনি যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব। যাত্রীদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে কাজ করে আসছেন। তিনি যাতে সংগঠনের হয়ে কাজ না করতে পারেন, সে জন্য আগে মিরপুর থানার চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।’

গত শনিবার (০৮সেপ্টেম্বর) মোজাম্মেলকে মিরপুর থানার চাঁদাবাজির মামলায় পুনরায় পাঁচদিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে মিরপুর থানার পুলিশ। সেখানে মোজাম্মেলকে পেশাদার চাঁদাবাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আদালত পুনরায় রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে সেদিনই তাকে কারাগারে পাঠান।

মোজাম্মেলের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সেদিন আদালতকে বলেন, মামলার বাদীই গণমাধ্যমে বলেছেন, তিনি আসামিকে চেনেনই না। তাহলে মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে মামলা করল কে? এটা সাজানো মামলা।

কথিত চাঁদাবাজির মামলায় গত বুধবার রাতে মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তার করে মিরপুর মডেল থানার পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আদালত সেদিন মোজাম্মেলের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত মঙ্গলবার চাঁদাবাজির এ মামলা করেন কথিত মিরপুর রোড শ্রমিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. দুলাল। তবে দুলাল গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি নেতা নন, কোনো পদ-পদবিও তার নেই। তিনি ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিবহনের লাইনম্যান। দুলাল আরও বলেন, নতুন পরিবহন কোম্পানি খোলার কথা বলে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের মিরপুর শাখার সভাপতি আবদুর রহিম ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন তার স্বাক্ষর নেন। পরে তিনি জানতে পারেন সেই স্বাক্ষরে মামলা করার কথা।

কথিত দুলালের মামলায় বলা হয়, মোজাম্মেল ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে নিজেকে সড়ক পরিবহনের নেতা দাবি করে মিরপুর রোড শ্রমিকের কাছে প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তাঁদের সংগঠনের নামে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করার হুমকি দেন।

দুলাল মামলায় আরও দাবি করেন, গত সোমবার বিকেলে মিরপুরের সনি সিনেমা হলের সামনে মোজাম্মেলের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এ সময় মোজাম্মেল তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা চান। ভয়ে তিনি মোজাম্মেলকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে দেন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক দুর্ঘটনা, বাড়তি বাসভাড়াসহ পরিবহন খাতের নানা অসংগতি নিয়ে কয়েক বছর ধরেই নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। গত দুই ঈদের পরেই দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তির সংখ্যা তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেছিল যাত্রী কল্যাণ সমিতি। পরে গত ১০ জুলাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা প্রতিবেদনকে ভুয়া বলে মন্তব্য করেন।

এদিকে মোজাম্মেল হক চৌধুরীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে সেফ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট অ্যালায়েন্স (স্রোতা) নামের একটি সংগঠন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংঘটনটি বলছে, সড়ক নিরাপত্তা ও যাত্রী কল্যাণ নিয়ে কাজ করায় দুষ্কৃতকারীরা মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মামলা দিয়েছে। যারা সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন, মোজাম্মেল হক চৌধুরীর গ্রেপ্তার তাদের মনোবল ভেঙে দেবে বলেও মনে করছে স্রোতা।

ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আদালত এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :