আনিসুলের পরিবহন পরিকল্পনা দুই বছরে বাস্তবায়ন: খোকন

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৬:৩৪ | আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহনের শৃঙ্খলা আনতে বাস রুট ঢেলে সাজানো ও কোম্পানির মাধ্যমে বাস পরিচালনায় প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক যে যে পরিকল্পনা করেছিলেন, সেটি বাস্তবায়ন করবেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। আর চার হাজার বাস নামানো ও রুট ফ্র্যাঞ্চাইজির এই পরিকল্পনা দুই বছরে বাস্তবায়নের আশা করছেন তিনি।

সোমবার ডিএসসিসির নগর ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলানে এ কথা বলেন সাঈদ খোকন।

গত রবিবার সরকার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে যেখানে ১০ সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে সাঈদ খোকনকে। তিনি বলেন, ‘আমরা উত্তরের প্যানেল মেয়রের কাছে আনিসুল হকের বাস ব্যবস্থা নিয়ে সকল পরিকল্পনা চেয়েছি। আমরা সেই পরিকল্পনা পর্যালোচনা করব। এখানে আমাদেরও কিছু ড্রাফট বা হোমওয়ার্ক রয়েছে, যা সেখানে যুক্ত বা কিছু হয়তো বাদ হবে।’

ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের পরিকল্পনার বিষয়টি সামনে আসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর। ২০১৭ সালের শেষ দিকে মেয়রের মৃত্যুর পর এই পরিকল্পনাটি নিয়ে আর কেউ আগায়নি।

কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে আর এর সুফল কবে মিলবে-জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটি হচ্ছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। টাইম পিরিয়ডটা আসলে আমরা কমিটির আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে যথাসম্ভব দ্রুত করার চেষ্টা করব। আশা করি পারফেক্ট এক পরিকল্পনা পেয়ে যাব। আমাদের প্রথম সভা হবে সেপ্টেম্বরের শেষে।’

‘কমিটি খুব দ্রুত কাজ শুরু করবে। আমি মনে করি, এ কাজ দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়া উচিত। আমরা সেভাবেই কাজ করব ‘

‘প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক সাহেবের সময় এনিয়ে একটি ড্রাফট করাই আছে। এটি আমরা দেখব। কোনোকিছু সংযোজন, পরিমার্জন ও সংশোধন করতে হলে করব।’

দুই বছর বেশি সময় হয়ে যায় কি না- এমন প্রশ্নে খোকন বলেন, ‘আসলে আমাদের এখানে যতগুলো যানবাহনের প্রয়োজন হবে সেটা আনুমানিক সাড়ে চার হাজারের মতো। যা কোম্পানিগুলোর পক্ষে এতো অল্পসময়ে দেয়া সম্ভব হবে না।’

রাজধানীতে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না- এমন প্রশ্নে মেয়র খোকন বলেন, ‘আসলে আমরা গণপরিবহন ব্যবস্থা ও সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে মূলত কাজ করব। প্রাইভেট কারের বিষয়টি এই মুহূর্তে আমাদের পরিকল্পনায় নেই। তবে রাজধানীর রিকশা ব্যবস্থা নিয়ে সরকারি পরিকল্পনা রয়েছে।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এই পরিকল্পনায় কোনো প্রভাব ফেলবে কি না- জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘আমরা আশা করি সে রকম প্রভাব পড়বে না। এ সরকারের অধীনে হলে ভালো হবে বলে আমি মনে করি।’

কমিটির মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে সাঈদ কোন বলেন, ‘আসলে যত কিছুই করি না কেন, যানজট শূন্যের কোটায় নামানো সম্ভব নয়। তবে আমরা কমিটির সকলের সাথে আলোচনা, পর্যালোচনা করে সঠিক উপায়টা বের করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো যেনো যানজট সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়।’

যানজটমুক্ত করা সম্ভব নয়

যত পরিকল্পনাই হোক না কেন, ঢাকা যানজটমুক্ত করা সম্ভব নয়- সাফ জানিয়ে দিলেন মেয়র। বলেন, ‘পৃথিবীর কোন দেশই যানজট মুক্ত নয়। বাংলাদেশ থেকেও বেশি যানজট হয় এমনও আছে। তবে সেসব দেশে আমাদের মতো এতোটা সড়কের মৃত্যু হয় না। সড়কের অনিরাপদের যে ঝুঁকিটা রয়েছে সেটা কিন্তু আমরা দূর করতে পারব।’

ফুটপাত দখলের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মেয়র বলেন, ‘আমরা গুলিস্তান, মতিঝিলসহ ডিএসসিসি থেকে হকারদের উচ্ছেদ করেছিলাম। প্রায় সাত মাস তাদেরকে বসতে দেইনি। কিন্তু ঈদে তাদের আয়ের জন্য একটু ছাড় দেই। এখনও তারা সেগুলো দখলে রেখেছে। এতদিন সেভাবে আর অভিযান পরিচালনা করা না হলেও, সড়কে নিরাপত্তার জন্য শিগগির এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ 

(ঢাকাটাইমস/১০সেপ্টেম্বর/এএকে/ডব্লিউবি)