ফেনী-২ পুনরুদ্ধার করতে চান বিএনপির মজনু

আরিফ আজম, ফেনী
 | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:০৯

রফিকুল আলম মজনু। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি। রাজধানীর রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারির এ যুবনেতা এখন ফেনীর বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়। নিজ জেলা সদরের আসন (ফেনী-২) থেকে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহী তিনি। পৈতৃক বাড়ি সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের সাতসতি গ্রামে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের নিজ জেলার এই আসনটি ফেনী পৌরসভা ও সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ৯১ সাল থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি। ৯৬ সালের নির্বাচনে সাংসদ ছিলেন আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবদীন হাজারী। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী।

আসছে নির্বাচনে বিএনপি থেকে অন্যান্যের মধ্যে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপি ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার রানুর নাম আলোচনায় রয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দলের রাজধানীকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠনে জড়িত থাকা মজনু ইদানীং জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। জেলার বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের কমিটিও হচ্ছে তাকে ঘিরে। দলের ভ্যানগার্ড খ্যাত যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের কমিটি গঠনেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব তার। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এ নেতার কাছে যাতায়াত জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে এই আসনে কে প্রার্থী হবেন এমন আভাস না পাওয়া গেলেও একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। সম্প্রতি ফেনী শহরে যুবদল-ছাত্রদলের সৌজন্যে মজনুর নামে পোস্টার সাঁটিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে সেই মেসেজ জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।

রাজধানী ছেড়ে এখন জেলা রাজনীতিতে কেন সক্রিয় হচ্ছেন মজনু? তার ঘনিষ্ঠজনরা জানান, ছাত্রাবস্থা থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ঘিরে রাজনীতি করে আসছেন মজনু। কিন্তু সেখানকার দুটি আসনে দলের কেন্দ্রীয় দুই নেতা ঢাকা-১০ আসনে মির্জা আব্বাস ও ঢাকা-৯ আসনে হাবিব উন নবী খান সোহেল ধানের শীষের মনোনয়ন পাবেন তা অনেকটা নিশ্চিত। এ জন্য রফিকুল আলম মজনু তার নিজ জেলার আসনে মনোনয়ন পেতে এখন থেকে কাজ করছেন।

এর আগে কখনো কোনো নির্বাচনে নিজে প্রার্থী না হলেও নির্বাচনী অভিজ্ঞতা রয়েছে মজনুর। ছাত্ররাজনীতি থেকে বিভিন্ন সময় মির্জা আব্বাসের নির্বাচনী এজেন্ট ও সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন তিনি।

ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন মজনু। নটর ডেম কলেজে পড়াকালীন তৎকালীন ৩৪ নং ওয়ার্ড (শাহজাহানপুর) ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৩ থেকে ৯৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন মতিঝিল থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ২০০১ সালে মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক, ২০০৩ সালে সাধারণ সম্পাদক ও ২০০৭ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতিও হন তিনি।

এর আগে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও সাইফুল আলম নীরবের নেতৃত্বাধীন যুবদলের মহানগর দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন মজনু।

ঢাকার রাজপথে দলীয় কর্মসূচি ও আন্দোলন-সংগ্রামের সামনের সারির এই নেতা বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে শতাধিক মামলার শিকার ও পাঁচবার কারাবরণ করেন।

নেতাকর্মীদের অনেকে জানান, ফেনীর হারানো আসন পুনরুদ্ধার করার জন্য আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। এখন মাঠ গোছাচ্ছেন। বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটিও সাজিয়েছেন সেভাবে। নির্বাচনে জয়ী হতে মজনুর মতো তরুণ নেতাদের প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

তারা আরও জানান, দলের আন্দোলন-সংগ্রাম আর নেতাকর্মীদের পাশে থাকেন এমন নেতারা মনোনয়ন পেলে তৃণমূল উজ্জীবিত হবে।

এ প্রসঙ্গে জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্লাহ চৌধুরী বরাত জানান, প্রত্যেক রাজনীতিবিদের একটা প্রত্যাশা থাকে। সে ক্ষেত্রে রফিকুল আলম মজনু তৃণমূল থেকে রাজধানীতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ফেনীর রাজনীতিতেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। তার প্রতি তরুণ নেতাকর্মীদের আস্থা রয়েছে। দল তাকে মনোনয়ন দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়ে মজনু ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি স্কুলজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। ছেলেবেলা থেকে রাজধানীতে অবস্থান করলেও ফেনীর সঙ্গে আমার নাড়ির সম্পর্ক।’ তিনি নির্বাচিত হয়ে এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়াতে চান বলে জানান মজনু।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় নির্বাচন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা