সর্বোত্তম ত্যাগ স্বীকারে প্রয়োজনে আসন ভাগাভাগি: দুদু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:২১ | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:০৫

সরকারবিরোধী সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে জোট গঠন করার কথা জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বৃহত্তম ঐক্য গঠনের জন্য সর্বোত্তম ত্যাগ স্বীকারে প্রয়োজনে দলটি আসন ভাগাভাগিও করবে বলে জানান তিনি।

গতকাল সোমবার রাতে বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের সম্পাদকীয় অনুষ্ঠান ‘২৪ ঘন্টা’তে অংশ নিয়ে এই অভিমত তুলে ধরেন দুদু।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছে বিএনপি। ২০টি দল নিয়ে গড়া মোর্চার পাশাপাশি তৃতীয় শক্তি হওয়ার ঘোষণা দিয়ে কাজ করা যুক্তফ্রন্ট আর গণফোরাম নেতা কামাল হোসেনের সঙ্গে ঐক্যের চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি যাকে ‘জাতীয় ঐক্য’ বলছে দলটি।

এই ঐক্যের জন্য একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। তবে ড. কামাল এবং যু্ক্তফ্রন্ট নেতাদের নানা শর্তে আটকে আছে এই প্রক্রিয়া। কামাল হোসেন বিএনপিকে দেড় যুগের মিত্র জামায়াতকে ছাড় দেয়ার কথা বলেছেন, যুক্তফ্রন্ট চাইছে তিন শ আসনের মধ্যে ১৫০ আসন। আবার ক্ষমতায় যেতে পারলে দুই বছর দেশ চালাতে দিতে হবে তাদের।

গত শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে ছাড় দেয়ার বিষয়ে তার দলের সিদ্ধান্তের কথা জানান। একই দিন বিএনপির শরিক দল এলডিপি তার এমন বক্তব্যে আপত্তি জানালেও রবিবার রাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে ছাড় দেয়ার বিষয়ে বিএনপির পরিকল্পনায় সায় দেয় শরিকরা।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিরোধী যেসব রাজনৈতিক দল আছে সেগুলোকে নিয়ে বড় একটি রাজনৈতিক জোট করার চিন্তা ভাবনা চলছে।’

মীর আহসানের সঞ্চালনায় ‘ভোটের সমীকরণে রাজনীতি’ নিয়ে আয়োজিত টক শোতে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট, বামফ্রন্টসহ সকল বিরোধী দলগুলোকে এক প্লাটফর্মে আনতে আমাদের প্রচেষ্টা চলছে। সবগুলো বিরোধীদলকে যদি আমরা এক প্লাটফর্মে আনতে পারি, আনা সম্ভব হয়, তাহলে হয়তো সরকার বনাম-তাদের একটা প্রার্থীর বিরুদ্ধে জোটের একটা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। আর সেটা যদি সম্ভব না হয় তাহলে যার যার অবস্থান থেকে আমরা ন্যুনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে এক জায়গায় হতে পারি কি না সেটা ভেবে দেখবো।’

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপি লড়াই করছে এমনটা জানিয়ে দুদু বলেন, ‘আমরা একটা ভালো নির্বাচনের জন্য লড়াইটা করছি, যাতে মানুষ তার ভোট দিতে পারে। আমরা ভোট আমি দিবো যাকে খুশি তাকে দিবো। এই পরিস্থিতি তৈরির জন্য আমরা লড়াই করছি।’

‘আমরা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন, এবং অন্যান্য নির্বাচন, ২০১৪ সালের নির্বাচনকে মাথায় রেখে আগামী দিনগুলোতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বৃহত্তম ঐক্য জোট বা সম্মিলিত বিরোধী দল এটাই ভাবনা বিএনপির। যদিও বামফ্রন্ট এবং যুক্তফ্রন্টের দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু আমাদের আসু কর্মসূচি হওয়া উচিত নির্বাচনকে ঘিরে। বিশেষ করে সরকারের দুর্নীতি, বাংলাদেশের গণতন্ত্রহীনতা-এ বিষয়গুলো আমরা যদি তাৎক্ষণিক মোকাবিলা করতে চাই তবে কী করে সম্ভব। সে জায়গাগুলো আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’

‘আমাদের দল থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে-বৃহত্তম ঐক্য গঠনের জন্য সর্বোত্তম ত্যাগ স্বীকার করতে বিএনপিকে প্রস্তুত রাখা। সর্বোত্তম ত্যাগ স্বীকার বলতে প্রয়োজনে বিএনপি আসন ভাগাভাগিও করবে।’ যোগ করেন দুদু।

টক শোতে অংশ নেয়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি বলছে সরকারের দুর্নীতি হয়েছে। আমি বলবো সরকারের দুর্নীতি যদি হয়েই থাকে তবে পদ্মা সেতু আমরা কীভাবে করছি? বিশ্ব ব্যাংক বলেছিল, তারা এখাতে বিনিয়োগ করবে না। এদেশের দালালরা পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধের চেষ্টা করেছিল। তারাও পারেনি। উপরোন্তু যারা দালালি করেছে তারাই দোষী সাব্যস্থ হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি ক্ষমতায় ফেরার জন্য জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারার জন্য বাসে আগুন দিয়েছে। রেললাইন উপড়ে ফেলেছে। নানাভাবে সরকারি সম্পদ ও মানুষের ক্ষতি করেছে।’

সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা কমিউনিস্ট পার্টির উদ্যোগে বামরা মিলে একটা জোট করেছি। সিপিবি, বাসদ আগেই জোট ছিল। নাম ছিল গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। আমরা কিন্তু বিগত এক বছর ধরে কতগুলো পয়েন্ট ধরে আন্দোলন করছিলাম। সেই আন্দোলনের কম্বিনেশন নতুন জোট। যেটা আমাদের দীর্ঘদিনের লড়াই। প্রাথমিকভাবে পাঁচ দফাকে সামনে রেখে জোট করলেও আমরা নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট করিনি। আমরা মনে করি ক্ষমতায় আমরা যেতে চাই কেন, আমাদের যে নীতি আছে সেটা বাস্তবায়নের জন্য। কিন্তু আমরা এটা মনে করি না যে, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নীতি বিবর্জিত হয়ে যেতে হবে। কিংবা সুবিধা কায়েমের জন্য নিজেদের বিসর্জন দিতে হবে, আমরা এই ধারায় নেই। আমরা একই সঙ্গে নীতির পরিবর্তন চাই এবং গদির পরিবর্তনও চাই। কিন্তু আমরা বিএনপির অতীতও দেখেছি। তাই আমরা বিএনপির সঙ্গেও জোটে যেতে চাই না। একই সঙ্গে আমরা আওয়ামী লীগের জোটেও যেতে চাই না। আমরা বলছি যে নির্বাচনে অংশ নেবোই। যদি নির্বাচনের নামে প্রহসন হয় তবে আমরা সেই নির্বাচনে অংশ নেবো না।

(ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এজেড/এমআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

আওয়ামী লীগ নিজেদের নৌকা নিজেরাই ডুবিয়েছে: মঈন খান

দেশের মানুষকে আর বোকা বানানো যাবে না: সালাম

নির্বাচনের পর বিরোধী দলগুলোর ওপর নানা কায়দায় নির্যাতন চালাচ্ছে আ.লীগ: মির্জা ফখরুল

বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী জনগণকে সরকার বন্দি করে রেখেছে: রিজভী 

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারায় বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে আ.লীগের ‘মানা’

মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিএনপি নেতা হাবিব কারাগারে

উপজেলা নির্বাচন সরকারের আরেকটা ‘ভাঁওতাবাজি': আমীর খসরু

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :