আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী

ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করতে তারেকের নির্দেশে গ্রেনেড হামলা

প্রকাশ | ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:৪৬ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:০৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম আদালতে তুলে ধরেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এই মামলায় রাষ্ট্র এবং আসামিপক্ষের যু্ক্তি উপস্থাপন শেষে আইনি যুক্তিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল আদালতে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার জন্য এ হামলা চালানো হয়েছে।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজল প্রায় ৩ ঘণ্টা যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী আব্দুল্লাহ ভুইয়া যুক্তি উপস্থাপন শুরু করে‌ন। বেলা তিনটা ৩টা পর্যন্ত আইনি যুক্তি গ্রহণের পর বুধবার পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলত‌বি করেন বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন বেলা

‌মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘তালেবান স্টাইলে আর্জেস গ্রেনেড দিয়ে হাওয়া ভবন ও তারেক রহমানের নির্দেশনায় হামলা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে শেখ রাসেলকে যে কারণে হত্যা করা হয়েছিল একই কারণে ২১ আগস্ট গ্রে‌নেড হামলা করা হয়।’ 

‘বাংলাদেশকে পা‌কিস্তান বানানোর জন্য, নৈরাজ্যকর রাষ্ট্র তৈ‌রি করতে চায়।  শেখ হা‌সিনা বেঁচে থাক‌লে ‌সেটা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে তি‌নি বেঁচে গেছেন।’

বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টায় এই হামলা হয়। এতে ২৩ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আহত হয় কয়েকশ

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এই মামলায় হামলাকারীদেরবে বাঁচিয়ে দিয়ে নির্দোষ জজ মিয়াকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এই বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। সে সময় জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২২ জনের বিচার শুরু হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অধিকতর তদন্তে তারেক রহমান, জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আরও ৩০ জনকে আসামি করা হয়।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ২২ কোটি টাকা জরিমানার রায় নিয়ে তারেক রহমান এখন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তাকে পলাতক দেখিয়ে এই মামলার বিচার চলছে আর তার মৃত্যুদণ্ড দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

হামলার ১৪ বছর পর মামলাটি রায়ের পর্যায়ে রয়েছে। আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘মামলাটিতে বিচারের জন্য যে ক্রন্দন, সেটা শেষ হতে চলেছে। আমরা মনে করেছিলাম এ ঘটনার বিচার দেখে যেতে পারব না। কিন্তু মামলা‌টি শেষ পর্যায়ে এসেছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই। আশা ক‌রি, ন্যায়বিচার প্র‌তিষ্ঠা হবে।’

‘এই  মামলায় আপ‌নি প্রত্যেক আসা‌মির পারসনাল ইন্টারেস্ট পাবেন। আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন, কেউ এসপি হবেন, কেউ মন্ত্রী হবেন। প্রত্যেকের পারসনাল ইন্টারেস্ট আছে। কাউকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।’

‘শেখ হা‌সিনা মানে একটা দেশ, একটা পতাকা। এখানে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হয়েছে।  রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল শেখ হাসিনাকে রক্ষা করা। কিন্তু তারা তা করেননি। তাদের কারও নম্রতা, ভদ্রতা ছিল না। তারা সবাই ক‌ঠিন শা‌স্তি ডিজার্ভ করে।’

ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/আরজেড/ডব্লিউবি