গুজব ছড়াতে জামায়াতের ৩০০ পেজ: তারানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:৪৪ | প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:২৪

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী দল জামায়াতে ইসলামি ৩০০টির বেশি ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে বলে জানিয়েছেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গুজব: গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

স্কুল শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন চলাকালীন গত ৪ আগস্ট রাজধানীর জিগাতলায় শিক্ষার্থী নিহত ও ছাত্রীধর্ষণের গুজব ছড়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে সেখানে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শির্ক্ষার্থীরা। সংঘর্ষের মাঝেই ধানমন্ডির আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা হয়। সংঘর্ষে আহত হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। পরে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আটক করা হয় অভিনেত্রী নওশাবা,কফিশপ মালিক ফারিয়া মাহজাবিনসহ বেশ কয়েকজনকে। এরপরেই সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে গুজব ছড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক করা হয় সবাইকে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিছু ব্যক্তি বলে বেড়াচ্ছি আমরা নাকি সোশ্যাল মিডিয়াকে কণ্ঠরোধ করেছি। না, এটা করার ইচ্ছে আমাদের নেই। গুজব কারা ছড়াচ্ছে সেটা সবাই এখন জানে। ৩০০ এর অধিক গুজবমার্কা পেজ জামায়াত পরিচালনা করে এবং সেটা চালানোর জন্য অর্থ আসে লন্ডন থেকে।

এ সময় মন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্যের লেখা কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার বা ক্রেডিট না দেয়ার সমালোচনা করেন।

বলেন, বর্তমানে ফেসবুকে একজন অন্যান্যদের পোস্ট কপি করে নিজের বলে প্রকাশ করে। কিন্তু সে সেটা বুঝে না এতে তার কি পরিমাণে ক্ষতি হচ্ছে। এটা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি। এসব নীতি বর্জিত কাজ ও ভুয়া তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা ঠেকাতে অনলাইন নীতিমালা করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ইতোমধ্য আমাদের অনলাইন নীতিমালা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের জন্য ইমিডিয়েট রেসপন্স টিম গঠন করা হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবের খেলা শেষ করতে মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।

এর আগে গুজব ছড়ানো ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় গুজব রটনাকারীদের শিকারে পরিণত হয়েছি। এটার ফলে সমাজে দ্বন্দ্ব সংঘাত সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গণমাধ্যম আসার আগেও গুজব সৃষ্টির একটা অপসংস্কৃতি ছিল যেটা আমরা ৭১ এ যুদ্ধের সময় উপলব্ধি করতে পেরেছি। ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও পাকিস্তানের দোসররা অনেক গুজব রটনা এবং মিথ্যাচার করেছেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘গুজব অনেক আগেই ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আসার পর গুজবটা বেশি হচ্ছে। যারা চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে তারাই গুজবের জন্ম দেয়। ফেসবুক এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামের পবিত্রতা রক্ষা করতে হলে এ সকল গুজব রটনাকারীদের কঠোর হাতে দমন করতে হবে।’

‘প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার সেই অঙ্গীকারের ধারাবাহিকতায় সামাজিক গণমাধ্যমের যে স্বাধীনতা সেটা অব্যাহত থাকবে। গুজব ও মিথ্যাচার রটনার প্রধান কারখানা হচ্ছে বিএনপি জামায়াত। বিএনপি জামায়াত সাম্প্রদায়িক জঙ্গি চক্র। বাংলাদেশে গুজব রটনার প্রধান চক্র হলো এই বিএনপি।’

হাসানুল হক ইনু আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চেক করে দেখা যায় তারা বিভিন্ন সময় দেশ নিয়ে,ধর্ম নিয়ে এমনকি কোরআনের বানি নিয়েও গুজব ও মিথ্যাচার করে। ফেসবুকের গুজবীয় কথা বার্তা বর্জন করতে হবে। প্রযুক্তিগত ছাঁকনি ব্যবহার এখন সময়ের দাবি। ছাঁকনি দিয়ে আমরা অপরাধীকে সহজে আটকাতে পারবো। যারা ফেসবুকে গুজব রটনা করে করে বেনামে পোস্ট দেয় তারা দেশের শত্রু, তারা গণমাধ্যমের শত্রু। তাই সবাই মিলে এদের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতে হবে। তাদের প্রতিহত করতে।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, শিক্ষা সচিব আবুল মালেকসহ সাংবাদিক নেতারা।

ঢাকাটাইমস/১১সেপ্টেম্বর/এসআর/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

গণমাধ্যম বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা