মানুষের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:১১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনা এবং এর জের ধরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরও সচেতন হয়নি সাধারণ মানুষ। এত বড় ঘটনার পরেও মানুষ যত্রতত্র রাস্তা পারাপার হয়। মানুষের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য বেগম নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পারাপাররের সময় সবার ট্রাফিক আইনটা মেনে চলা উচিত। এত বড় একটা ঘটনা ঘটল, এরকম আন্দোলন হলো, তারপরেও আমরা দেখি মানুষের মাঝে সেই সচেতনতা নেই। তারা যত্রতত্র রাস্তা পার হচ্ছে। যেখান সেখান দিয়ে রাস্তা পার হতে চাচ্ছে।’

ফুটওভার ব্রিজ ও আন্ডারপাস ব্যবহারের প্রতি জনগণের অনীহার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সচেতনতার যথেষ্ট অভাব আমাদের। এত বড় একটা ঘটনার পরেও আপনারা দেখবেন ঠিক বাচ্চার হাত ধরে দ্রুত পার হচ্ছে। একটা মিনিট সময় নেবে না। অথবা উপরে ওভারপাস করা আছে সেখান দিয়ে হেঁটে যাবে না বা আন্ডারপাস দিয়ে যাবে না। এই বিষয়টা সবার একটু দেখা দরকার।’

সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জননিরাপত্তায় সরকার কাজ করছে। সরকারের কাজের পাশাপাশি দেশের মানূষকেও সচেতন হয়ে উঠতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমনন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিন্তু জেব্রা ক্রসিং করা, প্রত্যেকটা স্কুলের সামনে ট্রাফিকের ব্যবস্থা করা, আন্ডারপাসের ব্যবস্থা করা, আন্ডারপাসগুলোর নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা লাগানো, লাইটের ব্যবস্থা করা সবকিছু করে যাচ্ছি। তারপরেও আমাদের দেশের মানুষের একটু সচেতন হওয়া উচিত।’

সড়কে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে আক্রান্ত ব্যক্তির তুলনায় জনগণের আগ্রহ বেশি থাকে চালকের প্রতি। এসময় চালককে মারধরের ঘটনা ঘটে। সেই দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের অবস্থাটা এরকম যে, ধাক্কা খেয়ে কেউ পড়ে গেল তাকে সাহায্য করার থেকেও এদের আগ্রহটা হয়ে যায় ড্রাইভারকে টেনে না নিয়েও তাকে কীভাবে মারধর করা যায়। মারতে মারতে এমনও ঘটনা ঘটে মেরেই ফেলে।’

‘আইন কারো হাতে তুলে নেয়া উচিত না। কেউ মারধর করতে পারবে না। ধরে পুলিশে দিয়ে দেবে। এই মারধর বন্ধ হলে দুর্ঘটনার পর অনেকে বেঁচে যাবে, এটা হলো বাস্তবতা।’

শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এবং সড়ক নিরাপত্তায় উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার বছর মেয়াদী ন্যাশনাল রোড সেইফটি অ্যাকশান প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের ১২১টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩৭৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চার হাজার ৩৬৭ কিলোমিটার ফ্লাইওভার এবং ওভারপাস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। গত ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালে সারাদেশে দুই লাখ ৭৭৯টি যানবাহন ও ৮১ হাজার ৪৬৮ জন চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে সরকার এলিভেটেড এক্সপ্রেস সড়ক র্নিমাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

মহাসড়কে বাসের সর্বোচ্চ গতি ৮০ ও ট্রাকের সবোর্চ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার এবং অতিরিক্ত ওজন সীমার যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে এলেক্স রোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে এবং মহাসড়কের পাশে বিশ্রামাগার স্থাপন করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

(ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/কারই/জেবি)