বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর, তার নিচের পড়াশোনা হবে কলেজে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৫১ | প্রকাশিত : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৫:৩৯

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেবল পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন বা মাস্টার্স এবং গবেষণা শিক্ষা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, এর নিচের সব পড়াশোনা হবে কলেজে। বিদেশে এভাবেই পড়াশোনা হয়।

অবশ্য সাধারণ শিক্ষা নাকি মেডিকেল শিক্ষার ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা থাকবে সেটি স্পষ্ট করেননি প্রধানমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হাজার শয্যার ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল’ ভিত্তিপ্রস্তর এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। কোরিয়ার আর্থিক সহযোগিতায় এই হাসপাতালটি তৈরি হচ্ছে যেটি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আমুল পাল্টে দেয়ার আশা করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় আমরা যেখানে করব, ক্যাম্পাসে শুধুমাত্র পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন এবং গবেষণা-এটাই সেখানে শিক্ষা হবে। এর নিচে না। বাকিগুলো সব কলেজ হবে। বিদেশেও সেভাবেও থাকে।’

‘কলেজগুলোর মাধ্যমে গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা... বিভিন্ন কারিকুলাম কলেজে হবে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন এবং তার ওপরে পিএইচডি বা অন্যান্য অন্যান্য আরও ওপরে আর গবেষণা। এটা হবে গবেষণাধর্মী ক্যাম্পাস, যাতে এখানে একটা সুন্দর পরিবেশ থাকে।’

‘শুধু আমরা নার্সিংয়ের ব্যাপারে আমরা গ্র্যাজুয়েশন পর্যযন্ত অনুমোদন দিয়েছি যাতে নার্সিংটা, হাসপাতালে রোগী যারা থাকে, চিকিৎসা সেবাটা যেন পায়, সে ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি। কারণ আমাদের প্রচুর নার্স দরকার।’

দেশের যেসব এলাকায় মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, সেগুলো ওই অঞ্চলে স্থাপিত মেডিকেল কলেজগুলো তদারকির দায়িত্ব পালন করবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এতে করে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার মান নিশ্চিত করা যাবে বলেও মনে করেন তিনি। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ আগের মতোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত থাকবে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নতুন যে হাসপাতাল নির্মাণ হতে যাচ্ছে সেখানে প্রথমবারের মতো ‘সেন্টারবেসড হেলথকেয়ার ডেলিভারি সিস্টেম’ চালু করা হবে। এর প্রতিটি সেন্টারে নির্দিষ্ট বহির্বিভাগ চালু থাকবে। ইমার্জেন্সি মেডিকেল কেয়ার সেন্টারটি দিন রাত ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা দেবে।

এখানে দিনে তিন থেকে চার হাজার রোগী জরুরি বিভাগে চিকিৎসা পাবে। এই হাসপাতালটি চালু হলে বছরে প্রায় তিনশ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

এই সুপার স্পেশালাইডজ হাসপাতালটি একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে আশা করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘এখানে গবেষণা উপযোগী আধুনিক যন্ত্রপাতিও এখানে সংগ্রহ করা হবে।’

গবেষণায় গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য শিক্ষার বিস্তারে চিকিৎসকদের উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘মানুষের যাতে রোগ না হয়, সে ব্যাপারেও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা সরকারের পক্ষ থেকে করে যাব।’

প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা সেবার বিস্তারে তার সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগ বর্ণনা করে মানের দিকে জোর দেয়ার কথা বলেন। বলেন, ‘কেবল সেবা দিলেই চলবে না, সেটার মানে নজর দিতে হবে। আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিত করতে চাই।’

বাংলাদেশের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হয় শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তেই। তিনি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার দুই বছর পর ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে যাত্রা শুরু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ যেন উন্নতমানে চিকিৎিসা পায় তার উপর গবেষণা এবং আমাদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তৈরি করা, নার্সদের ট্রেনিং দেয়া এবং দেশকে স্বাস্থ্য সেবা আরও উন্নতমানের ও আন্তর্জাতিমানের করার লক্ষ্য নিয়েই আমরা এই প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা শুরু।’

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে গরিব রোগীর চিকিৎসার জন্য এর আগে ১০ কোটি টাকার একটি তহবিল করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এই তহবিলে আরও ১০ কোটি টাকা যোগ করার ঘোষণাও দেন তিনি।

গ্রাম এলাকায় প্রতি ছয় হাজার জনগোষ্ঠিীর জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ, জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, আরও পাঁচটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। জানান, নওগাঁ, নেত্রকোণা, মাগুরা ও নীলফামারীতে নতুন মেডিকেল কলেজেরও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

কর কমানোর কারণে দেশে অনেক নামিদামী বেসরকারি হাসপাতাল হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘এটা করবার উদ্দেশ্যে হলো মানুষের সেবা দেয়া।’

ডিজিটাল বাংলাদেশে অনলাইনে চিকিৎসা সেবা দেয়ার সুযোগ হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষকে যেন অহেতুক ঢাকায় শহরে আসতে না হয়, তার জায়গায় বসে যেন সে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং চিকিৎসা পায়, সে সুযোগ সৃষ্টি করাবারও আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসকদের জন্য যেভাবে আবাসিক ভবন করা হচ্ছে, সেভাবে নার্সদের জন্যও ভবন করতে চান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘শুধু ডক্টরস ডরমিটরি করলে হবে না, আমার নার্সদের জন্য ডরমিটরি করতে হবে, থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী পরিকল্পনায় এটা থাকতে হবে।’

ঢাকাটাইমস/১৩সেপ্টেম্বর/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :