আ.লীগ সরকার ভীরু, কাপুরুষ: রিজভী
ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারকে ভীরু ও কাপুরুষ আখ্যা দিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘তাদের কোনো সাহস নেই। আছে শুধু ভয় ও আশঙ্কা।’
শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
চলতি বছরের শুরু থেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে এই কার্যালয়ে অবস্থান করছেন রিজভী। এর মধ্যে মার্চের শেষ দিকে কখনও সূর্য উঠার আগে, কখনও সূর্য উঠার পরপর কার্যালয় থেকে বের হয়ে নগরীর এখানে সেখানে ঝটিকা মিছিল করে পর মুহূর্তেই আবার কার্যালয়ে উঠে যান তিনি।
রিজভী বলেন, ‘যদি সাহস থাকত তবে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ সুগম করার জন্য নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতেন।’
‘কিন্তু জনবিচ্ছিন্ন হওয়াতে অপরিণামদর্শী স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকার এখন হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। যে কোন মুহূর্তে পিছলে যাবার ভয়ে তারা পুলিশের ওপর নির্ভর করে মামলা হামলা ও গ্রেপ্তারের শৃঙ্খলে জনগণকে বন্দী করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে।’
সরকার ‘জনরোষ’ আটকাতে পারবে না-এমন দাবি করে বিএনপি নেতা বলেন, জনগণ মনের ক্ষোভ চেপে রাখতে অধৈর্য হয়ে উঠেছে, তাই সর্বত্র প্রতিবাদের সোচ্চার ধ্বণী উচ্চারিত হচ্ছে। যেকোন মূহূর্তে ধেয়ে আসা জনগণের ঘুর্ণিঝড় রুদ্ররূপ ধারণ করবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে জনবিস্ফোরণ ঠেকানো যাবে না।’
‘বিচার ছাড়াই খালেদাকে সাজা দিতে চায় সরকার’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিচার ছাড়াই সরকার রায় দিতে চায় বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রায় ঘোষণার এক সপ্তাহ আগে ১ ফেব্রুয়ারি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আদালতে যান বিএনপি নেত্রী। সেদিন ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থতার কথা বলে এরপর আর আদালতে যাননি।
এই অবস্থায় ৫ সেপ্টেম্বর কারাগারেই আদালত বসে। আর সেদিন খালেদা জিয়া বলেন, তিনি অসুস্থ আর এ কারণে আর আদালতে আসবেন না।
সেই কথা মতোই ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানিতে আসেননি বিএনপি নেত্রী আর রাষ্ট্রপক্ষ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রায় ঘোষনার দিন ধার্য করার অনুরোধ করেছে।
রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ। তিনি হাত-পা নাড়াতে পারেন না, হাঁটাচলা করতে তাঁর মারাত্মক অসুবিধা হয়। চিকিৎসকরা বলেছেন-তাঁর বাম হাত ও পা প্রায় অবশ হয়ে পড়েছে। গুরুতর অসুস্থতার কারণে আদালতে যেতে পারবেন না, বেগম জিয়া সেকথাটিই বলেছেন। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ জোর করে আদালতকে ব্যবহার করে বিচারকার্য ছাড়াই রায় দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।’
‘এটি সম্পূর্ণরুপে ন্যায়বিচারের পরিপন্থী, অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। প্রতিহিংসার বিচার চরিতার্থ করতেই তাড়াহুড়ো করার তাগিদ দেয়া হচ্ছে।’
রাষ্ট্রপক্ষের এই আবেদন সরকারের নির্দেশেই হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন গুরুতর অসুস্থ, সেকথাটি আদালতকেই তিনি বলেছেন, কিন্তু আদালত তো তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে কোন নির্দেশনা দিলেন না। কারণ সেই আদালত সরকারের হুকুমের বাইরে যেতে পারবেন কি না সেটি নিয়ে জনগণ সন্দেহ পোষণ করে।’
ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/বিইউ/ডব্লিউবি