নালিশে বিএনপি আন্তর্জাতিক সাড়া পাবে না: কাদের

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:১৯ | আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:৫৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপির শালিস-নালিশ বা অনুরোধ সাড়া পাবে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমনটি জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘লবিস্ট নিয়োগ করে বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করার যে কূটকৌশল বিএনপি নিয়েছে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। আমরা কোনো চাপের কাছে মাথা নত করতে পারি না। জনগণের চাপ ছাড়া অন্য কোনো চাপের কাছে শেখ হাসিনা সরকার নত শিকার করবে না।’

‘আমরা বিশ্বাস করি আমাদের বন্ধুরা বাস্তবতা বোঝেন। বিএনপি যতই অনুরোধ করুক, যত সালিশ-নালিশের কথা বলুক, তাতে তেমন কোনো সাড়া তারা পাবে না। কারণ বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম গণতান্ত্রিক দেশ।’

বিএনপি মহাসচিবের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি এখন ঘানায়। আজকে ফিরেছেন কি না এখনও জানি না। আমি যতটা জানি তিনি ঘানায় অবস্থান করেছেন।’

কাদের বলেন, ‘এখন তো আর আলোচনার সুযোগ নাই। তবে মির্জা ফখরুল ইসলামকে বিশেষ বিবেচনায় ঘানায় ইনভাইট করে নিলে সেটা ভিন্ন কথা। যিনি ইনভাইট করেছেন, তিনি আলোচনায় বসেননি। তবে আলোচনায় বসেছেন জাতিসংঘেরই দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক, অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি।’

‘আলোচনা হতেই পারে। এ নিয়ে আমাদের কোনো বিরূপ মন্তব্য নেই। জাতিসংঘ যেকোনো দেশের যে কারো সঙ্গে আলোচনার জন্য চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানাতে পারে, অথবা দূত পাঠিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে পারে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, তারা জাতিসংঘে আলোচনা করতে গেছেন, মহাসচিব ডেকেছেন। এ আলোচনায় বিষয়বন্তু নিয়ে জাতিসংঘের কোনো মন্তব্য নেই, অবজারভেশন নেই, কোনো রিকমন্ডেশন, এটা আমরা জানি না। যদি এরকম কিছু তারা আমাদেরকে দেন আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য। জাতিসংঘের কোনো পরামর্শ থাকলে দিতে পারে, তবে আমরা সংবিধানের বাইরে গিয়ে বিকল্প কিছু করব না। সংবিধানসম্মতভাবে আমরা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।’

বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের আন্দোলনের হুমকির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখেছি আন্দোলন হলে আন্দোলন এড়াতে সবার আগে যিনি বিদেশে পালিয়ে যান তার নাম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। কাজেই দুর্বার আন্দোলন সাগরের উত্তাল গর্জন ১০ বছরে একবারও দেখিনি। এখন তো নদীতে ঢেউ কম। এখন যদি নদীতে একটু ঢেউ দেখতে পাই তাহলে বুঝবো বিএনপি তো আন্দোলনের উত্তাল গর্জন পারছে না, দুই একটা ঢেউ আসছে। সেই মানসিকতা তাদের নেই, সেই সাহস নেই, সেই শক্তিও নেই, সেই সাবজেকটিভ প্রিপারেশনও নেই। কোনো কিছুই নেই।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ কি অখুশি, সরকারের ওপর কি মানুষের কোনো আস্থা নেই- এটা হচ্ছে অবজেকটিভ কন্ডিশন। মানুষ ভাতে-পানিতে কষ্ট পাচ্ছে, এই পরিবেশ তো বাংলাদেশে নেই। কী বলে পাবলিককে তাহলে রাস্তায় নামাবেন?’

‘তাদের সাবজেক্টিভ প্রিপারেশন, সংগঠনগত যে প্রস্তুতি সে প্রস্তুতিটা কি আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানবেন। যারা তাদের পার্টি অফিসে বসে একে অন্যকে সন্দেহ করে, এক অন্যকে সরকারের দালাল বলে, এদের নিজেদের মধ্যে তো কোনো ঐক্য নেই। এরা নাকি আবার জাতীয় ঐক্য গড়বে? তাদের দলেই তো কোনো ঐক্য নেই।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এত বড় ট্রেনযাত্রা করলাম নীলফামারী পর্যন্ত; শেষ মিটিংটা করলাম নীলফামারীতে রাত সাড়ে দশটায়, একটা টু শব্দ হয়েছে কোথাও? আর লোক তো এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে বেশ কয়েকটি মিটিংয়ে। ৩০ হাজারের কম লোক কোনো মিটিংয়ে হয়নি। সেখানে আমরা রুলিং পার্টি অনেক সুশৃঙ্খল।’

‘দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে সেটায় আমরা অ্যাকশনে যাই। এখানে কোনো ইনফ্লিউনিটি কালচার আমরা গড়ে তুলিনি। কোনো নেতাকে শাস্তি দেয়ার বিধান বিএনপিতে নেই। অথচ আমাদের এমপি জেলে, আমাদের মেয়র জেলে, আমাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জেলে। কাজেই এখানে অন্যায় করে, পাপ করে কেউ রেহাই পাবে তা হবে না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ওয়ার্কিং কমিটির অরগানাইজিং সেক্রেটারি শোকজ হয়েছে এবং জেলা পর্যায়ের সব বাঘা বাঘা নেতা শোকজ হয়েছে। যাদেরকে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে, কেন তারা নেতাকর্মী থেকে দূরে সে জন্য তাদেরকেও সতর্কতামূলক চিঠি দেয়া হয়েছে। আমাদের পার্টিতে শৃঙ্খলার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা আছে।’

ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আফজাল হোসেন, অসীম কুমার উকিল, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/ডব্লিউবি/জেবি)