‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাণিজ্য বাড়াবে পায়রা বন্দর’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২২:০৩

দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন হবে দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা বন্দর ঘিরে। আমদানি রফতানি বাণিজ্যে গভীর এই সমুদ্র বন্দর সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ ও শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা।

তারা মনে করেন, পটুয়াখালী জেলায় একদিকে গভীর সমুদ্র বন্দর ও অন্যদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। পাশাপাশি ভোলা থেকে গ্যাস সরবরাহ হলে ওই অঞ্চলে দেশ-বিদেশি শিল্পোদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বহুগুণ বাড়বে। এই বন্দর ঘিরে শিল্পায়ন হবে যা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘পায়রা বন্দর ও সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এ সব কথা বলেন বক্তারা।

পটুয়াখালী জার্নালিস্টস ফোরাম-পিজেএফ, ঢাকা আয়োজিত সেমিনারে অতিথি আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও আব্দুল মাতলুব আহমাদ এবং আজমত গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ড. মো. আতাহার উদ্দিন। এতে মূল বক্তব্য দেন পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, দেশের উন্নয়নে এখন হবে পায়রা বন্দর কেন্দ্রিক। এই বন্দর ঘিরে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়ন বাড়াতে এখন পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের উন্নয়নে পদ্মা সেতু হচ্ছে। এ সেতু হয়ে গেলে পায়রা বন্দর হবে আমদানি রফতানি বাণিজ্যের বড় কেন্দ্র। পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আগামী দিনে বড় ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, প্রতিবেশি দেশ ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে রপ্তানি বাড়াতে সুযোগ তৈরি করবে পায়রা বন্দর। চট্টগ্রাম ও মংলার চেয়েও এগিয়ে থাকবে এ বন্দর। আন্তর্জাতিক এ বন্দর ঘিরে বিদেশি বিনিয়োগ বহুগুণ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি। এ ছাড়া বন্দর কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন হবে। পাশাপাশি কুয়াকাটা পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন হলে বিদেশি পর্যটকদের ভিড় বাড়বে। তিনি দক্ষিণ অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়াতে ওই অঞ্চলের জন্য নগদ সহায়তা ঘোষণা দেওয়ার আহবান জানান।

কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত সাত দিন ধরে চট্টগাম বন্দরে দুটি জাহাজের পণ্য খালাস করতে পারছেন না। পদ্মা সেতুর চালু হলে এবং পটুয়াখালীর পয়রা বন্দর উন্নয়ন হলে এই সমস্যা থাকবে না। তখন দ্রুত পণ্য খালাস করে শিল্পের কাঁচামালের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। পাশাপাশি রপ্তানি পণ্য দ্রুত পাঠানো যাবে। এতে বাণিজ্য বহুগুণ বাড়বে। বন্দর ছাড়া বাণিজ্য হয় না। চট্টগ্রাম বন্দরের গভীরতা সাড়ে নয় মিটার। আর পায়রা বন্দরের গভীরতা ২০ থেকে ২১ মিটার। এই বন্দর উন্নয়ন হলে পটুয়াখালী অঞ্চলে শিল্পের বিনিয়োগ বহুগুণ বাড়বে।

আব্দুল মাতলুব আহমাদ বলেন, এক সময় দেশের উন্নয়ন হয়েছে চট্টগাম বন্দর দিয়ে। এর পরে মংলা বন্দর হলেও তেমন ভালো করতে পারেনি। এখন পটুয়াখালী বন্দর হচ্ছে। পদ্মা সতু হলে এই বন্দর হবে বাণিজ্যের বড় হাব। পায়রা বন্দর দিয়ে সহজে বাণিজ্য করার সুযোগ তৈরি হবে। দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন হবে এই বন্দর ঘিরে। বন্দর কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবস্থাও রয়েছে। এ কারণে পটুয়াখালী অঞ্চলে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের নজর রয়েছে। তিনি বলেন, বিনিয়োগের এখন সবচেয়ে ভাল গন্তব্য হবে পটুয়াখালী। বিদেশি উদ্যোক্তাদের ওই অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য এখন নিয়ে যাবেন তারা।

পটুয়াখালী চেম্বারের সভাপতি মহিউদ্দিন বলেন, পটুয়াখালীতে শিল্প করার অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। বিভিন্ন শিল্পের উদ্যোক্তারা সেখানে জমি কিনছেন। নতুন নতুন অনেক শিল্পে বিনিয়োগের জন্য ব্যবসায়ীরা ঘুরে দেখছেন। তিনি পটুয়াখালীতে শিল্প করতে বিনিয়োগ করলে চেম্বার থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

পিজেএফ সভাপতি হাসান আরেফিনের সভাপতিত্বে ও পটুয়াখালী উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক রুহুল আমিন রাসেলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, ডিআইজে সভাপতি আবু জাফর সুর্য ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, পটুয়াখালী চেম্বারের সহসভাপতি খন্দকার ফরহাদ জামান বাদল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ অংশ নেন।

(ঢাকটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/জেআর/ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :