সৌদি আরব-কাতার থেকেও এসেছেন খেলা দেখতে
দীর্ঘ ২৩ বছর পর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দল। ১৯৯৫ সালে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে শারজাতে এশিয়া কাপ খেলেছিল বাংলাদেশ। তখন ছোট দল, সঙ্গত কারণে বাংলাদেশ নিয়ে তেমন আগ্রহ ছিল না কারো। আকরাম, বুলবুল আতহারদের সমর্থনে সেবার মাঠে ছুটে আসেননি বাংলাদেশি সমর্থকরা। কিন্তু এবার গ্যালারি লাল সবুজ জাসির দখলে।
দিন বদলেছে। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশ এখন বড় দল। বাংলাদেশ দল নিয়ে উচ্ছ্বাস, আগ্রহ এখন চারদিকে। মাশরাফি-সাকিবদের আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা। তারা এখন হার্টথ্রুব তারকা। তাদের দেখতে অনেক কষ্ট সহ্য করা যায়, প্রচুর টাকা খরচ করা যায়।
আমিরাতের তিন সিটি দুবাই, আবুধাবি ও শারজাতে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি বাস করেন। এশিয়া কাপ নিয়ে যাদের আগ্রহের শেষ নেই। তাদের অনেকেই টিকিট না পেয়ে হতাশ।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা প্রায় ২৫ হাজার। আমিরাতে প্রচুর শ্রীলঙ্কান থাকলেও দর্শক গ্যালারির ৯০ ভাগই বাংলাদেশিদের দখলে। ৩৫ দিরহারের টিকিট ১০০ দিরহামেও বিক্রি হয়েছে। ম্যাচের টিকিট শেষ হয়ে যায় দুই দিন আগেই।
দুবাই থেকে আবুধাবির দূরত্ব প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার। সেখান থেকেও অসংখ্য বাংলাদেশি এসেছেন মুশফিকদের সমর্খন করতে। এসেছেন শারজাহ থেকে। এমনকি আমিরাতের দুই প্রতিবেশি দেশ সৌদি আরব ও কাতার থেকেও নাকি কয়েকশ বাংলাদেশি খেলা দেখার উদ্দেশ্যে দুবাইয়ে চলে এসেছেন।
দুবাই সিটি গরমের শেষ দিনগুলো পার করছে এখন। এই গ্রীষ্মে এখানকার তাপমাত্র ৫৪ ডিগ্রী পর্যন্ত ওঠেছিল। আজকের সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিল ৩৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কিন্তু এই ৩৪ ডিগ্রী আগন্তকদের জন্য সহ্যের অনেকটা বাইরে।
দুপুরে কার পার্কি থেকে নেমে যখন স্টেডিয়ামের দিকে হেটে আসছিলাম, মনে হচ্ছিলো আমার চারপাশে আগুন, আমি তার মাঝখানে দিয়ে হাটছি। এই উত্তপ্ত অবস্থার মধ্যেও হাজার হাজার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে নেচে গেয়ে মাঠের বাইরে উচ্ছ্বাস করছিলেন।
দুবাইতে স্বল্প আয়ের লোকদের সংখ্যাই বেশি। দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে যাদের বেশিরভাগই মাসে ১৫/২৫ হাজার টাকার বেশি সেভ করতে পারেন না। এদের কাছে ১০০ দিরহাম অনেক টাকা।
১০০ দিরহাম তো টিকিট। দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়াম শহর থেকে বেশ খানিকটা দূরে। এখানে বাস বা ট্রেনের ব্যবস্থা নেই। আসতে হয় ট্যাক্সি বা গাড়িতে। এখানে ট্যাক্সি ভাড়া ইউরোপের চেয়েও বেশি। মাঝখানে খাওয়া দাওয়া। সব মিলে ম্যাচ দেখতে অন্তত ২০০ দিরহাম গুণতে হয়েছে এক একজন দর্শককে।
কিন্তু এতকিছুর পরও দারুণ খুশি তারা। হতে পারেন স্বল্প আয়ি, কিন্তু দেশের সমর্থনের পেছনে টাকা কোনো ব্যাপারই না তাদের কাছে। অনেক দিন পর তারা বাংলাদেশটাকে কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছে।
মাশরাফি-তামিমরা তো বাংলাদেশেরই প্রতিচ্ছবি।
(ঢাকাটাইমস/১৫ সেপ্টেম্বর/ডিএইচ)