প্রার্থী ঘোষণা করে ‘ইজ্জত’ বাঁচানোর আহ্বান এরশাদের

আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দলের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই আসনের বর্তমান সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহকে আগামী নির্বাচনেও প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি। এরশাদ জানান, এটাই তার প্রথম প্রার্থিতা ঘোষণা। এজন্য ‘ইজ্জত’ বাঁচাতে তিনি সুনামগঞ্জবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

রবিবার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী হাই স্কুল মাঠে জেলা জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন এরশাদ।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘সুনামগঞ্জকে আমি জেলা ঘোষণা করেছিলাম। সুনামগঞ্জের এমপি এখন পীর মিসবাহ। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রথম প্রার্থী হিসেবে আবারও তাকে প্রার্থী ঘোষণা করলাম। আমার আসনে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করিনি। এই প্রথম সুনামগঞ্জের মিছবাহ’র নাম ঘোষণা করলাম। আপনারা আমার ইজ্জত রাখবেন।’

সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত বলেন, ‘এই সরকারের আমলে দেশে গুম খুন সন্ত্রাস ও মাদক বাড়ছে। দেশে আজ জীবনের নিরাপত্তা নেই। প্রতিদিন খুন হচ্ছে তার হিসাব নেই। সমাজব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।’

এরশাদ বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়। মানুষ জাতীয় পার্টিকে আবারও ক্ষমতায় দেখতে চায়। কারণ জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে এক লাখ লোক মারা যাবে। এর জবাবে এরশাদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে একটি লোকও মারা যাবে না। এই সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ঢালাওভাবে মামলা দিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি চালু করেছে। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে সম্প্রীতির রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হবে।’

সাবেক এই স্বৈরশাসক বলেন, ‘ক্ষমতার পালাবদল হয়, মানুষ কিছু পায় না। আমরা পালাবদল নয়, পরিবর্তন চাই।’

জাতীয় পার্টি প্রধান এরশাদ তার বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমার দল ক্ষমতার এলে একটি মানুষও মরবে না। উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে যাবে।’

জেলা জাতীয় পার্টি আয়োজিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে তিনি জাতীয় সংগীত, দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

জেলা জাতীয় পার্টির নেতা গোলাম হোসেন অভির পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার এমপি।

হাওলাদার বলেন, ‘জাতীয় পার্টি মহকুমা থেকে সুনামগঞ্জকে জেলায় রূপান্তর করেছে। এখনকার সার্কিট হাউস আমরাই করেছি। এমপি পীর মিসবাহ একা পথ চলতে চলতে জেলার মানুষের সাথে মিশে গেছে। মিসবাহকে আগামীতে লাঙ্গল প্রতীকে আবারো নির্বাচিত করুন। তার গাড়িতে পতাকা উড়বে। এই জেলাকে অত্যাধুনিক জেলায় পরিণত করা হবে। লন্ডন থেকে মানুষ সুনামগঞ্জের বসবাস করতে আসবে।’

সুনামগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, ‘হাওরবেষ্টিত এই জেলার ধূলোবালিতে বেড়ে উঠেছি। সংসদ সদস্য হয়ে পায়ে পায়ে হেঁটেছি। আমি সাহেব হতে আসিনি। কর্মী হয়ে মানুষের সেবা করেছি।’

মিসবাহ বলেন, ‘একজন নাবালক বলেছেন সুনামগঞ্জে লাঙ্গল নেই। লাঙ্গল হটাবেন। লাঙ্গল ভালোবাসার প্রতীক। কোনো নেতার শক্তি নেই লাঙ্গল হটানোর। সততা, ভালোবাসায় লাঙ্গল টিকে থাকবে। আগামী নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ দিলে বিজয় উপহার দেব।’

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, সিলেট-২ আসনের সাংসদ ও জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহিয়া চৌধুরী।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ছাতক-দোয়ারা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ মাস্টার, মোহাম্মদ আলী খুশনুর, আ.ন.ম ওহীদ কনা মিয়া প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৬সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)