বীরত্বের ম্যাচে অসংখ্য রং

দেলোয়ার হোসেন, দুবাই থেকে
| আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:৩৮ | প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৮:১০

৪ বলে ২। আরেকজন ১৫০ বলে ১৪৪। ১৪৪ রান করে যিনি ম্যাচ জেতালেন সেই মুশফিককে যেন বীরত্বে পেছন ফেলে দিয়েছেন তামিম, মাত্র ২ রান করে! একটা মাত্র বল ঠেকিয়ে!

এই এক বল ঠেকিয়ে যে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তামিম। গড়েছেন বিশ্বরেকর্ড।কি সেই বিশ্বরেকর্ড?

শেষ উইকেটে ওপেনারের উপস্থিতিতে আসে ৩২ রান। এখানেই ড্যামিয়েন মার্টিন ও গ্লেন ম্যাকগ্রাকে পেছন ফেলে দিয়েছেন তামিম- মুশফিক। ২০০০ সালে অস্ট্রেলিয়ার ড্যামিয়েন মার্টিন ও গ্লেন ম্যাকগ্রা পড়েছিলেন এক রেকর্ড। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেনার হিসেবে ব্যাট করতে নেমেছিলেন মার্টিন। শেষ উইকেটে ম্যাকগ্রাকে নিয়ে ৩১ রান তুলেছিলেন মার্টিন। এতদিন শেষ উইকেটে ওপেনারের উপস্থিতিতে এটাই ছিল সর্বোচ্চ রানের জুটি।

ওই ম্যাচে ওপেনার হিসেবে মার্টিন সেঞ্চুরির করলেও তামিম অন্যরকম পরিস্থিতির কারণে ২ রানে অপরাজিত থাকেন। মুশফিক করেন ১৫০ বলে ১৪৪ রান। তামিমের সঙ্গে মুশফিকের জুটিতে ১৬ বলে আসে ৩২ রান। যার সবই এসেছিল মুশফিকের ব্যাট থেকে। তবে তামিমের ঠেকানো ডট বলটি ম্যাচের রং পাল্টে দিয়েছিল।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এশিয়া কাপের অসাধারণ এ ম্যাচটা নিয়ে নিশ্চয়ই প্রচুর আলোচনা হয়েছে বাংলাদেশে। গতকাল আমিরাতের প্রবাসীদের মধ্যেও আলোচনার এক নম্বর বিষয় ছিল টাইগারদের দুর্দান্ত জয়, মুশফিকের বীরত্বপূর্ণ সেঞ্চুরি, আর তামিম ইকবালের দেশপ্রেমের অসাধারণ উদাহরণ।

দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়াম শহরের অনেকটা বাইরে অবস্থিত। বাস বা ট্রেনে আসার সযোগ নেই এখানে। স্টেডিয়ামে আসতে গাড়ি ও ট্যাক্সি ছাড়া উপায় নেই। দুবাইয়ে ট্যাক্সি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। ম্যাচ দেখতে কমকরে ৪/৫ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে এক একজনকে। তবে টাকার দিতে তারা তাকাননি। স্বতস্ফূর্তভাবে তারা ছুটে আসেন প্রিয় দলকে সমর্থন দিতে। ২৫ হাজার সিটের গ্যালারির প্রায় পুরোই ছিল বাংলাদেশিদের দখলে।

গত পরশু ম্যাচ শেষ হয় অনেক রাতে। ওই দিন তেমন একটা উচ্ছ্বাস করার সুযোগ হয়নি। যেটুকু হয়েছে তা গ্যালারিতেই। প্রবাসীরা আসল উদযাপনটা করেছে গতকাল। যেন ঈদের আনন্দ। আমিরাতের বিভিন্ন শহরে প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি থাকেন। গতকাল ফুরফুরে মন নিয়ে কাজে গেছেন এবং আনন্দ নিয়ে বাসায় ফিরেছেন তারা। অনেকেই অন্যরকম সন্ধ্যা কাটিয়েছেন গতকাল। বন্ধুরা পরিচিতরা এক জায়গায় জড় হয়েছেন। আনন্দ করেছেন। তামিম মুশফিক তাদের দারুণ আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন।

৪২.৩ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৯। তামিম ব্যাট করতে পারবেন না, এটা অন্য সবার মতো নিশ্চিত ছিলেন মুশফিকুর রহিমও। মুস্তাফিজুর রহমান আউট হওয়ার পর মুশফিকও ড্রেসিংরুমে দিকে পা বাড়াচ্ছিলেন। কিন্তু তামিমকে ব্যাট হাতে মাঠে আসতে দেখে অন্য সবার মতো যারপরনাই বিস্মিত হন মুশফিকও।

আঘাত গুরুতর, অন্তত ৬ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তামিমকে। এমন নিউজ অনলাউন ও টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচার হয়ে গেছে। তামিমকে ব্যাট হাতে মাঠে নামতে দেখে বিস্মিত ও হতভম্ব মিডিয়া কর্মীরা। তাহলে কী নিউজের হেডিং বলদলাতে হবে?

বারবার টিভি ক্যামেরা তামিমের আহত হাতে ফোকাস করার পর বোঝা গেল, হ্যাঁ ইনজুরি মারাত্মকই। সত্বেও আহত তামিম এসেছেন অত্যন্ত ঝুকি নিয়ে। সময়ের প্রয়োজনে, দলের প্রয়োজনে। দেশের জন্য।

তামিমের এমন সিদ্ধাতে বিস্মিত মুশফিক। জানান, তিনি আসলে আশা করেননি যে, তামিম ব্যাট করতে নামবেন। মুশফিক বলেন,‘তামিমকে ব্যাটিংয়ে আসতে দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম। অবশ্য এটা আমাকে অনুপ্রাণিতও করেছে। আমি চিন্তা করেছি, তামিমের জন্য আমাকে কিছু করতে হবে। আমি নিজের সেরাটা দেওয়া চেষ্টা করেছি, সেটা কাজে লেগেছে।’

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/ডিএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :