গাজীপুরে মাদরাসায় জোড়া খুন

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:০২ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৫১

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা এলাকায় হুফ্ফাজুল কুরআন নামের একটি  মাদরাসার পরিচালকের স্ত্রী ও একছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা দা, বটি, বিছানার চাদর, রক্তমাখা মশারী উদ্ধার করা হয়েছে।

 এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদরাসার পরিচালক ইব্রাহিম খলিল তালুকদারকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর মাদরাসায় ভিড় জমিয়েছে শত শত জনতা।

নিহতরা হলেন, হুফ্ফাজুল কুরআন মাদরাসার পরিচালক ও শিক্ষক স্ত্রী মাহমুদা আক্তার স্মৃতি ও ওই মাদরাসার সাত বছর বয়সী শিক্ষার্থী  মামুন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার বাসন থানার ওসি মুক্তার হোসেন জানান, মঙ্গলবার ভোরে ফজর নামাজের সময় মাদরাসার সকল ছাত্রদের নিয়ে পাশের মসজিদে নামাজ পড়তে যায় পরিচালক ইব্রাহিম খলিল। এসময় অজ্ঞাতরা মাদরাসায়    ঢুকে পরিচালকের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার ও নুরানী ক্লাসের এক ছাত্র মামুনকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

তিনি জানান, প্রায় দুই বছর ধরে মাদরাসাটি পরিচালনার পাশাপাশি ছাত্রদের কোরআন পড়িয়ে আসছিলেন ইব্রাহিম। ওই মাদরাসারই একটি কক্ষে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে  থাকতেন তিনি। পুলিশ সকালে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে ইব্রাহিমের ঘরের ভেতর থেকে মাহমুদার এবং দরজার সামনে থেকে মামুনের লাশ উদ্ধার করে। মাহমুদার গলায়, গালে ও কানে এবং মামুনের ঘাড়ে, মাথায় ও পিঠে ধারোলো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে মাদরাসা পরিচালক ইবরাহিম খলিল তালুকদার জানান, মাস ছয়েক আগে তার প্রথম স্ত্রীকে তার উশৃঙ্খল আচরণের জন্য তালাক দেয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি অথবা তার ভাইয়েরা এই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছেন তিনি।

মাদরাসার এক শিক্ষার্থী বলেন, তাদের মাদরাসায় ১২শিক্ষার্থী হেফজ বিভাগে  পড়াশুনা করছেন। আমরা এক সঙ্গেই ঘুমিয়েছি। ভোরে নামাজ পড়তে গেছি, নামাজ শেষে এক ছাত্রের কাছে হত্যার ঘটনা জানতে পেরে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। এসময় আমরা মাদরাসার রুমের সামনে মামুনের গলাকাটা লাশ এবং ভেতরে মাদরাসা পরিচালকের স্ত্রী লাশ দেখতে পাই।

এদিকে ঘটনার পর সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার ওয়াইএম বেলালুর রহমান, ডিসি (ক্রাইম) শফিকুর রহমান, অপরাধ তদন্ত বিভাগের সহকারি পুলিশ সুপার সুলতান মাহমুদ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের একটি দল।

সিআইডির দলটি হত্যার আলামত সংগ্রহ ও মাদরাসা পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তারা পুরো ঘটনাস্থল নিরাপত্তা বেস্টনি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের আলামত জব্দ করছেন।

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের অপরাধ তদন্ত দলের ওসি শহীদুল ইসলাম জানান, জোড়া হত্যাকাণ্ডের পর অপরাধ তদন্ত বিভাগ ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে। এসময় তারা হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা দা, রক্তমাখা বিছানার চাদর, মশারী  ও পোশাক আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদরাসার পরিচালক ইব্রাহিম খলিল তালুকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

এই জোড়া খুনের ঘটনার কারণ প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি উল্লেখ করে জিএমপি কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান বলেন, আমরা আশা করছি অচিরেই এ জোড়া  খুনের রহস্য জানা যাবে এবং অপরাধীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হব।

(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ওআর)