ব্যাংক লুটে আসামি হতে পারে সরকার: ড. কামাল

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২১:০৯

খুলনা ব্যুরো, ঢাকাটাইমস

বর্তমান সরকারের আমলে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি লুট হয়ে গেছে। সরকার এসবের কোনো তদন্ত করেনি। এজন্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে এবং এই মামলায় সরকারি লোকেরা আসামি হতে পারেন বলে মনে করেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

মঙ্গলবার খুলনার হাদিস পার্কে এক জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।

নির্বাচনকে সামনে রেখে ড. কামাল ও বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য গড়ার যে প্রক্রিয়া চলছে এর অংশ হিসেবে প্রথম জনসভা হয় খুলনা। তবে এই প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় বদরুদ্দোজা চৌধুরী ছিলেন না। আজকের জনসভায়ও তিনি বা তার দলের প্রথমসারির কোনো নেতা ছিলেন না।

জনসভার প্রধান অতিথি ড. কামাল হোসেন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘চার হাজার কোটি টাকাকে দেশের অর্থমন্ত্রী সামান্য বলেন। এই অর্থের মালিক সরকার নয়, জনগণ। দেশের সব স্তরে দুর্নীতি ও লুটপাট চলছে। সরকারি দলের নেতারা এর সঙ্গে জড়িত। তাদের বিচার হয়নি।’

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সরকার জবাবদিহিতা করতে বাধ্য থাকবে। আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করুন।’

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারপ্রধানের পদত্যাগ, মন্ত্রিসভা বাতিল, সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। নির্বাচনকালীন সরকারের কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন আর হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন রব। ইভিএমকে তিনি ‘জাদুর মেশিন’ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের আহ্বান জানান।

ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে সরকারের ভোট চুরি ঠেকাতে হবে। জনগণ এবার ভোট দিতে চায়। মানুষ তার অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেমেছে। গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মানুষ রাজপথে নামবে।’

ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি ভোট কারচুপির একটি কৌশলমাত্র। প্রায় চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে দেয়া যাবে না।’

‘কিশোরদের কোটা ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের ন্যায় ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। লাখো জনতার গণআন্দোলনের মধ্যে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে।’

আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা বলেন, ‘দেশের সবচেয়ে বড় সংকট চলছে। চার মাসের মধ্যে ভোট, এই ভোট দিতে পারবে কি না তা নিয়ে মানুষের মনের মধ্যে প্রশ্ন।’ তিনি বলেন, ‘জুলুম বন্ধ করতে হবে। মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালাতে হবে।  নিজের ভোট নিজে দিতে হবে।’

মান্না বলেন, ‘বৃহত্তর ঐক্যের মধ্যদিয়ে এই জুলুমবাজ, দখলদার, ভোটচুরি ঠেকাতে হবে। লড়াই করতে চাই, লড়াই করেই বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।’

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ও সূচনা বক্তৃতা করেন জেএসডির জেলা সভাপতি এড. আ ফ ম মহসীন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তৃতা করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফর উল্লাহ চৌধুরী ও জেএসডির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন।

বক্তৃতা করেন গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আতাউর করিম ফারুক, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় সাংগঠকি সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি শেখ আব্দুর নূর, নাগরিত ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির সহ-সভাপতি দবির উদ্দিন জোয়ার্দ্দার, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদ হোসেন, মাগুরা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এমএ আউয়াল, জেএসডির সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম, জেলা সাধারণ সম্পাদক কাওসার আলী সানা, স্থানীয় জেএসডি নেতা আব্দুল লতিফ, জিল্লুর রহমান, সুশাংশু সরকার ও অধ্যক্ষ শেখ আব্দুর খালেক প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/১৮সেপ্টেম্বর/এসডি/জেবি)