কেরানীগঞ্জে বাবা-ছেলে খুন

পুনঃবিচারেও পাঁচ আসামি ডাবল মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:২৮

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

প্রায় ২৫ বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বাবা-ছেলে হত্যা মামলার পুনঃবিচারেও পাঁচ আসামির ডাবল মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন আদালত।

বুধবার ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

পুনঃবিচারের রায়ে শাহজাহান নামে একজনকে আহত করার অভিযোগে দণ্ডিতদের আরও পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মো. নজরুল ইসলাম নজু, মিস্টার ওরফে ছোট মিস্টার, শফিকুল ইসলাম, মো. আরিফ ও মো. মাসুদ।

দণ্ডিতদের মধ্যে নজরুল, মিস্টার ও শফিকুল রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর দুইজন পলাতক রয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ভোলা নাথ ও বাদীর আইনজীবী এম আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০০৪ সালের ২১ জুলাই ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলাটির প্রথম রায় ঘোষণা করা হয়েছিল। ওই রায়েও পাঁচ আসামির ডাবল মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছিল আদালত।

ওই রায় ঘোষণার সময় আসামি শফিকুল ইসলাম ছাড়া অপর আসামিরা পলাতক ছিলেন। পরে মামলাটি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য গেলে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে বিচারের সময় পলাতক থাকা চার আসামির জন্য একজন স্ট্রেট ডিফেন্স আইনজীবী নিয়োগ করে মামলাটি পুনঃবিচারের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠায়।

২০০৮ সালের মামলাটি হাইকোর্ট থেকে নিম্ন আদালতে আসার পর পলাতক চার আসামির পক্ষে আদালত স্ট্রেট ডিফেন্স আইনজীবী নিয়োগ করে বিচার শুরু করেন। পুনঃবিচারকালীন আসামি নজরুল ও মিস্টার গ্রেপ্তার হয়।

আইনজীবীদ্বয় আরও জানান, প্রথম রায় হওয়ার আগে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছিল আদালত। পুনঃবিচারে ওইসব সাক্ষীকে রি-কল করে আদালতে আনা হলে পলাতক আসামিদের পক্ষে স্ট্রেট ডিফেন্স আইনজীবীরা জেরা করেন। পরে আত্মপক্ষ ও যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণা করেন।

১৯৯৩ সালে ১৩ জুলাই কেরানীগঞ্জে শরীফ হোসেন ও তার সাত বছরের ছেলে খোকনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া শরীফের ১২ বছর বয়সী অপর ছেলে শাহজাহানকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এই অভিযোগে শরীফের ছেলে আব্দুর রহিম কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।

অভিযোগে বলা হয়, নিহত শরীফ কেরানীগঞ্জের গুদারাঘাট এলাকায় একটি মুদিদোকান পরিচালনা করতেন। ঘটনার দিন রাতে আসামিরা সিগারেট বাকিতে চায়। যা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা শরীফকে কোপাতে থাকে। বাবাকে বাঁচানোর জন্য শিশু শাহজাহান ও খোকন এগিয়ে আসলে আসামিরা তাদেরকেও কোপায়। এতে ঘটনাস্থলেই শরীফ ও খোকন নিহত হয়। আহত হয় শাহজাহান।

মামলাটি তদন্তের পর ১৯৯৪ সালের ২৬ আগস্ট কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি মাহমুদুল কবির চৌধুরী আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তদন্তকালে আসামি মো. আরিফ ও মো. মাসুদ হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়।

ঢাকাটাইমস/১৯সেপ্টেম্বর/আরজে/এমআর