ধর্ষণের অভিযোগে কেরালার ধর্মযাজক গ্রেপ্তার

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৭:২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

গির্জার এক নানকে বার বার ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে দীর্ঘ দিন আন্দোলনের পর অবশেষে গ্রেপ্তার করা হলো ভারতের কেরালা রাজ্যের জ্যেষ্ঠ রোমান ক্যাথলিক বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কালকে।

শনিবার এনডিটিভির খবরে বলা হয়, আদালত ফ্রাঙ্কোর জামিন নামঞ্জুর করে দুই দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে থাকবেন ফ্রাঙ্কো।

পুলিশ আদালতে বলেছে, এই ধর্মযাজক ইচ্ছাকৃতভাবে ওই নানকে যৌন হয়রানির উদ্দেশ্যে গির্জায় এসেছিল। ২০১৪ সালের ৫ মে রাতে গির্জার একটি অতিথিশালায় ওই নানকে আটকে রেখে ফ্রাঙ্কো মুলাক্কাল। এর পরের দিন নানকে ধর্ষণ করে ওই বিশপ। ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একই কক্ষে ১৩ বার ধর্ষণ ও অপ্রাকৃত যৌন সম্পর্কের শিকার হন ওই নান।

টানা তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর জলন্ধরের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই বিশপকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়, শনিবার সকালে কোট্টাইয়াম শহরে পালার একটি আদালতে হাজির করা হয় ফ্রাঙ্কোকে। মামলার শুনানি চলাকালে পুরোটা সময় তার মুখে হাসি ছিল। আদালতের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জনতার আক্রোশের মুখে পড়েন ওই বিশপ। পুলিশ ভ্যানে ওঠার সময়ও তার মুখে হাসি ছিল।

বিশপের আইনজীবী আদালতে জোর দিয়ে বলেছেন, বিশপের অনুমতি ছাড়া জোর করে তার রক্ত ও লালা নমুনা সংগ্রহ করতে পুলিশকে অনুমতি দেয়া উচিত না। এই নমুনা অপব্যবহারের সুযোগ আছে বলেও আইনজীবী আদালতে বলেছেন।

শুক্রবার রাতে ফ্রাঙ্কো তার বুক ব্যথা বলে দাবি করলে কোট্টাইয়ামের একটি সরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়।

৪০ বছর বয়সী কেরালার ওই নানের অভিযোগ, কোট্টাইয়াম জেলার একটি গির্জায় পরিদর্শন কালে ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তাকে ১৩ বার ধর্ষণ করেন বিশপ ফ্রাঙ্কো মুলাক্কাল।

ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ফ্রাঙ্কোকে আটকের দাবিতে ভারতজুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছিল। রবিবার ভ্যাটিকানের কাছে লেখা আবেদনে বিশপ নিজেই তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দিতে অনুরোধ জানান। বৃহস্পতিবার তাতে সম্মতি দেয় রোমান ক্যাথলিকদের সর্বোচ্চ পরিষদ। এর একদিন পরই ৫৪ বছর বয়সী ফ্রাঙ্কো গ্রেপ্তার হন।

এমন এক সময়ে ফ্রাঙ্কো গ্রেপ্তার হলেন, যখন কেরালার খ্রিস্টান সম্প্রদায় একের পর এক মামলার খবরে বিপর্যস্ত। যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গত মাসেও রাজ্যটির পাঁচজন ধর্মযাজককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

ফ্রাঙ্কো ১৯৯০ সালে উত্তর ভারতের পাঞ্জাবে ধর্মযাজক হিসেবে নিয়োগ পান। পাঁচ বছর আগে তাকে জলন্ধরের বিশপ মনোনীত করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/এসআই)