নির্বাচকদের খামখেয়ালিতে সৌম্য-ইমরুলের ‘কঠিন জার্নি’

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:৫২ | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:১০

দেলোয়ার হোসেন, দুবাই থেকে

বাংলাদেশ- শ্রীলঙ্কা ম্যাচের দিন স্টেডিয়ামে এসেছিলেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তামিমের ইনজুরির পর তিনি চিন্তায় পড়ে গেলেন। তাহলে ওপেন করবে কে? লিটনের সঙ্গে শান্ত? বড় আসরে কেন শান্তর অভিষেক হবে, সেটা ভেবে পাচ্ছিলেন তিনি। ওকে তো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক করিয়ে সাহস বাড়ানো উচিৎ ছিল। দুবাইয়ের কঠিন কন্ডিশনে, এশিয়া কাপের মতো বড় আসরে শান্ত নিজেকে কতটা মেলে ধরতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন বুলবুল।

নির্বাচক তথা বিসিবির ভুল সিদ্ধান্তে দলকে তো মূল দিতে হচ্ছেই, নতুন করে কঠিন এক পরীক্ষার মধ্যে পড়ে গেছেন দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। লিটন ও শান্তর শোচনীয় ব্যর্থতার কারণে এ ‍দুজনকে জরুরি ভিত্তিতে ডেকে পাঠানো হচ্ছে দুবাইয়ে। কাল আবুধাবিতে আফগানিস্তানের সঙ্গে ডু অর ডাই ম্যাচ। এ ম্যাচে হারলে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়। এখানেই শেষ নয়, গত চার ম্যাচে হারিয়ে আফগানরা যে ক্ষত সৃষ্টি করেছে টাইগারদের মেরুদণ্ডে, কাল জিততে না পারলে সেই ক্ষত মহা যন্ত্রণায় রূপ নিবে।

গত দুই তিন ম্যাচে দলকে বড্ড ভুগিয়েছেন দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাই যে করেই হোক ওপেনিং জুটি পরিবর্তন করতে চাইছে বিসিবি।

কিন্তু কাল কী করে মাঠে নামবেন সৌম্য-ইমরুল? খুলনায় চার দিনের ম্যাচে ব্যস্ত ছিলেন তারা। তিনটা দিন টানা খেলে অনেকটাই ক্লান্ত। এই অবস্থায় তারা সংবাদ পান, তাদের কাল (আজ) সন্ধার ফ্লাইট ধরতে হবে। রাতেই রওনা হয়েছেন খুলনা থেকে, বাসে করে। পথ ঘাটের জ্যাম পেরিয়ে ঢাকায় ফিরতে ক’টা বেজেছিল তারাই বলতে পারবেন। গত রাতে ক’ ঘন্টা ঘুমাতে পেরেছেন, সেটাও প্রশ্ন।

দিনের বেলায় একবার আবার বিসিবিতেও যেতে হয়েছে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র আনতে। এরপর বিমানবন্দর। তাদের দুবাই পৌঁছানোর কথা অনেক রাতে।বিমান বন্দর থেকে হোটেল পর্যন্ত জার্নি। আবার কাল সকালে যেতে হবে দুবাই থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে।

টানা দিন দিনের ম্যাচ খেলার ধকল, খুলনা থেকে বাসে ঢাকা আসার ক্লান্তি। গতরাতে ঠিকমত না ঘুমানোর ক্লান্তি, আজকের প্লেন জার্নি, কালকের দেড় ঘন্টার বাস জার্নি। এরপর আবার কঠিন গরম। সৌম্য- ইমরুলের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। এই অভিজ্ঞতার ফল যে ভালো কিছু হবে, তা মনে করা কঠিনই।

এমনিতে তারা ভালো ফর্মে নেই। তারউপর টানা শরীরের উপর প্রেসার। সঙ্গে যোগ হবে মানসিক প্রেসারও। সৌম্যও ইমরুলের ব্যাটে রানের বন্যা বইয়ে যাবে, এমনটা আশা করা কঠিন। খোদ মাশরাফিও মনে করেন তেমনটা।

বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন,‘যারা আসছে, তারাও কিন্তু দল থেকে ছিটকে পড়েছিল। আমি এখনও জানি না, আলোচনা হয়নি। তবে ওরাও কিন্তু পারফর্ম না করেই দল থেকে বাদ পড়েছিল। হুট করে এই কন্ডিশনে এই ধরনের টুর্নামেন্টে এসে আবার সেই চাপ নিয়ে কতটা পারবে। আমি জানি না, টেকনিক্যালি ওরা কতটা কাজ করেছে। যে সমস্যাগুলো নিয়ে দলের বাইরে গিয়েছিল, তা নিয়ে কাজ করেছে কিনা, জানি না। এগুলো সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আরও কঠিন বোলারদের খেলতে হবে। এটা নিশ্চিত যে যারা আছে, তাদের জন্য যেমন সহজ হবে না, যারা আসবে তাদের জন্যও সহজ হবে না।’

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/ডিএইচ)