ন্যূনতম ঐক্যের ভিত্তিতে হলেও কর্মসূচি চান ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:২৯ | প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ২০:২৮

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারবিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারকে সরাতে হলে জনগণের ঐক্যের বিকল্প নেই। সে জন্য আসুন আমরা ন্যূনতম ঐক্যের ভিত্তিতে হলেও ন্যূনতম কর্মসূচির পথে এগিয়ে যাই।’

ড. কামাল হোসেনের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আয়োজনে বিরোধী দলগুলো নাগরিক সমাবেশকে ঐক্যের পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব।

শনিবার বিকালে গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চ মিলনায়তনে নাগরিক সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের এই সভার মধ্য দিয়ে ইতোমধ্যে আমরা একধাপ এগিয়ে গিয়েছি ঐক্যের পথে, আমরা আশা করবো দ্রুত সেই ঐক্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। দেশে যে দুঃশাসন চলছে, তা মানুষের আশা খান খান করে দিয়েছে। একদলীয় শাসনে নির্যাতিত হচ্ছে জনগণ। আর গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে আজকে খালেদা জিয়া কারাগারে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগে বলে গেছেন- দেশকে বাঁচাতে হলে, স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। এই সরকারকে সরাতে হলে ঐক্যই হলো একমাত্র বিকল্প।’

‘আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বাধ্য করবো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে এবং রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে। এদেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মানুষকে তাদের হারিয়ে যাওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা একতাবদ্ধ হয়ে এই মঞ্চে উপস্থিত হয়েছি। শুধু একটি কারণে সবাই এখানে উপস্থিত হয়েছেন, সেটা হলো সবাই একটা পরিবর্তন দেখতে চান, এই সরকারের পতন দেখতে চান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চান।’

সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের বিজ্ঞ আলোচকরা আজকে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, দেশে এখন দুঃশাসন চলছে। এই দুঃশাসন আমাদের স্বাধীনতার সব স্বপ্নকে ভেঙে খান খান করে দিয়েছে, আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষাগুলো ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছে। আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ব, তারা একদলীয় শাসনব্যবস্থার জন্য নীলনকশা করছে।’

ফখরুল বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর প্রাণ গিয়েছে। আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত ৭৯ হাজার মামলা দেয়া হয়েছে তিন লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। উদ্দেশ্য একটাই এই আন্দোলন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা এবং আগামী নির্বাচনে জনগণ যাতে অংশ নিতে না পারে সেজন্য এই মামালা তারা নতুন করে শুরু করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারকে যদি আমরা সরিয়ে দিতে না পারি, জনগণের সরকার যদি প্রতিষ্ঠিত করতে না পারি, তাহলে এই দেশের স্বাধীনতা থাকবে না। মানুষ তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে।’

‘সেজন্যই আজকে যে দাবি-দাওয়া এসেছে প্রায় সমস্ত দলগুলোর দাবি একই এসেছে। আমরা দেখেছি যে প্রধান শর্ত হচ্ছে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে, এই পার্লামেন্ট রাখা চলবে না এবং নির্বাচনকালে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন, যে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে তাকে আবার পুনর্গঠন করে যোগ্য কমিশন গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে আমরা বলেছি সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। আমরা আরও বলেছি ইভিএম পদ্ধতিতে এই দেশের মানুষ পরিচিত নয়, তাই ইভিএম পদ্ধতি কোনোমতেই এই নির্বাচনে প্রয়োগ করা যাবে না।’

ড. কামাল হোসেন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘তিনি দেশের মানুষকে নতুন পথ দেখাচ্ছেন। তিনি তার ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আজকে জাতির এই চরম দুর্দিনে, যখন জাতি একটি মুক্তির পথ খুঁজছে, তখন একটি পথ দেখিয়ে জনগণকে সামনে নিয়ে এলেন। এজন্য ড. কামাল হোসেনকে ধন্যবাদ।’

নাগরিক সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে এই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সূচনা হলো স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে। আসুন, দলমত নির্বিশেষে যে যেখানে আছি ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে এগিয়ে গিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আজকের দিনটি বাংলাদেশের জন্য নতুন মাইলফলক। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে নতুন যাত্রা। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমরা আছি এবং থাকবো।’

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আব্দুল মঈন খান বলেন, ‘আসুন বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে সবাই মিলে স্বৈরাচারী সরকারকে অপসারণ করি।’

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আসম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাম জোটের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২২সেপ্টেম্বর/জিএম/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে: বিএনপির আরও ৫ নেতা বহিষ্কার

সরকারকে পরাজয় বরণ করতেই হবে: মির্জা ফখরুল

এমপি-মন্ত্রীর স্বজন কারা, সংজ্ঞা নিয়ে ধোঁয়াশায় আ.লীগ

মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের

স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির আরও এক নেতা বহিষ্কার 

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল

মন্দিরে আগুন ও দুই শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় বিএনপির উদ্বেগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :