বেরোবিতে ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় প্রতিবেদন জমা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তথ্যানুসন্ধান কমিটি। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীরের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আজিজুর রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গেল ২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার ও ভর্তির জন্য ১৭ ডিসেম্বর নির্ধারিত দিন ছিল। ওই দিন মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে ছয় শিক্ষার্থীর সন্দেহজনক আচরণে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন দায়িত্বরত শিক্ষকগণ।
একপর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এই ছয় শিক্ষার্থী হলেনব ‘বি’ ইউনিটের শামস বিন শাহরিয়ার, রিফাত সরকার ও সাদ আহমেদ, ‘সি’ ইউনিটের আহসান হাবীব ও শাহরিয়ার আল সানি এবং ‘এফ’ ইউনিটের রোকসান উজ্জামান।
একই দিন ক্যাম্পাসে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকেও আটক করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম কোতোয়ালি থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওই জালিয়াতির ঘটনায় নগরীর খামার মোড় এলাকার এক নারীর জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তি দেন ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে মেধাক্রমে প্রথম হওয়া শামস বিন শাহরিয়ার।
আটক শিক্ষার্থীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী রাহেল চৌধুরীকে আটক করা হয়।
ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় অধিক তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ২৮ ডিসেম্বর একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আজিজুর রহমানকে তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক এবং সহকারী প্রক্টর মুহাম্মদ শামসুজ্জামানকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির অপর সদস্য হলেন সহকারী প্রক্টর আতিউর রহমান।
তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আজিজুর রহমান বলেন, বিগত সময়েও ভর্তি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছিল। সেগুলোর বিষয়ে মামলাও হয়েছিল, তবে মামলার অগ্রগতি হয়নি। বিষয়টি অনেক জটিল হওয়ায় অনেকগুলো বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত কার্যক্রম চালাতে হয়েছে। এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত সকলের বিষয়ে পর্যালোচনা করতে হয়েছে। এছাড়া তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিভাগীয় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে কিছুটা সময় লেগেছে। একটু সময় নিয়ে হলেও আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
আশা করি, এই প্রতিবেদন জালিয়াতি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির তথ্য অনুসন্ধানের জন্য যে কমিটি করা হয়েছিল তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে পরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/ওআর)