অসুস্থ না হলে খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তির কথা কেন, প্রশ্ন রিজভীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৪১ | প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:২৭

দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়া অসুস্থ না হয়ে থাকলে সরকারিভাবে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ কেন দিল জানতে চান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভীর দাবি, বিএনপি নেত্রী চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পূর্বের রোগগুলি ছাড়া তিনি অসুস্থ ছিলেন না। খালেদার এই পরিস্থিতির জন্য সরকারই দায়ী।

মঙ্গলবার নয়াপল্টস্থ বিএনপির কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি নেতা।

রিজভী বলছেন, ‘অন্যায়ভাবে বিএনপি নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হলো। তারপর কর্তৃপক্ষের অবহেলা, হয়রানি, পরিত্যক্ত কারাগারের অস্বাস্থ্যকর স্যাঁতসেতে বদ্ধ পরিবেশের মধ্যে তাকে দিনযাপন করতে হচ্ছে, এটি চরম নির্যাতন। এই নির্যাতন সহ্য করতে গিয়ে তার পূর্বের অসুস্থতা গুরুতর রূপ ধারণ করেছে। সরকার তাকে সুচিকিৎসা হতে বঞ্চিত করেছে।’

‘খালেদা জিয়াকে বিশেষায়িত হাসপাতালের সুবিধা ও ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দ্বারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। দল ও পরিবার থেকে বারবার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠনের দাবিকেও অগ্রাহ্য করা হয়েছে।’

গত ৯ সেপ্টেম্বর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী রাজধানীর কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ জানায়।

এরপর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পাঁচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। তারা ১৫ সেপ্টেম্বর বিকালে কারাগারে খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে আসেন। পরেরদিন খালেদার শারীরিক অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে জানায় মেডিকেল বোর্ড। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তির পরামর্শও দেয়া হয়।

বোর্ডের এমন বক্তব্যকে স্বরোধী দাবি করে রিজভী বলেন, ‘সরকারিদলের সমর্থক এবং আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় বিএসএমএমইউর চিকিৎসকদের দিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডও বিএনপি নেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরে স্ববিরোধী কথা বলেছেন।’

‘একদিকে তারা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা গুরুতর নয়, আবার বলেছেন, তার আথ্রাইটিসের ব্যথা, ফ্রোজেন শোল্ডার, হাত নড়াচড়া করতে পারেন না। এরপরও তিনি অসুস্থ নন। অসুস্থ না হলে মেডিকেল বোর্ড কেন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলেন?’

গত ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার পর এপ্রিলে খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে আনা হয়েছিল পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য। পরে আরও একবার এখানে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বেঁকে বসেন বিএনপি নেত্রী। জানান ইউনাইটেড ছাড়া অন্য কোথাও যাবেন না তিনি।

সরকার সে সময় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়ার প্রস্তাব দেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু সেখানেও যাননি তিনি।

‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রধানমন্ত্রী’

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের সমালোচনাও করেন বিএনপি নেতা। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কাণ্ডজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন। তিনি তার সামনে, পেছনে, ডানে-বায়ে যারা তাকে ঘিরে আছে, তাদের দিকে তাকান না, শুধু তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের কুৎসা রটাতেই ব্যস্ত থাকছেন।’

‘ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে কিম্ভূতকিমাকার একনায়কতন্ত্র কায়েম করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী বেহুঁশ হয়ে পড়েছেন। গণতন্ত্র ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সন্ত্রাসের বেড়াজাল দিয়ে ঘিরে রাখতেই স্বৈরাচারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বজোড়া নামডাক হয়েছে। তার মুখে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বিষোদগার হাস্যকর।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিজভীর একগাদা প্রশ্ন

দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একগাদা প্রশ্নও রাখেন রিজভী। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নিকট জাতি জানতে চায়- বিগত ১০ বছরে ব্যাংক, বিমা লুটের টাকা গেল কোথায়? শেয়ার বাজার লুটের টাকা গেল কোথায়? ব্যাংকে আমানতকৃত টাকা চেক দিয়ে মানুষ না পেয়ে ফেরত আসে কেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি করেছে কে? এখনও কেন রিজার্ভ চুরির তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি? আর্থিক খাত ধ্বংস করলো কে?’

‘কানাডাতে বেগম পল্লী ও মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে কারা? গত ১০ বছরে বিদেশে লাখ-লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে কারা? প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৪/৫ জন নিরীহ মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে কার নির্দেশে? কালো কাঁচ ঢাকা মাইক্রোবাসগুলো কাদের?’

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সত্য ধামাচাপা দিতে পারবেন না মন্তব্য করে বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘জনগণ এটিকে নিরেট চাপাবাজি বলেই গণ্য করে। আসল জারিজুরি ফাঁস হওয়ার ভয়েই তিনি ক্ষমতা ছাড়ছেন না। সেজন্য দম্ভবলে সকলের মুখ বন্ধ রাখতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন জাতীয় সংসদে পাস করেছেন।’

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন শুধু স্বাধীন সাংবাদিকতার পথই রুদ্ধ করেনি, জীবন-জীবিকা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে সাংবাদিক সমাজ।’

ঢাকাটাইমস/২৫ সেপ্টেম্বর/বিইউ/ডিএম

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের

স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির আরও এক নেতা বহিষ্কার 

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল

মন্দিরে আগুন ও দুই শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় বিএনপির উদ্বেগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

প্রতিমা পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে: ছাত্রশিবির সভাপতি

আল্লামা ইকবালের ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুসলিম লীগের আলোচনা সভা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :