আসামের নাগরিক তালিকার সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু
ভারতের আসামের জাতীয় নাগরিক তালিকার চূড়ান্ত খসড়া থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের বাদ পড়া নিয়ে বিতর্ক ওঠায় আদালতের নির্দেশে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সেই খসড়া তালিকার চূড়ান্ত সংশোধনের প্রক্রিয়া, যা চলবে আগামী দু’মাস পর্যন্ত।
গত ৩০শে জুলাই প্রকাশিত চূড়ান্ত খসড়ায় বাদ পড়েছিল প্রায় ৪০ লাখ মানুষ। নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য যেসব তথ্য ও নথি চাওয়া হয়েছিল সেগুলো জমা না দেয়ার কারণে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
এখন কর্তৃপক্ষ বলেছেন যাদের নাম বাদ পড়েছে তারা তথ্য ও নথি জমা দিয়ে, তালিকায় নাম তুলতে আবেদন জানাতে পারবেন।
শুরুতে আবেদন করার জন্য প্রাথমিকভাবে ১৫টি নথি নির্ধারণ করা হয়েছিল। তখন আবেদন করেছিলেন তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষ। তারমধ্যে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭শ লোকের নাম পূর্ণাঙ্গ খসড়ায় ওঠেনি।
মূলত, ২৫ মার্চ ১৯৭১ এর আগে যারা আসামে গিয়েছিলেন বলে নথি প্রমাণ পেশ করতে পারেননি, তাদের নাম জাতীয় নাগরিক পঞ্জী থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
তাহলে এখন যারা সংশোধনের আবেদন করবেন তারা কিসের মাধ্যমে সেই আবেদন জানাবেন? শিলচরের দৈনিক যুগশঙ্খ পত্রিকার সম্পাদক অরিজিত আদিত্য জানান, ‘এবার এনআরসি কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে যে স্ট্যান্ডার্ড প্রসিডিওর-এসওপি জমা দিয়েছেন, সেখানে বলা হয়েছে, আবেদনকারীর বাবা-মা বা পূর্বপুরুষরা যে ১৯৭১ সালের আগে থেকেই আসামে বসবাস করতেন এখন সেটার প্রমাণ দিতে হবে’।
তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে ১৯৭১ বা তার আগের ভোটার তালিকাকে মান্য করা হয়েছিল। কিন্তু এনআরসি কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করছেন যে, এই ভোটার তালিকায় কারচুপি করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত মাইগ্রেশন বা রিফিউজি কার্ড যেটা ছিল সেটাতেও কারচুপি করা হয়েছে বলে তাদের সংশয় রয়েছে’।
তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়েছে তাদের তথ্য সংশোধনের জন্য যে এক মাস সময় দেয়া হল তারা এই সুযোগটা কিভাবে লাগাতে পারেন?
আদিত্য জানান, ‘মূলত এই বিষয়টা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ একাত্তরের আগের যে ৫টা নথি সাময়িক বাদ দেয়া হয়েছিল অধিকাংশই সেগুলো দিয়েই আবেদন করেছিলেন। সেইসঙ্গে আবেদনকারীদের একটি বড় অংশ সেই অর্থে শিক্ষিত নন। তাই জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে অনিচ্ছাকৃত কিছু ভুল থেকে গেছে’।
সেক্ষেত্রে বিষয়গুলোকে আরও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন। নতুন করে তালিকাভূক্তির বিষয়ে বাদ পড়াদের খুব বেশি আশান্বিত হওয়ার কারণ দেখছেন না আদিত্য। সূত্র: বিবিসি
ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/একে