‘শ্রম আইন বাস্তবায়ন না হলে ক্রেতা হারাবে বাংলাদেশ’
শ্রম আইন দ্রুত বাস্তবায়ন না করলে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ ক্রেতা হারাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট। বলেছেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানা সংস্কারের পর সবচেয়ে বড় বাধা শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ বিষয়ে কাজের অগ্রগতি অনেকটা থেমে গেছে। ক্রেতারা পণ্য কেনার বিষয়ে শ্রম অধিকারের ইস্যুটি বেশি বিবেচনায় নিচ্ছে। এজন্য শ্রম অধিকারের বিষয়টি বাস্তবায়নে দেরি করলে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হবে, বিদেশি ক্রেতাদের অন্যত্র ঝুঁকে পড়ার হুমকিও বাড়বে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বার্নিকাটের বিদায় উপলক্ষে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিজিএমইএ। সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ সংগঠনটির নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি যে কথাটা জোর দিয়ে বলছি, আন্তর্জাতিক শ্রম আইনগুলো মেনে চলা। এটা শুধু সঠিক কাজই নয়, বুদ্ধিমানের কাজও বটে। যত দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে আইনগত পরিবর্তন আনুন। বিষয়টি দীর্ঘায়িত করলে কোনো লাভ হবে না। আইনকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার পাশাপাশি কার্যকর করলে বিদেশের বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা বাড়বে। এটি বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের অংশ বিস্তৃত করতেও সহায়ক হবে।’
বার্নিকাট বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের মাধ্যমে তৈরি পোশাক খাতে বিশাল পরিবর্তন আনা সক্ষম হয়েছে। এখন বিশ্বের নিরাপদ কারখানাগুলোর তালিকায় চলে এসেছে বাংলাদেশ। যেটা আমি নিজ চোখে দেখেছি।’
বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এই সংস্কারে বিশাল বিনিয়োগ হয়েছে। এই বিনিয়োগের সুফল আপনারা পাবেন, যদি আত্মতৃপ্তিতে না ভোগেন। কারণ সামনের দিনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় কারখানাগুলোর সংস্কার কাজ শেষ করা এবং সংস্কারে অর্জিত অগ্রগতি বজায় রাখা।’
মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া পর্যন্ত মার্শা বার্নিকাট সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও প্রত্যাশা করি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, মার্শা বার্নিকাট বাংলাদেশ ও দেশের পোশাক খাতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। ২০১৪ সালের শেষার্ধে তিনি এমন সময় এসেছিলে যখন রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর শিল্পটি হুমকির মুখে পড়ে। পোশাক শিল্পের সেই সংগ্রামমুখর সময়ে তিনি শিল্পের রূপান্তর প্রক্রিয়ায় আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন। তিনি পোশাক শিল্পে আমাদের পরমজন-পরম আত্মীয়৷
(ঢাকাটাইমস/২৫সেপ্টেম্বর/জেআর/জেবি)