ধনী শহর দুবাইয়ে জিনিসপত্র এত সস্তা!

দেলোয়ার হোসেন, দুবাই থেকে
| আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:২২ | প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:৫৪

এশিয়াতে বাংলাদেশের চেয়ে গরিব দেশ আছে দুটি, আফগানিস্তান ও নেপাল। আফ্রিকাতে গোটাচারেক দেশ হয়তো বাংলাদেশের চেয়ে দরিদ্র। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র এই দেশটা অন্তত একদিক দিয়ে অনেক ধনী দেশকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। এবং সেটা হলো-পণ্যদ্রব্যের দামে। খাদ্যপণ্যের দামের সূচকে ঢাকা হয়তো বিশ্বের অন্যতম ব্যয় বহুল নগরই এখন!

যেখানে দুধের লিটার ৬৫ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। সেই দুধের মান নিয়েও আবার আছে প্রশ্ন। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ১৭০০, আর আমিরাতের ৪০ হাজার ডলারের কাছাকাছি। মানে বাংলাদেশের মানুষের চেয়ে এখানকার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অন্তত ১৫ গুণ বেশি।

অথচ বিশ্বের অন্যতম ধনী নগরী দুবাইয়ে জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলক ঢাকার চেয়ে কম। দুবাইয়ে এক লিটার দুধ ৫৫ টাকাও কিনতে পারবেন। কত রকম দুধ এখানে! তবে সাধারণ এক লিটার দুধ বড়জোর ৬০ টাকা।

মাছ-মাংসের বাজারও বেশ সস্তা। সমুদ্রের কিছু কিছু মাছ তো একদমই সস্তা। বাংলাদেশের ১০০ টাকায় এক কেজি মাছ পাওয়া যায় অনেক সময়।

চিংড়ি মাছের কেজি ৫০০ টাকার মতো। হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা। ব্রাজিল থেকে আসা প্রক্রিয়াজাত মুরগির কিলো ২২০ টাকার বেশি নয়। বাংলাদেশে আস্ত মুরগির কেজি বিক্রি হয় ১৬০ টাকা। নড়িভুড়ি ও অন্যান্য আবর্জনা বাদ দিলে কেজি ২২০ টাকার কম পড়বে না বাংলাদেশে। খাসি বা ভেড়ার মাংস দুবাইয়ে ৬০০- ৬৫০ টাকা। বাংলাদেশে সম্ভবত ৭০০ টাকা। ডিমের ডজন ১০০- ১২০ টাকা।

পেঁয়াজ ৫০, রসুন ৮০, আলু ৪০/৫০ টাকার মতো। ভারত ও ওমান অন্যান্য দেশ থেকে আসা অন্যান্য সবজিও বেশ সস্তা। প্রায় বাংলাদেশের সমান। এখানকার শশা খুবই নরম ও সুস্বাদু। কেজি ৪০ টাকার মতো। এগুলো এত উন্নতমানের যে, এক দেড় কেজি খেয়ে ফেলা যায় অনায়াসে। সয়াবিন তেলের লিটার ১০০-১১০ টাকার মতো। কিসমিস জিরা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম এবং অন্যান্য মসলা তো ঢাকার চেয়ে অনেক দাম কম।

চায়না ও ইউরোপ থেকে আসা আপেল, মাল্টার কিলো ১১০- ১২০ টাকা। নাকফল ১৫০ টাকার মতো। আঙুর ও অন্যান্য ইউরোপিয়ান ফলও মোটামুটি সস্তা। পাকিস্তানি উন্নতমানের চালের কেজি ৬০ থেকে শুরু। আটার দাম প্রায় বাংলাদেশের সমান।

দুধ যেহেতু সস্তা, দুগ্ধজাত দ্রব্য যেমন আইসক্রিম, ইয়োগার্ডসহ দুধ থেকে তৈরি অন্যান্য সুস্বাদু খাবারও যথেষ্ট সস্তা। দুবাইয়ে সবচেয়ে বেশি সস্তা হচ্ছে- বিভিন্ন ধরনের চকলেট, প্রসাধনী সামগ্রী, জুস ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য। ইউরোপ, তুরস্ক ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা নানা ধরনের খাটি জুস কিনতে পারবেন বেশ অল্প দামে। অপেল, কমলা, আম, ব্ল্যাক বেরি, আঙুর, পেয়েরা, আনারসসহ নানা ধরনের জুসের লিটার ১১০- ১২০ টাকা।

হরেক রকমের চকলেট পাবেন লোভনীয় দামে। বাংলাদেশি ১২০ টাকা হলে অনেক সময় এক কেজি চকলেট কেনা যায় এখানকার মেগা শপগুলো থেকে।

প্রসাধনী সামগ্রীর কথা কী বলব? হাজারো রকম প্রসাধনী সামগ্রী মিলবে এখানে। এগুলো এতটাই সস্তা যে, অনেকে বেড়াতে এসে লাগেজ ভর্তি করে নিয়ে যান বাংলাদেশে। অনেকে আবার ঢাকাতে নিয়ে বিক্রিও করে দেন বেশ লাভে।

দরিদ্র বাংলাদেশে জিনিসপত্রের দাম এত বেশি কেন? এই প্রশ্নটা করা অবান্তর। প্রশ্নটা কাকে করবেন, কে শুনবে!

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/ডিএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :