শেখ হাসিনা থেকে শিক্ষা নাও, শিক্ষার্থীদের দোলন

প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:১৯ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৪:৪১

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শিক্ষার্থীদের জন্য উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সহসভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুর রহমান দোলন।

প্রধানমন্ত্রী থেকে শিক্ষা নেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দোলন বলেন, ‘শেখ হাসিনা একটি অজপাড়াগাঁয়ে জন্ম নিয়েও যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তবে ইচ্ছা করলে তোমরাও অনেক বড় কিছু হতে পারবা। শেখ হাসিনা যেসব সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন সেগুলো ব্যবহার করে তোমরা তার মতো যোগ্য হয়ে ওঠো। এ অঞ্চলকে তোমরা আরও ভালো করে গড়ে তোলো।’

বুধবার আলফাডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমি মিলনায়তনে এক অভিভাবক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দোলন এসব কথা বলেন। তিনি এই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে দোলন বলেন, ‘আপনাদের উপস্থিতি অনেক কম। এটাই প্রমাণ করছে যে, সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়েই আপনারা সন্তুষ্ট। তারা কেমন করছে, ভালো করছে নাকি খারাপ করছে এর খোঁজ-খবর নেয়ার দায়িত্ব কার?’

‘কারো সন্তান স্কুলে খারাপ করলে সাময়িকভাবে স্কুলের বদনাম হবে। কিন্তু আসল ক্ষতিটা হবে ওই শিক্ষার্থীর এবং তার পরিবারের।’

আগের চেয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির চিত্র তুলে ধরে দোলন বলেন, ‘বর্তমান সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষার্থীদের বহু সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ শিক্ষকদের বেতনও অনেক বাড়িয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে প্রায় বিনামূল্যেই লেখাপড়া করতে পারে শিক্ষার্থীরা।’

সরকার লেখাপড়ার সুযোগ করে দিয়েছে, সেই সুযোগ গ্রহণ করতে সবাইকে আহ্বান জানান ঢাকাটাইমস ও এই সময় সম্পাদক।

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে দোলন বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের মালিক আপনারা। শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে কি না তা নিয়মিত দেখবেন এবং আপনার সন্তানের লেখাপড়ার খোঁজখবর নেবেন। আপনারা আপনাদের ঘরের খোঁজ যেভাবে রাখেন, জমির খোঁজ যেভাবে রাখেন সেভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খোঁজ রাখবেন।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দোলন বলেন, ‘ক্লাসের প্রথম সারিতে বসার জন্য তোমরা প্রতিযোগিতা করো। শিক্ষক যা পড়ান তা মনোযোগ দিয়ে শুনবে আর ভালোভাবে পড়ালেখা করবে, তাহলেই তোমরা মানুষের মতো মানুষ হতে পারবে।’

দোলন বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দোষ, শিক্ষকের দোষ- এসব দোষ ছাড়ানোর উপায় আছে। কিন্তু অভিভাবকদের দোষ থাকলে তা ছাড়ানোর কেউ নেই।’ তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে আপনাদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করছে, বিল্ডিং করছে। এই প্রতিষ্ঠানে যেন আমাদের সন্তানেরা প্রশিক্ষণ দিতে পারে সেভাবে তাদেরকে তৈরি করতে হবে।’

কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বলেন, ‘কাঞ্চন মুন্সী সাহেব নিজে পড়ালেখা কম জানতেন, তবুও তিনি তার সম্পদ লেখাপড়ার জন্য দান করে গেছেন। আর এটা দেখার দায়িত্ব আপনাদের। আপনারা যদি এটি না দেখেন তবে আপনারা দায়ী থাকবেন। লেখাপড়া না হলে এসব বিল্ডিং বা অবকাঠামোর কোনো মূল্য নেই।’

দোলন বলেন, ‘স্কুলে ছেলেমেয়েরা খারাপ রেজাল্ট করলে বুকটা দুঃখে ভরে যায়। আপনারা তাদের সঠিকভাবে পরামর্শ দেন, দেখাশোনা করেন। তাহলে তারা ভালো রেজাল্ট করে ভবিষ্যতে পরিবারের ও সমাজের দায়িত্ব নেবে।’

তিনি শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনের খারাপ দিক পরিত্যাগ করে ভালো জিনিস গ্রহণের আহ্বান জানান। অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেকে লেখাপড়া করতে পারেননি। নিজেরা নষ্ট হয়েছেন, কিন্তু আপনাদের ছেলেমেয়েদের নষ্ট হতে দিয়েন না।’

‘পরিবারের লোক ভালো হলে সেই পরিবারের সন্তান মাদকসেবী হতে পারে না। অভিভাবক সচেতন না হলে ছেলেমেয়ে মানুষ হবে না। আপনাদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. মনিরুজ্জামান ইকু, অভিভাবক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/২৬সেপ্টেম্বর/একে/জেবি)